Advertisement
E-Paper

অতীত থেকে না শিখেই ফের পুড়ল কারখানা

অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় আগের বারও চার দিন ধরে আগুন জ্বলেছিল যুগবেড়িয়ার বোদাই শিল্পতালুকের স্টিলের চেয়ার তৈরির কারখানায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৩১
লেলিহান: জ্বলছে সেই কারখানা। সোমবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ

লেলিহান: জ্বলছে সেই কারখানা। সোমবার। ছবি: সুদীপ ঘোষ

চার বছর আগের স্মৃতি ফের ‘জ্বলে’ উঠল নিউ ব্যারাকপুরে!

অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকায় আগের বারও চার দিন ধরে আগুন জ্বলেছিল যুগবেড়িয়ার বোদাই শিল্পতালুকের স্টিলের চেয়ার তৈরির কারখানায়। সে বারেও কারখানা চত্বরের যে বাড়িটিতে গুদাম ছিল, সেখানেই আগুন লেগেছিল। ঘটনার পরে নড়েচড়ে বসেছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতির তরফে ওই কারখানা-সহ অন্যান্য কারখানা-মালিকদের বৈঠকে ডাকা হলেও কেউ হাজির হননি। শিল্পতালুকের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা বা পদক্ষেপের পরিকল্পনাও যে সেখানেই থমকে গিয়েছিল, সোমবার ফের ওই চেয়ার কারখানার অগ্নিকাণ্ডে তারই প্রমাণ মিলল।

ব্যারাকপুর-২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের দাবি, ‘‘চার বছর আগে আগুন লাগার পরে চেয়ার কারখানায় এসে বারবার বলেছিলাম, অগ্নি-নির্বাপণের প্রাথমিক পরিকাঠামো রাখতে। তার পরে বৈঠক ডাকলেও কেউ না আসায় আর কিছু হয়নি।’’ চার বছর আগের স্মৃতি এখনও টাটকা ওই কারখানায় বারো বছর ধরে যুক্ত কর্মী গণেশ বসুর মনে। তিনি জানান, সে বারেও চার দিক ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল। কিন্তু কর্মী বেশি না থাকায় কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ঘটনার পরে মালিককে বলেছিলাম, ঠিকঠাক ভাবে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা রাখতে। না হলে কর্মীরা প্রাণে মারা যাব।’’

পুরনো অভিজ্ঞতা থেকে কোনও শিক্ষাই যে ওই কারখানার মালিক নেননি, এ দিনের ঘটনার পরে তারও প্রমাণ পেয়েছেন দমকলকর্মীরা। সেখানে হাতে গোনা যে কয়েকটি আগুন নেভানোর সিলিন্ডার রয়েছে, সেগুলির অধিকাংশই মেয়াদ-উত্তীর্ণ। কোনওটা আবার ঠিকমতো কাজই করে না। ওই কারখানায় কোনও জলাধার বা পাম্পের ব্যবস্থাও নেই। এ দিন কারখানা থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে এক প্রতিবেশী লোকজন নিয়ে এসে কিছু চেয়ার ও কয়েক জন কর্মীকে বাইরে বার করে আনেন। তবে মুহূর্তের মধ্যেই প্লাই, রাসায়নিক আঠা ও ফোমে মজুত কারখানাটি দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে।

শুধু ওই কারখানাই নয়। আশপাশে থাকা কারখানার শ্রমিকদের অভিযোগ, পুরো শিল্পতালুকটিই একটা জতুগৃহ। অন্য একটি কারখানার কর্মী সুভাষ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমাদের কারখানায় প্লাইউডের কাজ হয়। কিন্তু আগুন নেভানোর কোনও পরিকাঠামো নেই।’’ আর একটি কারখানার কর্মী বিভাস বি‌শ্বাসের অভিযোগ, ‘‘আগুন নেভানোর যেমন পরিকাঠামো নেই, তেমনই আমাদের কোনও নিরাপত্তাও নেই।’’

চার বছর আগের মতো এ বারেও অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছাড়া কারখানা চালানোর অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বর্তমান পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সোমা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘দু’-এক দিনের মধ্যে প্রতিটি কারখানারই সব কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হবে। প্রয়োজনে ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’’ সোমাদেবীর মতো কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও দফতরের ডিজি জগমোহন।

কিন্তু আতঙ্কিত কর্মী থেকে বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ‘এ বারেও শিক্ষা হবে কি?’

Fire Accident Steel Chair Factory Fire Extinguishing Facility
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy