Advertisement
E-Paper

Trekking disaster: ফেসবুকের মাধ্যমে দলের সদস্য সংখ্যা বাড়াবেন না

সেই সঙ্গে হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হলে তার মোকাবিলায় ওয়াটারপ্রুফ জুতো, ফেদার জ্যাকেট-প্যান্ট সঙ্গে রাখুন।

দেবাশিস বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২১ ০৬:৫৯
উত্তরাখণ্ডের পিন্ডারি হিমবাহে আটকে পড়া ট্রেকারদের উদ্ধার করা হচ্ছে। ছবি: টুইটার

উত্তরাখণ্ডের পিন্ডারি হিমবাহে আটকে পড়া ট্রেকারদের উদ্ধার করা হচ্ছে। ছবি: টুইটার

উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিংয়ে গিয়ে একের পর এক অঘটন এখন এই বিতর্কই ফের উস্কে দিয়েছে যে, পাহাড়ি পথে নিজেদের ভুলেই আমরা বিপদ ডেকে আনছি কি না। তাই প্রথমেই বলব, বিপদের আশঙ্কা কমাতে ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে দলের সদস্য সংখ্যা বাড়াবেন না। খরচ কমাতে যে কোনও ভাবে দল ভারী করার প্রবণতা বিপদ ডেকে আনতে পারে। বেশির ভাগ ট্রেকিং দলই কোনও অতিরিক্ত দিন ধার্য রাখে না। ফলে দুর্যোগে এক জায়গায় বসে থাকার মতো সময়ও তাদের হাতে থাকে না। ট্রেনের বা বিমানের আগে থেকে কেটে রাখা ফেরার টিকিটই তাদের বাধ্য করে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ছুটে চলতে। এতেও কিন্তু ঝুঁকি বাড়ে।

সেই সঙ্গে হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হলে তার মোকাবিলায় ওয়াটারপ্রুফ জুতো, ফেদার জ্যাকেট-প্যান্ট সঙ্গে রাখুন। এ সবের অভাবেও কিন্তু প্রাণহানি হতে পারে। কোনও পথে রওনা হওয়ার আগে একাধিক ওয়েবসাইট থেকে আগামী সাত-আট দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নিন। যে সংস্থার সঙ্গে ট্রেকিংয়ে যাচ্ছেন, আগে তাদের সম্পর্কে ভাল করে খোঁজখবর নিন। তাদের নাম-ফোন নম্বরও সকলকে জানিয়ে রাখুন।

প্রতিটি ‘হাই-অল্টিটিউড’ ট্রেকিং দলে দু’-এক জন অভিজ্ঞ সদস্যের থাকা একান্ত জরুরি, যিনি দলনেতার দায়িত্ব নেবেন। দলের সব সদস্য ও পাহাড়ি গাইড-পোর্টারদের মধ্যে সমন্বয় রাখা দলনেতার কাজ। যে হেতু এটা ‘টিম গেম’, তাই প্রত্যেককেই কিছু না কিছু দায়িত্ব নিতে হবে। তবে সব চেয়ে জরুরি কাজ অবশ্যই দলনেতার।

এর সঙ্গে থাকছে দলের সদস্যদের দক্ষতা বুঝে ট্রেকিং রুট বাছাই। কঠিন ট্রেকে কোনও অনভিজ্ঞ সদস্যের জন্য কিন্তু পুরো দল বিপদে পড়তে পারে। দুর্গম এলাকায় বিপদের সময়ে কিন্তু তৎক্ষণাৎ সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তাই অল্পবিস্তর পর্বতারোহণের জ্ঞান থাকা দু’-এক জনের দলে থাকা নিতান্তই আবশ্যক। আইস অ্যাক্স, ক্র্যাম্পন, দড়ির ব্যবহার জানাটাও জরুরি। দলের কারও পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে বিপদের সময়ে তা কাজে লাগে। পাহাড়ে তাঁবু লাগানোর উপযুক্ত জায়গা বা পানীয় জলের উৎস খুঁজে না পাওয়া, খারাপ আবহাওয়া, তুষারপাত, রকফল, তুষারধসের আশঙ্কা, ঝোড়ো হাওয়া, তাঁবু ছিঁড়ে যাওয়া, খাবার নষ্ট হওয়া, রাস্তা বা সেতু ভেঙে যাওয়ার মতো দুর্যোগ লেগেই থাকে। তাই প্রতি ক্ষেত্রে হিসাব করে ‘মিনিমাম ক্যালকুলেটেড রিস্ক’ নেওয়াই অভিজ্ঞ দলনেতার কাজ। তবে তাঁর সব চেয়ে জরুরি কাজ হল, কোথা থেকে ফিরতে হবে— ঠিক সময়ে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া। তবে দুর্যোগের সময়ে এক জায়গায় অপেক্ষা করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ পাহাড়ে ভয়ঙ্কর দুর্যোগ অনন্তকাল ধরে চলে না। আর এ সব সিদ্ধান্তই নিতে পারেন এক জন দক্ষ দলনেতা।

এ ছাড়া, দলের সদস্যদের যথাযথ শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতির দিকটি তো আছেই। যেখানে যাচ্ছেন, সেই এলাকা, ট্রেকিং রুট, আবহাওয়া সম্বন্ধে বিশদে পড়াশোনা প্রয়োজন। সেই পথে এর আগে যাঁরা গিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা জরুরি। অতীতে সেই পথে কোনও বিপদ ঘটেছে কি না, সেটাও জানা দরকার। তা হলেই ফের বিপদে পড়লে কী ভাবে উদ্ধার পাওয়া যেতে পারে, তার একটা ধারণা থাকবে। সেই সঙ্গে দলের সকল সদস্যের দক্ষতা এবং দুর্বলতা সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে, পাহাড় সব সময়ে আমার মনের মতো না-ও চলতে পারে, তাই প্ল্যান-বি তৈরি রাখতে হবে।

এ রাজ্যে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের দায়িত্বে থাকা যুবকল্যাণ দফতরকে ট্রেকিংয়ে যাওয়ার আগে সে সম্পর্কে জানিয়ে যান। ট্রেকিং শুরুর আগে স্থানীয় প্রশাসনকেও জানিয়ে রাখাটা জরুরি। এতে কোনও বিপর্যয় ঘটলে উদ্ধারকাজে অনেকটাই সুবিধা হয়।

তবে এত কিছুর পরেও বিপদ আসতে পারে। কিন্তু তা বলে তো পাহাড়ে যাওয়া বন্ধ করতে পারি না। তাই কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, যাতে বিপদ এলে নিজেকে ও দলকে বাঁচিয়ে নিরাপদে ফিরতে পারি।

trekking Mountaineer
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy