‘‘আর কতগুলো মৃত্যুর পরে গাফিলতি বন্ধ হবে? নিরাপত্তার পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত ছাড়া যে কোনও খেলাই যে মৃত্যু-ফাঁদ হয়ে উঠতে পারে, সেই বোধোদয়ই বা হবে কবে?’’ এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে থামলেন শ্রীরামপুরের দীপক পাল। কয়েক মিনিট চুপ থেকে বুজে আসা গলায় রবীন্দ্র সরোবরের সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা সম্পর্কে প্রৌঢ় বললেন, ‘‘যাঁর যায়, তাঁর যায়। বাকিরা কয়েক দিন সহানুভূতি দেখান। তাতে পরিস্থিতি পাল্টায় না। যেমন, আমার ছেলের মৃত্যুর পরেও কিছু পাল্টায়নি।’’
২০১৮ সালের ১০ জুন দক্ষিণ কলকাতার একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালীন বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছিল দেবব্রত পাল নামে এক তরুণ ক্রিকেটারের। দীপকবাবু দেবব্রতের বাবা। প্রশ্ন ওঠে, ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকা সত্ত্বেও কেন প্রশিক্ষণ হচ্ছিল? অভিযোগ উঠেছিল, দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া তো দূর, ওই কেন্দ্রে প্রাথমিক কোনও শুশ্রূষাও মেলেনি। ছিল না অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবাও।
রবীন্দ্র সরোবরে রোয়িং করতে নেমে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে দুই কিশোরের ডুবে মৃত্যুর ঘটনাতেও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। কালবৈশাখীর পূর্বাভাস সত্ত্বেও কেন রোয়িং করতে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন রয়েছে। তা ছাড়া, নিয়ম মেনে উদ্ধারকাজের জন্য কোনও ‘ফলো বোট’ কেন রাখা হয়নি এবং উদ্ধারকাজে কেন দেরিতে ডুবুরি নামানো হয়, উঠেছে এমন প্রশ্নও। সরোবরের পাড়ে অন্তত নজরদারির ব্যবস্থা ছিল না কেন, তারও জবাব মেলেনি। দীপকবাবু বললেন, ‘‘ওই দুটো পরিবারের উপর দিয়ে কী যাচ্ছে, বুঝতে পারছি। যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, এমন গাফিলতির জন্য মামলা হওয়া উচিত তাঁদের বিরুদ্ধে।’’