সঙ্কল্প দাস
আলোচনার মাধ্যমে ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত ছাত্র সঙ্কল্প দাসের সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী জানান, সওয়াল-জবাবে সময় নষ্ট হচ্ছে। এখানে সঙ্কল্পের ভবিষ্যত জড়িত। সমস্যা মিটে গেলে আদালত অযথা হস্তক্ষেপ করবে না। মামলার নিষ্পত্তিতে দেরি হবে। সে ক্ষেত্রে সঙ্কল্পের ভর্তি হতে সমস্যা হতে পারে। তাই সিবিএসই, বালিগঞ্জ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় এবং সঙ্কল্পের আইনজীবীরা বসে সুরাহার পথ বার করুক। তারা ব্যর্থ হলে আদালত নির্দেশ দেবে। কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষকে বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করতে বলেছেন বিচারপতি চক্রবর্তী।
স্কুল কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে বিচারপতির মন্তব্য, এই বিষয়টি আর পাঁচটি সমস্যার থেকে আলাদা ভাবে দেখা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে অধ্যক্ষকে সহানুভূতিশীল হতে হবে।
সঙ্কল্পের বাবা দেবাশিস দাস জানান, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে তাঁর ছেলের ডিসলেক্সিয়া ধরা পড়ে। বোর্ড তাকে পেন্টিং নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতিও দেয়। দশম শ্রেণিও পাশ করেছে সঙ্কল্প। একাদশ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ অসহযোগিতা করছেন বলে তাঁর অভিযোগ। সঙ্কল্পের আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় আদালতে জানান, বোর্ড বললেও সঙ্কল্পকে হোম সায়েন্স, পুষ্টিবিজ্ঞান, সঙ্গীত ও পেন্টিং বিষয় হিসেবে নিয়ে পড়তে দিচ্ছে না স্কুল। এ দিকে, সাধারণ সব বিষয় নিয়ে সঙ্কল্পের পক্ষে পড়া অসম্ভব।
কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের কৌঁসুলি আদালতে জানান, দীর্ঘদিন স্কুলে না আসায় সঙ্কল্পের নাম কাটা গিয়েছে। স্কুল তা বিবেচনা করবে। কিন্তু ওই বিষয়গুলি পড়ানোর মতো পরিকাঠামো স্কুলটিতে নেই। সিবিএসই-র আইনজীবী ইউ এস মেনন অবশ্য আদালতকে জানিয়েছেন, এই ধরনের রোগে আক্রান্ত পড়়ুয়াদের ক্ষেত্রে বোর্ড বিষয়গুলি পড়ানোর অনুমতি দিয়েছে। স্কুল চাইলে প়ড়াতেই পারে। এ কথা শুনে বিচারপতি বলেন, ‘‘বোর্ড যখন অনুমতি দিয়েছে, তখন স্কুল চাইলেই পরিকাঠামো তৈরি করে পড়াতে পারে। ভবিষ্যতে এমন পড়ুয়া পড়তে এলে কী করবে?’’ স্কুলের কৌঁসুলি জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন।
স্কুল জানিয়েছে, আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে সঙ্কল্পের মা-বাবাকে ডেকে কথা বলা হবে কি না, তা ঠিক করবেন আইনজীবীই। সঙ্গে এ দিনও স্কুল জানায়, সঙ্কল্পের অভিভাবকেরা তার ডিসেবিলিটি সার্টিফিকেট জমা দিলেই আর সমস্যা হবে না।
তবে বিচারকের কথায় কিছুটা স্বস্তিতে সঙ্কল্পের পরিবার। মা খুকু দাস বলেন, ‘‘দেখা যাক এ বার কী ব্যবস্থা হয়। আজ একটু নিশ্চিন্ত লাগছে।’’ আর সঙ্কল্প? মা জানান, ছেলে স্কুলে যাওয়ার জন্য এক পা বাড়িয়েই আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy