হরেক রকমের বাজি। চকলেট বোমা, কালীপটকা, দোদমা, রকেট বোমা, শেল, শট। সবই নিষিদ্ধ। বাজেয়াপ্ত এই সব বাজির দাম প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা। সেগুলি নষ্ট করতে খরচ হল মাত্র ৫০ হাজার টাকা!
ফি বছর কালীপুজো ও দীপাবলিতে আট-ন’টন বাজি আটক করে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই বাজি কখনও ব্যবহার করতেন অফিসার ও কর্মীদের একাংশ, কখনও সেগুলি চোরাপথে বাজারে যেত। আবার ধাপার মাঠে ফেলে, জলে ভিজিয়ে বা মাটিতে পুঁতেও সেগুলি নষ্ট করত পুলিশ। কিন্তু এ বছর কালীপুজোয় রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে জানান, আটক বাজি নষ্ট করতে হবে পরিবেশ-বিধি মেনে। অর্থাৎ বাজি নষ্ট করতে গিয়ে যাতে দূষণ না ছড়ায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। কল্যাণবাবুর কথায়, ‘‘ধাপার মাঠে ডাঁই করলে, মাটিতে পুঁতে দিলে বা জলে ভিজিয়ে রাখলে নিষিদ্ধ বাজিতে থাকা গন্ধক ও ধাতব চূর্ণ বৃষ্টির জলের সঙ্গে মিশে চুঁইয়ে ভূগর্ভস্থ জলকে বিষিয়ে তুলতে পারে।’’
এ বছর বাজেয়াপ্ত হওয়া ৫ টন ২৮ কুইন্টাল বাজি বিভিন্ন থানা ও লালবাজারে গোয়েন্দা বিভাগের মালখানায় পড়ে ছিল। পর্ষদ সূত্রের খবর, ১১ ডিসেম্বর হলদিয়ার পূর্ব শ্রীকৃষ্ণপুরে ক্ষতিকারক বর্জ্য ফেলে নষ্ট করার জায়গায়, নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে ওই বাজি ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুরো কাজে খরচ পড়েছে ৫২ হাজার টাকা, যা মিটিয়েছে পর্ষদই। এর আগে ২০১১ সালে কলকাতা পুলিশের আটক করা প্রায় ৬ টন বাজি হলদিয়ার ওই জায়গায় ফেলে নষ্ট করা হয়েছিল।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নষ্ট করতে জন্য প্রথমে বাজি জলে ভেজানো হয়। তার পর সিমেন্ট-বালি-পাথরকুচির গোলায় বাজি মিশিয়ে তৈরি করা হয় কংক্রিটের স্ল্যাব। ওই সব স্ল্যাব বড় ড্রামে ভরে তার মুখ আটকে দেওয়া হয়। শেষে ড্রামগুলি রেখে দেওয়া হয় বর্জ্য ফেলার নির্দিষ্ট জমিতে রাখা খোপে। কল্যাণবাবু জানান, ওই জমিতে এমন আস্তরণ আছে, যাতে সেখানে ফেলা বর্জ্য ভূগর্ভস্থ জলস্তরকে দুষিত করতে পারবে না।
লালবাজার জানায়, আটক হওয়া ৯ টন বাজির মধ্যে হলদিয়ায় ফেলা হয়েছে পাঁচ টন। বাকি বাজি সাত-আটটি থানা নিজেদের মতো করে নষ্ট করেছে। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে, তারা স্পষ্ট জানায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy