Advertisement
১০ ডিসেম্বর ২০২৩
Dengue

পুরভবনে বৈঠক, ডেঙ্গি সামলাতে কলকাতায় চালু হবে ‘ফিভার ক্যাম্প’

পরিস্থিতির মোকাবিলায় সোমবার পুরভবনে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম।

শহরের কোথাও মশার লার্ভা মিললে মশার তেল স্প্রে করা হবে।

শহরের কোথাও মশার লার্ভা মিললে মশার তেল স্প্রে করা হবে। ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:৩৪
Share: Save:

ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে কলকাতা পুরসভার কর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে শহরের ২৫টি ওয়ার্ড। তাই আজ, মঙ্গলবার থেকে ‘ফিভার ক্যাম্প’ চালু করা হচ্ছে ওই সমস্ত ওয়ার্ডে। শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ যে হারে বাড়ছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগের। পরিস্থিতির মোকাবিলায় সোমবার পুরভবনে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য-অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পুর কমিশনার বিনোদ কুমার, মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ প্রমুখ।

বৈঠক শেষে মেয়র জানান, শহরের ২০-২৫টি ওয়ার্ড বেশি রকম ডেঙ্গিপ্রবণ। অন্যান্য ওয়ার্ডে ডেঙ্গি ছড়ালেও এই সমস্ত ওয়ার্ডে প্রকোপ তুলনায় বেশি। পরিস্থিতির মোকাবিলায় ২৫টি ওয়ার্ডেই ফিভার ক্যাম্প চালু হচ্ছে। মেয়রের কথায়, ‘‘এই সমস্ত ক্যাম্প আগামী কয়েক দিন চালু থাকবে। এ ছাড়া, শহরের চারটি হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টাই ডেঙ্গি পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে।’’ ওই চার হাসপাতাল হল: বেলেঘাটা আইডি, এম আর বাঙুর, এসএসকেএম এবং স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন। মেয়র জানান, শিশুদের মধ্যেও ডেঙ্গি বাড়তে থাকায় বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বি সি রায় শিশু হাসপাতালে কিছু শয্যা শুধু ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। এর পাশাপাশি, বেলেঘাটা আইডি ও এম আর বাঙুর হাসপাতালে যথাক্রমে ৮০টি ও ৬০টি করে শয্যা বরাদ্দ থাকবে ডেঙ্গি রোগীদের জন্য। সেই সঙ্গে ওই দুই হাসপাতালে ডেঙ্গি রোগীদের জন্য ১০টি করে আইসিসিইউ শয্যাও রাখা থাকছে। মেয়র জানান, ডেঙ্গিবাহী মশা কোথায় কোথায় জন্মাচ্ছে, তা খুঁজে বার করতে ড্রোনের মাধ্যমেও চলবে নজরদারি। ফাঁকা বাড়ি, বন্ধ কারখানা থেকে শুরু করে শহরের কোথাও মশার লার্ভা মিললে ড্রোনের মাধ্যমেই মশার তেল স্প্রে করা হবে।

স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতাল বা ল্যাবরেটরিতে ডেঙ্গি পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তা খুব দ্রুত স্বাস্থ্য দফতর ও কলকাতা পুরসভাকে জানাতে হবে। অন্যথায় ওই সমস্ত বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ স্বাস্থ্যসচিব জানান, এ বিষয়ে রাজ্য সরকারি আইন রয়েছে। শীঘ্রই এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানান মেয়র। মেয়রের দাবি, এ পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গিতে মোট তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।

শহরের যে সমস্ত এলাকায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে, সেগুলি হল: এক নম্বর ওয়ার্ডের কাশীপুর লকগেট, ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের চেতলা হাট রোড, ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের কার্ল মার্ক্স সরণি, ৮১ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাপুর কলোনি, নিউ আলিপুরের বিভিন্ন ব্লক, ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের কালীঘাট রোড, কালী লেন, ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাওয়ালি মণ্ডল রোড, ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পূর্বাচল রোড, ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাজডাঙা স্কুল রোড, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদ স্মৃতি কলোনি, ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ব্যানার্জিপাড়া রোড, ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের এস এন রায় রোড এবং ১২১ নম্বর ওয়ার্ডের বামাচরণ রায় রোড, বিবি রোড ইত্যাদি। এ ছাড়াও পরিবহণ দফতরের অফিস, ডিপো থেকে শুরু করে পুরনো কারখানায় মশার লার্ভা মিলেছে বলে জানান মেয়র। আজ, মঙ্গলবার থেকে বাজারে বাজারে ডেঙ্গি প্রতিরোধে প্রচার শুরু করবে পুরসভা। অটোয় স্পিকার লাগিয়ে প্রচার ছাড়াও হ্যান্ড মাইকে চলবে বার্তা দেওয়া। মেয়র বলেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে, জ্বর কমে যাওয়ার পরে ডেঙ্গি মারাত্মক আকার নিচ্ছে। এটা হালকা ভাবে নিলে চলবে না। নিয়মিত রক্ত পরীক্ষায় নজর দিতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE