ফেলে দেওয়া ফানেল দিয়ে কেউ তৈরি করেছে পরিবেশবান্ধব টেবিল ফ্যান। সেই ফ্যান দিয়ে সহজেই ঠান্ডা রাখা যাবে বাতাস। কেউ আবার দৃষ্টিহীনদের জন্য তৈরি করেছে বিশেষ লাঠি। সামনে কোনও বস্তু এলেই ‘সাউন্ড সেন্সর’ লাগানো লাঠি আওয়াজ করে জানিয়ে দেবে। সারা রাজ্য থেকে খুদে বিজ্ঞানীরা তাদের এমনই সব উদ্ভাবনী কৌশল মেলে ধরতে একত্রিত হয়েছিল সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রালের মাঠে।
এসআরএম বিশ্ববিদ্যালয় ও আনন্দবাজার পত্রিকার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘মিশন ইনভেনশন’ নামে ওই প্রদর্শনী খুদে বিজ্ঞানীদের প্রতিভার দ্যুতিতেই মঙ্গলবার উজ্জ্বল হয়ে উঠল। প্রাথমিক পর্বে সারা রাজ্যের প্রায় পাঁচশো খুদে বিজ্ঞানী প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে থেকে বাছাই করা ৫৮টি স্কুল হাজির ছিল এ দিন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত, বসু বিজ্ঞান মন্দিরের প্রাক্তন অধিকর্তা শিবাজী রাহা বলেন, ‘‘এমন উদ্যোগ সব সময়ে স্বাগত। কারণ, বিজ্ঞান শুধু পাঠ্যবইয়ে সীমাবদ্ধ নয়। তা আত্মস্থ করার জিনিস। বিজ্ঞানচর্চার আসল উদ্দেশ্য, যা আগে কেউ দেখেনি তাকে নতুন ভাবে দেখা। কিন্তু এখন প়ড়াশোনার রীতি বিজ্ঞানচর্চার পরিপন্থী। শিক্ষার আনন্দ ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে।’’ ‘জিনিয়াস’ শব্দটি নতুন ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন শিবাজীবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘জিনিয়াস মানে সব সময়েই যুগান্তকারী কিছু আবিষ্কার করতে হবে, তা নয়। নিজের মতো করে দেখার চেষ্টাও জিনিয়াসের লক্ষণ। ফেলে দেওয়া জিনিস থেকে কিছু তৈরি করতে পারছি, সেটাও উদ্ভাবনের একটা অন্যতম দিক। সেটা এই প্রদর্শনীতে দেখতে পাচ্ছি।’’
ওই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ‘সায়েন্স কমিউনিকেটর্স ফোরাম’-এর সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বর্ধন বলেন, ‘‘এক বছরে পড়াশোনা করে প়ড়ুয়ারা যা শেখে, এ ধরনের প্রদর্শনীতে তার থেকে বেশি শেখার সুযোগ থাকে।’’ এসআরএম বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আর পি মহাপাত্র বলেন, ‘‘বিজ্ঞানের মাধ্যমে পুরো বিশ্ব পাল্টে গিয়েছে। প্রতিভা দেখানোর এটাই ঠিক মঞ্চ।’’