মহম্মদ গিয়াসউদ্দিন
বারাসতে বাবা-ছেলের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় বৃহস্পতিবার খুন এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ হল থানায়।
মাদ্রাসা শিক্ষক গিয়াসউদ্দিনের বাবা মহম্মদ ওয়াসেব আলি বৃহস্পতিবার থানায় এসে বৌমা কাশ্মীরা খাতুনের বিরুদ্ধে নাতিকে খুন এবং স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
বুধবার বারাসতের বনমালিপুরের মুসলিম পাড়ায় গিয়াসউদ্দিনের ঝুলন্ত দেহ তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়। গিয়াসউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী কাশ্মীরার একমাত্র পুত্র আমনের দেহও উদ্ধার হয় ওই বাড়ি থেকেই। যা দেখে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছিল, পারিবারিক অশান্তির কারণেই ছেলেকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন গিয়াসউদ্দিন। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এ দিন পুলিশের হাতে আসেনি। কিন্তু এ দিন গিয়াসউদ্দিনের বাবা পুত্রবধূ কাশ্মীরা ও তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ফলে নতুন করে ভাবনাচিন্ত শুরু করতে হচ্ছে তদন্তকারীদের।
পুলিশের দাবি, গিয়াসউদ্দিনের বাবা অভিযোগে জানিয়েছেন যে আমনকে খুন করেছেন কাশ্মীরা এবং তাঁর বাপের বাড়ির লোকেরা। গিয়াসউদ্দিনকে আত্মহত্যায় প্ররোচনাও দিয়েছেন কাশ্মীরাই। ওয়াসেব আলি এ দিন বারাসত থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, গিয়াসউদ্দিনকে তাঁর পরিবার থেকে আলাদা করার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চাপ দিচ্ছিল কাশ্মীরা। তিনিই গিয়াসউদ্দিনকে চাপ দিয়ে পরিবার থেকে আলাদা করে বারাসতে আলাদা বাড়ি ভাড়া নিতে বাধ্য করেন। বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলেও গিয়াসউদ্দিনের সঙ্গে ঝামেলা করতেন কাশ্মীরা। সেই চাপেই গিয়াসউদ্দিন আত্মঘাতী হন বলেই তাঁর বাবার দাবি। স্ত্রীর সঙ্গে গিয়াসউদ্দিনের গোলমালের কথা জানতে পেরেছে পুলিশ। গিয়াসউদ্দিনের বাবার অভিযোগও পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
বুধবার কাশ্মীরা পুলিশকে জানিয়েছিল, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন তাঁর স্বামী। এ দিন আর কাশ্মীরার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জেনেছে, সপ্তাহখানেক আগে কাশ্মীরা হাবড়ার একটি স্কুলে শিক্ষকতার চাকরি পান। বুধবার কাশ্মীরা স্কুলে গেলেও যাননি গিয়াসুদ্দিন। তাঁর স্কুলে পিকনিক ছিল। বাবার সঙ্গে আমনেরও সেখানে যাওয়ার কথা ছিল। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে কাশ্মীরা গিয়াসুদ্দিনের দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখেন। পাশের ঘরে পড়েছিল মৃত আমনের দেহ।
পুলিশের প্রাথমিক ভাবে ধারণা, পারিবারিক অশান্তি ছাড়া অন্য কোনও কারণে গিয়াসুদ্দিন আত্মঘাতী হলে তিনি ছেলেকে খুন করতেন না। এক পুলিশ কর্তা জানান, এই ঘটনার পিছনে সম্ভবত রাগ বা প্রতিহিংসা কাজ করেছে। হয়তো সেই কারণেই, নিজের জীবন শেষ করার পাশাপাশি ছেলেকেও খুনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy