Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নয়া মেট্রোয় কী কী থাকছে জানেন তো?

ঝাঁকুনিবিহীন ঝকঝকে কোচে গতি বোঝার উপায় নেই। শুধু মোটরম্যানের কামরার ড্যাশবোর্ডে দেখা যাচ্ছে গতির ওঠানামা।

পরীক্ষা: খতিয়ে দেখা হল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নানা প্রযুক্তি। বৃহস্পতিবার, সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে

পরীক্ষা: খতিয়ে দেখা হল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নানা প্রযুক্তি। বৃহস্পতিবার, সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:১৩
Share: Save:

দু’পাশে অজস্র বহুতল আর নীচে গাড়িতে কিলবিল করছে রাস্তা। তার মধ্যেই উড়ালপথ ধরে ঘণ্টায় আশি কিলোমিটার ছুঁইছুঁই গতিতে ছুটল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।

ঝাঁকুনিবিহীন ঝকঝকে কোচে গতি বোঝার উপায় নেই। শুধু মোটরম্যানের কামরার ড্যাশবোর্ডে দেখা যাচ্ছে গতির ওঠানামা। ট্রেন স্টেশনে পৌঁছতেই মেট্রোর দরজার সঙ্গে নিখুঁত সমন্বয়ে খুলে গেল প্ল্যাটফর্মের স্ক্রিন ডোর। বন্ধও হল বিচ্যুতি ছাড়া।

যাত্রী-পরিষেবা শুরুর জন্য ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কতটা প্রস্তুত, বৃহস্পতিবার সল্টলেকের করুণাময়ী স্টেশনে সেই ছবিই তুলে ধরলেন কেএমআরসিএল (কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে কর্পোরেশন)-এর কর্তারা। সরকারি ভাবে উদ্বোধনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও মেট্রো কর্তৃপক্ষ প্রায় তৈরি। সেক্টর ৫ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত ছ’টি স্টেশনের কাজও একেবারে শেষ পর্যায়ে।

এ দিন সল্টলেক স্টেডিয়াম থেকে সেক্টর ৫-এর মধ্যে একাধিক বার যাতায়াত করে মেট্রোর রেকটি। মেট্রোকর্তাদের দাবি, ট্রেনটি সল্টলেক স্টেডিয়াম এবং সেন্ট্রাল পার্কের মধ্যে সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটার গতিতে ছুটেছে। কেএমআরসিএল-এর রোলিং স্টক বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিকর্তা অনুপকুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘যাত্রী-সুরক্ষা এবং সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা থাকবে নতুন মেট্রোয়।’’ মেট্রোকর্তারা জানান, সব ক’টি স্টেশনের ঘড়ি কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমের ঘড়ির সঙ্গে সমন্বয় রেখে জিপিএস নিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তিতে চলবে। কোন ট্রেন, কোথায়, কেমন গতিতে ছুটছে, তাদের মধ্যে ব্যবধান কতটা, তার সব কিছুই স্বয়ংক্রিয় ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে সেন্ট্রাল পার্কের কন্ট্রোল রুম।

ট্রেন ও লাইনে বসানো বিশেষ অ্যান্টেনা প্রতি মুহূর্তে সঙ্কেত বিনিময় করে ট্রেনের অবস্থান কন্ট্রোল রুমকে জানাবে। সেই অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয় উপায়ে নিয়ন্ত্রিত হবে ট্রেনের গতি। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ট্রেন থামানো এবং যাত্রীদের ওঠানামা লক্ষ রাখা ছাড়া চালকদের বিশেষ ভূমিকা থাকবে না।

তবে যে কোনও রকম প্রতিকূল পরিস্থিতির কথা ভেবে সুরক্ষার যাবতীয় ব্যবস্থা থাকছে মেট্রোর কোচে। প্রতিটি কামরায় চারটি করে সিসি ক্যামেরা ছাড়াও যাত্রীরা যাতে চালকের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, তার ব্যবস্থাও থাকছে। কন্ট্রোল রুমের পাশাপাশি চালক চাইলে নিজেও প্রয়োজনীয় ঘোষণা করতে পারবেন। ট্রেনের যাত্রীদের পাশাপাশি প্ল্যাটফর্মে থাকা মেট্রোকর্মী ও যাত্রীরাও ওই ঘোষণা শুনতে পাবেন। এর জন্য মেট্রোর কামরার বাইরের দিকে দরজার উপরে মাইক্রোফোন এবং বিশেষ আলো থাকবে। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন এসে থামার সময়ে ওই আলো জ্বলে উঠবে। একই ভাবে কামরার দরজা বন্ধ হওয়ায় সময় হলে কামরার বাইরের দেওয়ালে বসানো মাইক্রোফোনে বিশেষ বাজনা শোনা যাবে এবং বাইরের আলো দপদপ করবে। অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে বাতানুকূল কোচে ধোঁয়া ঢোকা বন্ধ করার মতো স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তিও থাকছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

East West Metro Metro
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE