অস্ত্রোপচারের আগে ঝর্না দাস।
বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন খুলনার বাসিন্দা বছর সাতান্নর এক প্রৌঢ়া। গলা, কানের নীচে, বুকের মাঝে বড় ফোড়ার মতো ফুলে উঠত। থাইরয়েড ক্যানসারে আক্রান্ত ঝর্না দাস নামের ওই প্রৌঢ়ার বার চারেক অস্ত্রোপচার হয়েছে সে দেশে। কিন্তু কয়েক মাস পরেই যে কে সেই। আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন সে দেশের চিকিৎসকেরাও।
পরিবার সূত্রের খবর, ঝর্নাদেবীর স্বামী মারা গিয়েছেন বছর ছয়েক আগে। ছেলে স্যামুয়েল মার্কিন মুলুকে গাড়ি চালান। কয়েক মাস আগে ভারতে আসা স্থির করেন ঝর্নাদেবী। দিদি শেফালি বিশ্বাসকে নিয়ে দু’মাস আগে অন্ধ্রপ্রদেশে আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। শেষ চেষ্টা হিসেবে সেখানকার হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু তাঁর অবস্থা দেখে সেখানকার চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের ঝুঁকি নেননি।
অবশেষে কলকাতায় এসে ভর্তি হন বাইপাসের ধারের এক হাসপাতালে। সম্প্রতি সেখানেই ৫০টিরও বেশি ফুলে ওঠা অংশের অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর। যিনি অস্ত্রোপচার করেছেন, সেই ক্যানসার শল্য-চিকিৎসক নিপুণ সাহার দাবি, ঝর্নাদেবী অনেকটাই ভাল আছেন। আবার সমস্যা হতে পারে? চিকিৎসকের কথায়, ‘‘আমরা রেডিয়ো আয়োডিন আর ওরাল কেমো দিয়ে তা আটকে রাখতে পারব বলে মনে হয়।’’
ঠিক কী হয়েছিল? অ্যাপোলো হাসপাতালের ওই চিকিৎসক জানান, থাইরয়েড গ্ল্যান্ড থেকে ক্যানসার ছড়িয়ে বগল পর্যন্ত গিয়েছিল। সে কারণেই ফোড়ার মতো ফুলে উঠছিল। থাইরয়েড ক্যানসার এ ভাবে ছড়ানোর বেশি উদাহরণ নেই। নিপুণবাবুর কথায়, ‘‘২০১১ সালে ক্যানসার ধরা পড়ার পরে কয়েক বার অস্ত্রোপচার হয়। যে দু’টি ধমনী দিয়ে মস্তিষ্ক থেকে দূষিত রক্ত নীচে নেমে আসে, তার ডানদিকেরটি আগের বার কেটে দেওয়া হয়। ফলে খুব সতর্ক থেকে অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে।’’
হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছে ঝর্নাদেবীকে। চিকিৎসার সময়ে তাঁর সেবা করেছেন দিদি শেফালি। কলকাতার এক মিশনারিতে কয়েক দিন থেকে সেলাই কাটিয়ে দেশে ফিরে গিয়েছেন। ঝর্নাদেবী বলছেন, ‘‘সুস্থ হয়ে যে দেশে ফিরতে পারব,
তা ভাবিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy