Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচারে বাবা, তবু মৃত্যু মেয়ের

পুরসভার এক আধিকারিক জানান, দিন কয়েক আগেই জ্বর শুরু হয়েছিল রূপকথার। যে বাড়িতে সাগ্নিকবাবুরা থাকেন, সেখানে তিন জন চিকিৎসকও পরিবার নিয়ে থাকেন। জ্বর হওয়ার পরে তাঁদের পরামর্শও নেওয়া হয়েছিল বলে পুরসভা জানতে পেরেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৮
বাবা-মায়ের সঙ্গে রূপকথা পোলাই।

বাবা-মায়ের সঙ্গে রূপকথা পোলাই।

এক সপ্তাহ আগেই নিজে পুজো মণ্ডপে গিয়ে ডেঙ্গি-সচেতনতায় প্রচার চালিয়েছেন। ডেঙ্গি প্রতিরোধের প্রতিযোগিতায় কোন পুজো কমিটি কেমন কাজ করছে, সেই বিচারকদের দলেও নাম ছিল পুরসভার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সাগ্নিক পোলাইয়ের। বুধবার সেই ইঞ্জিনিয়ারেরই দশ বছরের মেয়ে মারা গেল ডেঙ্গিতে। পুজোর মুখে এই মর্মান্তিক ঘটনায় বাকরুদ্ধ পুর অফিসারেরাও। এ দিন বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় বাঁশদ্রোণীর কামডহরি এলাকার ব্যানার্জিপাড়ার বাসিন্দা রূপকথা পোলাইয়ের। পুরসভা সূত্রের খবর, ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্য উপদেষ্টা তপন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মৃতার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। পুরো নথি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষ কমিটির কাছে পাঠানো হবে।’’

পুরসভার এক আধিকারিক জানান, দিন কয়েক আগেই জ্বর শুরু হয়েছিল রূপকথার। যে বাড়িতে সাগ্নিকবাবুরা থাকেন, সেখানে তিন জন চিকিৎসকও পরিবার নিয়ে থাকেন। জ্বর হওয়ার পরে তাঁদের পরামর্শও নেওয়া হয়েছিল বলে পুরসভা জানতে পেরেছে। তবে কেন মেয়েটির জ্বর হল, তা খতিয়ে দেখা হয়নি বলেই অভিযোগ উঠেছে। পরে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় মঙ্গলবার বাইপাসের ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় রূপকথাকে। সেখানে রক্ত পরীক্ষার পরে জানা যায়, তার শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু রয়েছে। এনএস-১ এবং আইজিএম পরীক্ষা করা হয়েছিল। দুটোই পজিটিভ। তপনবাবু বলেন, ‘‘সাধারণত জ্বরের পাঁচ দিন পরে আইজিএম পরীক্ষায় ফল পাওয়া যায়। তাই পাঁচ দিন পরে ওই পরীক্ষা করতে বলা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে মঙ্গলবার আইজিএম করার পরে রিপোর্ট পজিটিভ মেলায় বোঝা যায়, জ্বর আগে থেকেই ছিল। সময়ে রক্ত পরীক্ষা করা প্রয়োজন ছিল।’’ স্বভাবতই জ্বর নিয়ে অবহেলা না করে দ্রুত সচেতন হওয়া যে জরুরি, বুধবার ওই বালিকার মৃত্যু তা প্রমাণ করে দিল বলে মনে করছেন পুর বিশেষজ্ঞেরা।

ওই পরিবারের কেউ কথা বলার অবস্থায় নেই। স্থানীয় সূত্রের খবর, রূপকথা দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া। স্কুল না বাড়ি, ডেঙ্গির মশা তাকে কোথায় কামড়েছে, জানা কঠিন। পুরকর্মীদের দাবি, দুই জায়গাতেই তাঁরা নিয়মিত মশার লার্ভা নিধনের কাজ করেন। এই ঘটনার পরে দু’টি জায়গাতেই মশা দমনের কাজে বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। পরিবারের তরফেও কেউ অভিযোগ জানানোর মতো অবস্থায় নেই।

পুরসভা সূত্রের খবর, চলতি বছরে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫৬০। সংখ্যাটা গত বারের তুলনায় কম হলেও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গিতে শহরে এ বছর ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। রূপকথার মৃত্যুর পরে তা বাড়ল। তপনবাবু জানিয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতাল থেকে জানা গিয়েছে, রূপকথার মৃত্যুর কারণে লেখা হয়েছে, ডেঙ্গি হেমারেজিক শক উইথ মাল্টি অর্গান ডিসফাংশন।

Death Dengue Girl KMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy