লড়াই: সরু গলিতে ঢুকতে পারেনি দমকল। আগুন নেভাতে তৎপর স্থানীয় যুবকেরা। রবিবার, নারকেলডাঙায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
আগুন লেগেছে একটি আবাসনের চারতলায় ১১টি ঘরে। বন্ধ ঘর থেকে তখন চিৎকার করছেন মহিলা ও শিশুরা। কিন্তু এলাকায় রাস্তা এত সরু যে দমকলের গাড়ি পৌঁছনোই অসম্ভব। তাই দেরি না করে ঘরে আটকে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধার করতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এলাকার যুবকেরাই। দরজা ভেঙে শিশুদের উদ্ধার করলেন তাঁরাই। সিঁড়িতে আগুন, তবু জানলা বেয়েই সকলকে অক্ষত অবস্থায় নীচে নামাল স্থানীয় যুবক সামসাদ আলি, মহম্মদ রেয়াজ, সরফরাজ ও মহম্মদ তনভিরদের দলটি।
দমকল জানায়, রবিবার বিকেল তিনটে নাগাদ নারকেলডাঙার কসাই বস্তিতে একটি আবাসনে আগুন লাগে। চারতলার ছাদে টালি ও বাঁশের কাঠামোর ছাউনি দিয়ে ১২টি ঘর তৈরি করে থাকছিল কয়েকটি পরিবার। তারই ১১টি ঘর সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে বলে জানায় দমকল। তবে কোনও হতাহতের খবর নেই। বাসিন্দারা বলছেন, স্থানীয়দের তৎপরতাতেই বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে।
তনভির জানান, আগুনের খবর পেয়ে উপরে উঠতে গিয়ে দেখেন, নীচে সিঁড়ির দরজায় তালা দেওয়া। যুবকের দলটি সেই তালা ভাঙতে শুরু করে। কিন্তু তনভির ও কয়েক জন অপেক্ষা না করে উঠে যান পাশের আবাসনে। সেই ছাদ থেকে সরাসরি ঝাঁপ দেন আগুন লাগা ঘরগুলির কাছে। ছাদে থাকা ট্যাঙ্ক থেকে বালতি করে জল দেওয়া শুরু করেন তাঁরা। ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছেন সামসাদ আলি ও রেয়াজের বাহিনী। রেয়াজ বলেন, ‘‘ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে চিৎকার করছিলেন মহিলারা। ভয়ে দরজা খুলতে পারছিলেন না। আমরা দরজা ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করি।’’ সেই সময়ে সামসাদ শিশুটিকে কোলে করে জানলা বেয়ে নীচে নেমে পড়েন। উদ্ধার করা হয় আটকে পড়া সকলকেই।
দমকল সূত্রের খবর, প্রথমে একটি রান্নাঘর থেকে আগুন লাগলেও ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়ে সব ক’টি ঘরে। দমকল জানায়, ক্যানাল ওয়েস্ট রোড থেকে ওই আবাসনে যাওয়ার জন্য মাত্র ১২ ফুটের রাস্তা। ফলে দমকলের কোনও গাড়ি ঢোকানো যায়নি। পাইপে করে জল সেখানে পৌঁছতে কিছুটা সময় লাগে। কিন্তু এক ঘণ্টার আগেই পাঁচটি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy