Advertisement
E-Paper

পুড়ল বস্তির ৩৫টি ঘর

রাত পৌনে দু’টো। প্রচণ্ড গরমে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল সাফুরা বিবির। চোখ খুলে দেখেন দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি কার্যত আগুনের গ্রাসে। দরমার ঘরের দেওয়াল দাউদাউ করে জ্বলছে। ঘুমন্ত ছেলে-মেয়েকে টেনে-হিঁচড়ে ঘর থেকে বার করলেন সাফুরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০০:২১
লেলিহান: নিউ টাউনের যাত্রাগাছির কাছে আগুনের গ্রাসে মাঝেরপাড়া বস্তি। রবিবার রাতে।

লেলিহান: নিউ টাউনের যাত্রাগাছির কাছে আগুনের গ্রাসে মাঝেরপাড়া বস্তি। রবিবার রাতে।

রাত পৌনে দু’টো। প্রচণ্ড গরমে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল সাফুরা বিবির। চোখ খুলে দেখেন দুই সন্তানকে নিয়ে তিনি কার্যত আগুনের গ্রাসে। দরমার ঘরের দেওয়াল দাউদাউ করে জ্বলছে। ঘুমন্ত ছেলে-মেয়েকে টেনে-হিঁচড়ে ঘর থেকে বার করলেন সাফুরা। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে চোখের সামনেই জ্বলন্ত ছাদ নিয়ে ধসে পড়ল ঘরটি।

রবিবার মাঝরাতে ভয়াবহ আগুন লাগে যাত্রাগাছির ঘুনি এলাকার মাঝেরপাড়া বস্তিতে। পুলিশ জানায়, পুড়ে গিয়েছে ৩৫টি ঘর। কেউ হতাহত হননি। দমকলের সাতটি ইঞ্জিন প্রায় আড়াই ঘণ্টায় আগুন নেভায়।

বস্তিরই একটি ঘরে আট বছরের ছেলে সইফুল ও দশ বছরের মেয়ে তাঞ্জিলকে নিয়ে থাকতেন সাফুরা বিবি। অগ্নিকাণ্ডের পরে পরনের পোশাকটুকু ছাড়া আর কিছুই বাঁচেনি তাঁর। অন্য বস্তিবাসীদের অবস্থাও প্রায় একই রকম। সাফুরার কথায়, ‘‘একটু দেরি হলে সবাই পুড়ে মরে যেতাম।’’

ইকো পার্কের পিছনে ওই বস্তির বাসিন্দাদের বেশিরভাগেরই জীবিকা প্লাস্টিক, কাগজ কুড়োনো। ফলে বস্তিতে প্লাস্টিক-সহ অন্যান্য দাহ্য পদার্থ ব্যপক হারেই মজুত ছিল। দমকল বিভাগ জানায়, প্লাস্টিক ও অন্য দাহ্য বস্তুর কারণে আগুন লাগার পরে তা সহজে ছড়িয়ে পড়ে। সোমবার সকালে মাঝেরপাড়ায় গিয়ে দেখা গেল ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ওই বস্তি।

বস্তিটির নাগরিকদের নাগরিকত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া পঞ্চায়েত প্রধান শিবু গায়েন বলেন, ‘‘বস্তিতে প্রচুর বাংলাদেশির বাস। যাঁরা এলাকাটিকে কার্যত জতুগৃহে পরিণত করেছেন। প্রশাসনকে জানিয়ে লাভ হয়নি।’’ বস্তিবাসীরা জানান, তাঁরা সেখানে কুড়ি-ত্রিশ বছর ধরে আছেন। বসবাসের কাগজও পুড়ে গিয়েছে। মাঝেরপাড়ার ওই বস্তিটি এতটাই অপ্রশস্ত জায়গায় যে সেখানে জল নিয়ে পৌঁছতে নাস্তানাবুদ হয় দমকল। আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে দেরি হয়। দূরে একটি খেলার মাঠে ইঞ্জিন দাঁড় করিয়ে জলের পাইপ বস্তিতে নিয়ে যেতে হয়। তার আগে বাসিন্দারাই নর্দমা থেকে জল তুলে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। তবে তাতে খুব একটা কাজ হয়নি।

Fire Majherpara
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy