Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Underground Water

Eastern Railways: জল তোলা আইনসিদ্ধ করতে ৪০ হাজার টাকা জমা রেলের

পূর্ব রেলের সিনিয়র স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল কল্যাণ সরকার জানান, পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে ৪০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২১ ০৫:৩২
Share: Save:

বৈধ ছাড়পত্র ছাড়াই এত দিন ভূগর্ভস্থ জল তুলেছে পূর্ব রেল (হাওড়া ডিভিশ‌ন)। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে হলফনামা জমা দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে রাজ্য জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন বিভাগের অধীনস্থ ‘স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেট’ (এসডব্লিউআইডি)। এ-ও জানানো হয়েছে, ছাড়পত্র ছাড়া জল তোলার কারণে জরিমানা-সহ ৪০ হাজার টাকা রেলের দেওয়ার কথা।

যার পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত মঙ্গলবার পূর্ব রেলকে ওই পরিমাণ টাকা জমা দিতে নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশ প্রসঙ্গে পূর্ব রেলের সিনিয়র স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল কল্যাণ সরকার জানাচ্ছেন, পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে এ দিনই ৪০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জল তোলার ছাড়পত্র পাওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘রেল, রেলযাত্রা বা হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশন নিয়ে সর্বসাধারণের মনে যাতে কোনও বিরূপ ধারণা না হয়, সেই কারণে ও বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা ভেবেই জরুরি ভিত্তিতে টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। হাওড়া, শিয়ালদহ স্টেশনে আরও যে উন্নয়নের কাজ হয়েছে, সেগুলি হলফনামা হিসেবে আদালতের কাছে জমা দেওয়া হবে।’’

প্রসঙ্গত, এক সপ্তাহ আগে, অর্থাৎ, গত মঙ্গলবার পরিবেশ আদালত সংশ্লিষ্ট মামলায় নির্দেশ দিয়েছিল, ভূগর্ভস্থ জল তোলার জন্য এসডব্লিউআইডি-র কাছ থেকে রেল কোনও ছাড়পত্র নিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে। সেই সূত্রেই হলফনামা জমা দিয়ে এসডব্লিউআইডি জানায়, ভূগর্ভস্থ জল তোলার ছাড়পত্রের বিষয়ে রেলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কথাবার্তা চললেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ ২০১৮ সালের জুনে এসডব্লিউআইডি-র ডিরেক্টরের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট দফতরের ভূতত্ত্ববিদ পূর্ব রেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সে সময়ে ভূগর্ভস্থ জল তোলার ছাড়পত্র নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। এ নিয়ে একটি চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। তাতে বিশদে জানতে চাওয়া হয়েছিল হাওড়া স্টেশন (পুরনো ও নতুন) চত্বরে প্রতিদিন জলের চাহিদা কত, উৎস কী (ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভস্থ জল), কতগুলি গভীর নলকূপ আছে প্রভৃতি‌। পাশাপাশি, বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়েছিল।

এসডব্লিউআইডি-র দাবি, রেল এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য না দেওয়ায় ২০১৮ সালের জুলাই মাসে দু’বার তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। জুলাইয়ের দ্বিতীয় চিঠিতে বলা হয়েছিল, টিকিয়াপাড়া কোচিং ডিপোয় যে পাঁচটি গভীর নলকূপের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল তুলছে রেল, তার বৈধ ছাড়পত্র নেই।

ঘটনাপ্রবাহ বলছে, এই চিঠির পরে রেল ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছিল। তখন এসডব্লিউআইডি সিদ্ধান্ত নেয়, জরিমানা-সহ মোট ৪০ হাজার টাকা দিলে ভূগর্ভস্থ জল তোলার ক্ষেত্রে রেলকে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। যদিও পূর্ব রেলের তরফে দাবি, বহু বছর ধরেই ভূগর্ভস্থ জল তোলা হচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। যে হেতু মাটির নীচ থেকে জল তোলা হচ্ছে, তার জন্য নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হয়। কল্যাণবাবুর কথায়, ‘‘২০১৮ সালে পূর্ব রেলওয়ে (হাওড়া ডিভিশন) পাঁচটি কুয়োর জন্য ১৫ হাজার টাকা জমাও করেছিল। যদিও ২০১৯ সালে রেলকে ফের জানানো হয়েছিল, ওই টাকা পর্যাপ্ত নয়। তখন জরিমানা বাবদ মোট ৪০ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছিল।’’

তার পরেও এ বিষয়ে জটিলতা কাটছিল না। শেষ পর্যন্ত পরিবেশ আদালতের নির্দেশে এ দিন সেই জট কাটে।

সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের কথায়, ‘‘বৈধ ছাড়পত্র ছাড়াই ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়া হচ্ছে। অন্য কেউ নয়, খোদ রেলই সেই কাজ করেছে এত দিন ধরে! আজকে জরিমানার টাকা দেওয়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এ দেশে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি কোথায় দাঁড়িয়ে, তা বোধহয় এই ঘটনার মধ্যে দিয়েই পরিষ্কার!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Eastern Railway Underground Water
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE