Advertisement
E-Paper

যাদবপুরে ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু: লালবাজারে কথা বলার পর থানায় মৃত পড়ুয়ার পরিবার, খুনের মামলা রুজু

সোমবার সকালে মৃতার বাবা প্রথমে লালবাজারে যান। তার পরে সেখান থেকেই যাদবপুর থানায় যান তিনি। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের হচ্ছে থানায়।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৬:২৮
Family of the deceased student of Jadavpur university filed a complaint with Jadavpur police station

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু। — ফাইল চিত্র।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী অনামিকা মণ্ডলের মৃত্যুর ঘটনায় এ বার পুলিশের দ্বারস্থ পরিবার। সোমবার মৃতার বাবা অর্ণব মণ্ডল যাদবপুর থানায় যান। মেয়ের মৃত্যু নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। সূত্রের খবর, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে মৃতার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। এ ছাড়াও, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারাতেও মামলা রুজু হয়েছে।

গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের অদূরে একটি পুকুর থেকে অনামিকার দেহ উদ্ধার হয়। কী ভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে তা নিয়ে ক্রমশ রহস্য দানা বাঁধছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে পুলিশ জানতে পেরেছে জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার নিমতার বাসিন্দা অনামিকার। তবে প্রশ্ন উঠছে, অনামিকা কি অসাবধানতাবশত জলে পড়ে গিয়েছিলেন না কি কেউ ঠেলে ফেলে দিয়েছিলেন তাঁকে? শুধু তা-ই নয়, আত্মহত্যার তত্ত্বও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। যদিও পরিবার সেই তথ্য মানতে নারাজ।

সোমবার সকালে অনামিকার বাবা লালবাজারে যান। সেখানে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তার পরেই মৃতার বাবা যাদবপুর থানায় যান। সেখানেই তিনি খুনের অভিযোগ জমা করেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার বাবা জানিয়েছেন, কিছু অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করে তাঁর মেয়েকে পুকুরে ঠেলে ফেলে দিয়ে হত্যা করেছেন। ঘটনার সময়ের উল্লেখও করা হয়েছে মৃতার পরিবারের তরফে। তাদের দাবি, ১১ সেপ্টেম্বর রাত ৯টা ১০ মিনিট থেকে ১০টা ২৬ মিনিটের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে খুন এবং ষড়যন্ত্রের মামলা রুজু হয় যাদবপুর থানায়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ড্রামা ক্লাবের অনুষ্ঠান চলছিল। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অনামিকা। রাত ১০টা ২০ নাগাদ পুকুরে তাঁকে ভাসতে দেখেন ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীরা। তার পর তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী কেপিসি হাসপাতালে। সেখানে অনামিকাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

অনামিকা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করছিলেন। অনুষ্ঠানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সেই সময়। ক্যাম্পাসে নানা জায়গায় সিসি ক্যামেরাও লাগানো রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, নিরাপত্তারক্ষীও ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। সকলের নজর এড়িয়ে অনামিকা কী ভাবে ওই পুকুরপাড়ে গেলেন এবং পড়ে গেলেন জলে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন।

পুলিশ ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিত মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত করছে। ক্যাম্পাসের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে খবর। ঘটনাস্থল ঘুরে এসেছে ফরেনসিক দলও। সংগ্রহ করা হয়েছে বিভিন্ন নমুনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেটের সামনে তিনটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে। তবে যে পুকুর থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে, তার দিকে মুখ করে আদৌ কোনও ক্যামেরা নেই। কী ভাবে ছাত্রী পুকুরে পড়লেন, এখনও তা স্পষ্ট হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জলে ডোবার কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে তিনি মদ্যপান করে ছিলেন কি না বা শরীরে অন্য কোনও মাদক পদার্থ ছিল কি না, তা জানতে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে। সেই পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পরেই এই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। তবে তদন্তে এখনও পর্যন্ত খুনের তথ্য পাননি তদন্তকারী, খবর লালবাজার সূত্রে। যদিও সব দিকই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অনামিকার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা।

Jadavpur University Student Death Jadavpur University FIR
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy