২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। তার আগে সব রাজনৈতিক দলই নিজের মতো করে ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। সেই পর্যায়ে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও দেখা গেল নিজের বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে জনসংযোগে। বুধবার দুপুরে নিজের কালীঘাটের বাসভবন থেকে বেরিয়ে আচমকাই তিনি নেমে পড়েন এসএসকেএম হাসপাতালের সামনে।
আচমকাই হাসপাতালের সামনে ‘মা ক্যান্টিন’-এর কাছে গিয়ে দাঁড়ান মমতা। মুখ্যমন্ত্রীকে ওই ক্যান্টিনে উপস্থিত হতে দেখে তৎপর হয়ে পড়ে প্রশাসন। ‘মা ক্যান্টিন’-এ দাঁড়িয়ে থাকা আমজনতাও খানিকটা হকচকিয়ে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কথা শুরু করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্যান্টিনের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে চান, আজ কী খাবার দেওয়া হচ্ছে। উত্তরে ক্যান্টিনের কর্মীরা জানান, প্রতিদিনের মতো ভাত, ডাল, তরকারির সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে একটি করে সিদ্ধ ডিম। ক্যান্টিনের কর্মীরাই মমতাকে অনুরোধ করেন কয়েক জনকে ‘মা ক্যান্টিন’-এর খাবার হাতে তুলে দিতে। তাঁদের অনুরোধ মেনেই মুখ্যমন্ত্রী কয়েক জনের হাতে খাবারের থালা তুলে দেন। পাশাপাশি, খাবারের মান প্রসঙ্গেও জানতে চান। কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেই মুখ্যমন্ত্রী নিজের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হয়ে যান।
প্রসঙ্গত, তৃতীয় বার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর অর্থ দফতরের উদ্যোগে পাঁচ টাকার বিনিময়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ‘মা ক্যান্টিন’ চালু করেছেন মমতা। যেখানে প্রতি দিন দুপুরে পাঁচ টাকার বিনিময়ে ডাল, ভাত, তরকারি এবং সিদ্ধ ডিম মেলে। বেলা ১২টা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত চলে এই সরকারি ক্যান্টিন।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মুখ্যমন্ত্রীকেও ভোটে প্রার্থী হতে হয়। তাঁকেও সাধারণ মানুষের মতোই ভোট চাইতে হয় জনতার থেকে। তাই মুখ্যমন্ত্রীও নিজের মতো করেই জনসংযোগের কাজ শুরু করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। তাদের মতে, ২০২১ সালের নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ভবানীপুর ছেড়ে নন্দীগ্রামে ভোটে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার অনেক আগে থেকেই ভবানীপুর বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী যে ফের প্রার্থী হচ্ছেন, তার ইঙ্গিত মিলেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের বিএলএ-দের নিয়ে নিজের বাসভবনে এসআইআর সংক্রান্ত বৈঠক করেছেন তিনি। তাই আচমকা নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে একটি ‘মা ক্যান্টিন’-এ মুখ্যমন্ত্রীর হাজির হয়ে যাওয়াকে অনেকেই ভোটের আগের জনসংযোগ হিসাবেই দেখছেন।