E-Paper

যশোর রোডে গাছ কাটায় স্থগিতাদেশ খারিজে হতাশ পরিবেশকর্মীরা

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বারাসত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত যশোর রোডের সম্প্রসারণ এবং রেলওয়ে ওভারব্রিজ তৈরির জন্য ৩৬৫টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয় ২০১৮ সালে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৩৭
A Photograph representing cutting of trees

গাছ কেটে রাস্তা সম্প্রসারণের অনুমতি পেলে গাছ-পিছু পাঁচটি করে গাছ লাগাতে রাজ্য সরকার প্রস্তুত বলেও আদালতকে জানান সিঙ্ঘভি। প্রতীকী ছবি।

যশোর রোডের পাশে তিনশোরও বেশি প্রাচীন গাছ কাটার উপরে হাই কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছিল ২০১৮ সালে। পরে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর করা সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গাছ কাটার উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বারাসত থেকে পেট্রাপোল পর্যন্ত যশোর রোডের সম্প্রসারণ এবং রেলওয়ে ওভারব্রিজ তৈরির জন্য ৩৬৫টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয় ২০১৮ সালে। রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য গাছ কাটার যৌক্তিকতা কতটা, তা খতিয়ে দেখতে ওই বছরই পরিবেশবিদদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দেয়। রেলওয়ে ওভারব্রিজ তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে সেই রিপোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিক্রম নাথের বেঞ্চ জানিয়েছে, হাই কোর্ট সব দিক খতিয়ে দেখে গাছ কাটার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাতে তারা কোনও ত্রুটি খুঁজে পায়নি।

চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, পরিবেশ রক্ষায় গাছ বাঁচানো জরুরি। তবে উন্নয়নের দিকটিও মাথায় রাখতে হবে। অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশও যে কারণে প্রত্যাহার করে নিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।

যশোর রোড সম্প্রসারণের কাজ থমকে থাকায় দিনের পর দিন এই পথে দুর্ঘটনা ঘটছে বলে সুপ্রিম কোর্টে জানান রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। গত পাঁচ বছরে দুর্ঘটনায় প্রায় ৬০০ প্রাণ গিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। গাছ কেটে রাস্তা সম্প্রসারণের অনুমতি পেলে গাছ-পিছু পাঁচটি করে গাছ লাগাতে রাজ্য সরকার প্রস্তুত বলেও আদালতকে জানান সিঙ্ঘভি। অন্য দিকে, এপিডিআর-এর তরফে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ সুপ্রিম কোর্টকে জানান, এর আগে উন্নয়নের নামে বহু ক্ষেত্রে পরিবেশ রক্ষায় নজর দেয়নি রাজ্য।

গাছ রক্ষায় দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছে এপিডিআর। উত্তর ২৪ পরগনার বহু মানুষও প্রাচীন এই গাছগুলি কেটে ফেলার বিরোধী। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে এপিডিআর-এর বনগাঁ শাখার সম্পাদক অজয় মজুমদারের সংযত প্রতিক্রিয়া, ‘‘আইন যা বলবে, তা আমাদের সকলকে মেনে নিতে হবে।’’ গাছ বাঁচাতে আন্দোলনে নেমেছিলেন দেবাশিস রায়চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তে আমি হতাশ।’’রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘গাছ কাটা হলে আমরা বিকল্প গাছ লাগাব। রাজ্য বাজেটে মুখ্যমন্ত্রী গাছ লাগানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছেন।’’ প্রাচীন গাছের মরা, শুকনো ডাল ভেঙে বহু দুর্ঘটনা ঘটেছে গত কয়েক বছরে। গাছ কাটা হলে বহু মানুষের প্রাণ রক্ষা হবে। এই পথে যানবাহনের গতিও বাড়বে বলে মনে করেন বনগাঁর পুরপ্রধান গোপালশেঠ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Tree cutting case Jessore Road Supreme Court

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy