E-Paper

অব্যবহৃত অ্যাকাউন্ট মোটা টাকায় কিনে জালিয়াতি, ধৃত পাঁচ

আন্তঃরাজ্য সাইবার প্রতারণা চক্রের সন্ধান পেল গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ। লালবাজার জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওই চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম মহম্মদ খুরশিদ আলম ওরফে সাব্বির, জাহির আহমেদ ওরফে রিঙ্কু, মহম্মদ বাসারত, গোলাম আনসারি এবং মহম্মদ শাহদাত আনসারি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৫ ০৭:২৩
শুক্রবার গভীর রাতে গার্ডেনরিচ থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচ জনকে ধরে পুলিশ।

শুক্রবার গভীর রাতে গার্ডেনরিচ থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচ জনকে ধরে পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।

এলাকার কারও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকলে সেটি টাকা দিয়ে ‘কিনে’ নিচ্ছে কয়েক জন যুবক, ‘সোর্স’ মারফত এমন খবর এসেছিল পুলিশের কাছে। তাতে সন্দেহ হয় অফিসারদের। সেই সন্দেহের বশে ওই যুবকদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই একটি আন্তঃরাজ্য সাইবার প্রতারণা চক্রের সন্ধান পেল গার্ডেনরিচ থানার পুলিশ। লালবাজার জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ওই চক্রের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম মহম্মদ খুরশিদ আলম ওরফে সাব্বির, জাহির আহমেদ ওরফে রিঙ্কু, মহম্মদ বাসারত, গোলাম আনসারি এবং মহম্মদ শাহদাত আনসারি। এদের মধ্যে সাব্বির এবং জাহির গার্ডেনরিচের বাসিন্দা। বাকি তিন জনের বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। গোলাম এবং শাহদাত সম্পর্কে দুই ভাই।

শুক্রবার গভীর রাতে গার্ডেনরিচ থানা এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে পাঁচ জনকে ধরে পুলিশ। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ৩৩টি এটিএম কার্ড, ন’টি মোবাইল, নগদ দু’লক্ষ টাকা, পাঁচটি ভুয়ো সিম কার্ড, একাধিক ব্যাঙ্কের চেক বই ও নথিপত্র।

তদন্তকারীরা জানান, শুক্রবার বিকেলে তাঁদের কাছে খবর আসে, গার্ডেনরিচের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কেনার চেষ্টা করছে দুই যুবক। সেই মতো তারাতলা রোডের এফসিআই গুদামের কাছ থেকে সাব্বির এবং রিঙ্কুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু এটিএম কার্ড এবং সিম কার্ড উদ্ধার হয়। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, সাব্বির ও রিঙ্কুর কাজ ছিল কোনও ব্যক্তিকে মোটা টাকার প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কিনে সেটি প্রতারণার কাজে ব্যবহার করা। অর্থাৎ, কাগজে-কলমে অ্যাকাউন্টটি থাকবে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের। কিন্তু, সেখানে যাবতীয় আর্থিক লেনদেন পরিচালনা করবে প্রতারণা চক্রের চাঁইরা।

পুলিশের দাবি, জেরায় সাব্বির ও রিঙ্কু জানায়, এই কাজ তাদের দিয়েছিল বাসারত, গোলাম এবং শাহদাত। ওই তিন জনের হাতে এটিএম কার্ড-সহ বিভিন্ন নথি তুলে দেওয়ার কথা ছিল সাব্বির ও রিঙ্কুর। এর পরেই তদন্তকারীরা বাসারত, গোলাম ও শাহদাতের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বলেন বিভিন্ন নথি নিয়ে যাওয়ার জন্য। সেই মতো তারা তারাতলা রোডে এলে হাতেনাতে ধরা হয়। অভিযুক্তদের সঙ্গে থাকা তিনটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় এটিএম কার্ড, সিম কার্ড-সহ বহু জিনিস।

পুলিশ জানিয়েছে, সাইবার প্রতারকেরা নিত্যনতুন পন্থা অবলম্বন করে। প্রতারিতের টাকা সরানোর জন্য তাদের বিভিন্ন বেনামি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের দরকার হয়। পুলিশের দাবি, তাই কলকাতা থেকে ওই চক্রের পান্ডারা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি সংগ্রহ করছিল। এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান, ধৃতদের জেরা করে চক্রের বাকিদের সন্ধান করার পাশাপাশি তাদের অপরাধের ধরন জানার চেষ্টা হবে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে ধৃতেরা বিভিন্ন রকম উত্তর দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। উদ্ধার হওয়া অ্যাকাউন্টগুলিতে কত টাকার লেনদেন হয়েছে, তা জানতে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলিতে নোটিস পাঠিয়েছে পুলিশ।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cyber fraud Garden Reach

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy