Advertisement
E-Paper

Accident: জীবনটা তছনছ হয়ে গেল, এ বার অন্তত রাস্তা সারাই হোক

রাজ্য প্রশাসনের কাছে আবেদন, সারা রাজ্যে এবং কলকাতায় একাধিক রাস্তার অবস্থা খারাপ। সেগুলি দ্রুত সারানো হোক।

সুনীল তিরকে

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:০০
দুর্ঘটনার পরে তড়িঘড়ি বাসন্তী হাইওয়ের এবড়োখেবড়ো অংশ সারাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে।

দুর্ঘটনার পরে তড়িঘড়ি বাসন্তী হাইওয়ের এবড়োখেবড়ো অংশ সারাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে।

জীবনটা তছনছ হয়ে গেল, এ বার অন্তত রাস্তা সারাই হোক

মেয়ে হওয়ায় খুব খুশি হয়েছিল শশী। মেয়েকে খুব ভালবাসত। পার্ক স্ট্রিটের পুলিশ আবাসনটা মেয়ের জন্য সাজিয়েওছিল সুন্দর ভাবে। কোথা থেকে কী যে হয়ে গেল! দেড় বছরের নাতনিটা আর কোনও দিন বাবাকে পাবে না। বাবা ডাকতেই পারল না!

আজ আর কোনও কথা বলতে ভাল লাগছে না। সেই মানসিকতাই নেই। শশিভূষণ আমার জামাই হলেও নিজের ছেলে বলেই মনে করতাম। গত বছরের এপ্রিলেই শশীর বাবা মারা গিয়েছেন। ওর মা-ই বা কী ভাবে এ বার ছেলের শোক সামলে উঠবেন! অকালে যে ওকে হারাতে হবে, এখনও ভাবতে পারছি না। এ বার কাকে নিয়ে আমরা বাঁচব? আমার মেয়েটাকে সামলানো যাচ্ছে না।

সোমবার বিকেলে আমার মোবাইলে স্ত্রীর ফোন যখন এসেছিল, তখন আমি বাসে। যোগাযোগ ভবনের অফিস থেকে বাগুইআটির বাড়িতে ফিরছিলাম। স্ত্রী শুধু বলেছিল, তাড়াতাড়ি বাড়ি আসতে হবে। তাড়াতাড়ি কেন বাড়ি যাব? কী হয়েছে? বিশদ জানতে চাইতেই ফোনটা কেটে দেয়। ফের ফোন করলেও বেজে যায়। তখনও জানতাম না,
আমাদের আদরের শশী আর নেই। বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করি। স্ত্রী জানায়, পুলিশ থেকে ফোন করেছিল। ই এম বাইপাসের কাছে একটা হাসপাতালের নাম করে সেখানে যেতে বলেছে। জামাইয়ের একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে।

স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে সেই হাসপাতালে তড়িঘড়ি পৌঁছই। গিয়ে দেখি, লোকে লোকারণ্য। পুলিশ, সংবাদমাধ্যম— সবাই উপস্থিত সেখানে। মিডিয়ার ক্যামেরা আমাদের দিকে তাক করেছিল। শশী আমাদের ছেড়ে চলে যাবে, এ কথা তখনও ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারিনি।

হাসপাতালে ঢুকে দেখি, ওর গোটা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। জামাইয়ের রক্তাক্ত নিথর দেহটা দেখেই সংজ্ঞাহীন হয়ে যাই। জ্ঞান ফিরতে শুনলাম, বাসন্তী হাইওয়েতে ওর দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার সময়ে শশী কর্তব্যরত ছিল। রাস্তার গর্তে মোটরবাইকের চাকা ঢুকে যাওয়ায় ঘটনাস্থল থেকে অনেকটা দূরে ও ছিটকে পড়ে বলে শুনেছি। আমি নিজে বাসন্তী হাইওয়েতে একাধিক বার গিয়েছি। যত বার গিয়েছি, তত বারই ওখানকার বেহাল রাস্তার ছবি চোখে
পড়েছে। ওই রাস্তায় কোনও ডিভাইডার নেই। দু’পাশেই খাল রয়েছে। খালে গাড়ি পড়ে গিয়ে একাধিক দুর্ঘটনাও ঘটেছে।

আমাদের জীবনটা তো তছনছ হয়ে গেল। রাজ্য প্রশাসনের কাছে আবেদন, সারা রাজ্যে এবং কলকাতায় একাধিক রাস্তার অবস্থা খারাপ। সেগুলি দ্রুত সারানো হোক। আমার মতো কোনও অভিভাবককে যাতে অসময়ে প্রিয়জনকে হারাতে না হয়। খানাখন্দ ভরা রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটে যেন আর কোনও সংসার ভেসে না যায়।

মৃত পুলিশ সার্জেন্টের শ্বশুর

Repair
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy