শোভনা তালুকদার
চিকিৎসায় গাফিলতির কারণে মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের হল শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতার নাম শোভনা তালুকদার (৬২)। তাঁর ছেলে দেবর্ষি তালুকদার বৃহস্পতিবার আনন্দপুর থানায় ইএম বাইপাসের ধারের ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেন।
দেবর্ষিবাবু জানিয়েছেন, গত ১৯ নভেম্বর পেটের যন্ত্রণা নিয়ে শোভনাদেবীকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, তাঁর গলব্লাডারে পাথর রয়েছে। অস্ত্রোপচার জরুরি। ২৩ নভেম্বর এক শল্য চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার হয়। কিন্তু তার পরেও শোভনাদেবীর পেটের যন্ত্রণা কমেনি। বরং সমস্যা আরও বাড়ে। যন্ত্রণার পাশাপাশি শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বারবার এই সমস্যাগুলির কথা চিকিৎসকদের জানানোর পরেও তাঁদের তরফে কোনও তৎপরতা চোখে পড়েনি।
পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে দেবর্ষিবাবু আরও জানিয়েছেন, ১ ডিসেম্বর রাতে হাসপাতাল থেকে তাঁকে ফোন করে জানানো হয়, শোভনাদেবী হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ওই বৃদ্ধার গলব্লাডারে সংক্রমণ হয়েছে। তাই ফের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। ওই দিনই আবার অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু তার পরেও রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটেনি। শেষে বুধবার গভীর রাতে মারা যান শোভনাদেবী। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে সেপসিসের উল্লেখ করা হয়েছে।
দেবর্ষিবাবুর অভিযোগ, হাসপাতালের বিল বাড়ানোর জন্য প্রথম থেকেই অস্ত্রোপচার পরবর্তী সংক্রমণকে গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করা হয়নি। যার জেরে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। তাঁর কথায়, ‘‘১৩ লক্ষ টাকার বিল ধরিয়েছে হাসপাতাল। কিন্তু আমার মায়ের যথাযথ চিকিৎসা হয়নি। স্রেফ বিল বাড়ানোর জন্য তাঁকে হাসপাতালে ফেলে রাখা হয়েছিল। পেটের যন্ত্রণা ও শ্বাসকষ্টের কথা বারবার বললেও চিকিৎসকেরা বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দেননি। মা ভেন্টিলেশনে না যাওয়া পর্যন্ত কারও কোনও তৎপরতা চোখে প়়ড়েনি।’’ দেবর্ষিবাবুর প্রশ্ন, তা হলে কি কোনও রোগী ভেন্টিলেশনে যাওয়া পর্যন্ত হাসপাতাল অপেক্ষা করে? স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে এমন ব্যবসা কি মেনে নেওয়া যায়?’’
অভিযুক্ত ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, শেষ কয়েক বছরে শোভনাদেবীর পেটের তিনটি অস্ত্রোপচার হয়েছিল। পেটে যন্ত্রণার সমস্যা নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ২৩ নভেম্বর তাঁর অস্ত্রোপচার করতে হয়। পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিষেবা ওই বৃদ্ধাকে দেওয়া হয়েছিল। তবে তাঁর মৃত্যু দুঃখজনক।
পুলিশ জানিয়েছে, রোগীর পরিজনেদের অভিযোগ পাওয়ার পরে দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy