Advertisement
E-Paper

পথ হারিয়েও ঘরে ফিরলেন স্মৃতিহারা বৃদ্ধা

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তুষারবাবুর তিন সন্তান। বড় ছেলে দেবজ্যোতি এবং মেয়ে অনুরাধা আমেরিকায় থাকেন। অন্য ছেলে ধ্রুবজ্যোতি টালিগঞ্জে থাকেন। তিনি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার পদে কর্মরত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮ ০২:২৬
সন্ধ্যা চৌধুরী

সন্ধ্যা চৌধুরী

দু’কামরার ফ্ল্যাটে ৮০ বছরের বৃদ্ধের একমাত্র সঙ্গী তাঁর ৭৫ বছরের স্ত্রী। অ্যালঝাইমার্সে আক্রান্ত সেই স্ত্রী-ই শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন স্বামী। শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রী সন্ধ্যা চৌধুরীর খোঁজ পেয়ে অবশেষে হাসি ফুটল কৈখালির অনুপমা আবাসনের বাসিন্দা তুষার চৌধুরীর।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী তুষারবাবুর তিন সন্তান। বড় ছেলে দেবজ্যোতি এবং মেয়ে অনুরাধা আমেরিকায় থাকেন। অন্য ছেলে ধ্রুবজ্যোতি টালিগঞ্জে থাকেন। তিনি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার পদে কর্মরত। ২০১২ সালে আমেরিকায় থাকাকালীন সন্ধ্যাদেবীর অ্যালঝাইমার্স ধরা পড়ে। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে স্ত্রী-কে নিয়ে কলকাতায় ফেরেন তিনি। শনিবার তুষারবাবু বলেন, ‘‘ওখানে ঠান্ডায় সমস্যা হচ্ছিল। ভাবলাম, ফিরে এসে দু’জনে শেষ জীবন শান্তিতে কাটাব। সন্ধ্যা যে একা চলে যাবে বুঝিনি!’’

তখনও তিনি জানেন না দমদমের সুকুর আলি মোড়ে তাঁর স্ত্রী-কে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে তখন দৌড়োদৌড়ি করছেন রাজু সরকার নামে এক ব্যক্তি। অ্যালঝাইমার্সে আক্রান্ত হওয়ায় তাঁকে স্নান করানো, খাওয়ানো, যত্ন নেওয়া, কথা বলার সঙ্গী— তুষারবাবুই। এ দিন দুপুরে বৃদ্ধ বলেন, ‘‘শুক্রবার দুপুরেই বলছিল, কত দিন আর বাঁচব। কিছুই ভাল লাগছে না।’’

বিকেলে প্রতিদিন হাঁটতে বেরোন দম্পতি। শুক্রবার তুষারবাবু তৈরি হওয়ার আগেই বেরিয়ে যান বৃদ্ধা। মাস পাঁচেক আগেও এমনই কিছু ঘটেছিল। সে বার তেঘরিয়া থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হন স্বামী। এর পরেই নিরাপত্তারক্ষীকে বলা হয়েছিল, সন্ধ্যাদেবীকে একা যেন বেরোতে না দেওয়া হয়। নিরাপত্তারক্ষীর দাবি, তিনি বৃদ্ধাকে আটকেছিলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করে বৃদ্ধা বেরিয়ে যান।

নিরাপত্তারক্ষী ফ্ল্যাটে গিয়ে বৃদ্ধকে সে কথা জানালে তিনি স্ত্রী-র খোঁজে বেরিয়ে যান। তুষারবাবু বলেন, ‘‘এক জনের কথা শুনেই মল রোডে দৌড়লাম। ওঁকে দেখতে পেলাম না।’’ শেষ পর্যন্ত বাগুইআটি থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন বৃদ্ধ।

এ দিন সকালে সুকুর আলি মোড় এলাকায় বৃদ্ধাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন স্থানীয়েরা। এক সময়ে মাথা ঘুরে নর্দমায় পড়ে গেলে রাজু তাঁকে উদ্ধার করেন। রাজু বলেন, ‘‘শুধু বলেছিলেন, বাড়ি যাব। নাম জিজ্ঞাসা করায় বলেন, সন্ধ্যা।’’ প্রথমে দমদম থানা, পরে দমদম পুর হাসপাতালে বৃদ্ধাকে নিয়ে যান রাজু। থানার মাধ্যমে খবর পেয়ে তত ক্ষণে পুর হাসপাতালে পৌঁছন বৃদ্ধার ছেলে।

Alzheimer's
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy