E-Paper

সাইবার প্রতারণায় গ্রেফতার পাঁচ ব্যাঙ্ককর্মী

পুলিশকর্তা জানান, বিভিন্ন সাইবার এবং ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলায় আগেও বিভিন্ন ব্যাঙ্ককর্মীর বিরুদ্ধে প্রতারকদের হাতে গ্রাহকের তথ্য তুলে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৫ ০৫:৪০
ধৃতদের সঙ্গে যোগ মিলেছে জামতাড়া-সহ একাধিক প্রতারণা-চক্রেরও।

ধৃতদের সঙ্গে যোগ মিলেছে জামতাড়া-সহ একাধিক প্রতারণা-চক্রেরও। —প্রতীকী চিত্র।

সর্ষের মধ্যেই ভূত! প্রায় আড়াই কোটি টাকার সাইবার প্রতারণা মামলায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের পাঁচ আধিকারিককে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশের সাইবার অপরাধ শাখা। ধৃতদের সঙ্গে যোগ মিলেছে জামতাড়া-সহ একাধিক প্রতারণা-চক্রেরও।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে রয়েছে ওই ব্যাঙ্কের হাজারিবাগ শাখার কাস্টমার রিলেশন অফিসার যশবন্ত প্রসাদ, জামতাড়া শাখার কাস্টমার রিলেশন অফিসার শুভম কুমার, সারাইধেলা শাখার সেলস ম‍্যানেজার সৌরভকুমার সিংহ, মেটিয়াবুরুজ শাখার সেলস ম‍্যানেজার আসাদ রাজা এবং মেটিয়াবুরুজ শাখার কাস্টমার রিলেশন অফিসার ইয়াসির আরাফত। ধৃতদের মধ্যে আসাদ এবং ইয়াসিরকে শুক্রবার ধরা হয়েছে। বাকিদের চলতি সপ্তাহেই ধরে সাইবার অপরাধ শাখা।

এক পুলিশকর্তা জানান, বিভিন্ন সাইবার এবং ব্যাঙ্ক প্রতারণার মামলায় আগেও বিভিন্ন ব্যাঙ্ককর্মীর বিরুদ্ধে প্রতারকদের হাতে গ্রাহকের তথ্য তুলে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। কিন্তু এ বারই প্রথম ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের অফিসার থেকে কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা-চক্রের সরাসরি যোগ মিলেছে। ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়মিত প্রতারকদের হাতে তুলে দিচ্ছিল ধৃত অভিযুক্তেরা। সেই তথ্য ব্যবহার করেই গ্রাহকদের জীবন বিমা, আমানতের টোপ দিয়ে তাঁদের সঞ্চয় হাতিয়ে নিত জামতাড়া-চক্রের প্রতারকেরা। এর সঙ্গে আরও কয়েক জন জড়িত বলে জানান ওই পুলিশকর্তা। ধৃতদের থেকে একাধিক মোবাইল, ল্যাপটপ এবং ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের বিভিন্ন তথ্য উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, জুলাই মাসে ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের তরফে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছিল, ব্যাঙ্ক ম্যানেজার, কর্মী অথবা অফিসার বলে পরিচয় দিয়ে গ্রাহকদের হোয়াটস্যাপ কল, মেসেজ বা ফোন করে কেওয়াইসি অসম্পূর্ণ আছে জানিয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হত। এর সঙ্গে গ্রাহকদের মোটা অঙ্কের আমানত, জীবন বিমা বা অন্য বিমা পলিসির টোপ দিয়ে প্রায় ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকার প্রতারণা করে একটি চক্র। তদন্তে নেমে সাইবার অপরাধ শাখার তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই ঘটনার পিছনে রয়েছে ব্যাঙ্ককর্মীদের একাংশ। যারা গ্রাহকদের গোপন তথ্য প্রতারকদের হাতে জুগিয়েছে। তদন্তে জানা যায়, ধৃত যশবন্ত ৬৫.৩৯ লক্ষ টাকা প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত। তার বিরুদ্ধে এনসিআরপি পোর্টালে ৫২টি অভিযোগ রয়েছে। শুভম কুমার ১৪.৪৫ লক্ষ টাকার ১৭টি মামলায় অভিযুক্ত। ধৃত রাজা ও আরাফতের বিরুদ্ধে যথাক্রমে ওই পোর্টালে ১.১৯ কোটি এবং ৪৮.৭৭ লক্ষ টাকার জালিয়াতির অভিযোগ আছে।

তদন্তকারীদের দাবি, ধৃতেরা নিজেদের শাখা ছাড়াও ব্যাঙ্কের অন্যান্য শাখার গ্রাহকদের তথ্য সংগ্রহ করত। টাকার বিনিময়ে প্রতারকদের সেই গোপন তথ্য দিত তারা। আর এক তদন্তকারী জানান, গ্রাহকদের গোপন তথ‍্য তারা বিক্রি করত জামতাড়া গ‍্যাংয়ের কাছেও। ওই পাঁচ জন ছাড়া আরও কেউ কেউ এতে জড়িত থাকতে পারে বলে জানান ওই তদন্তকারী।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cyber Crime police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy