E-Paper

আজ একুশের নিরাপত্তায় পথে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার পুলিশ

সভাস্থল ঘুরে পুলিশকর্তাদের নির্দেশ দিতে দেখা গেল কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মাকে। মঞ্চ ঘিরে দফায় দফায় চলল তল্লাশি। বিকেলে সভামঞ্চে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৫ ০৬:১৬
কলকাতা পুলিশের ব্যারিকেডেও লাগানো হয়েছে তৃণমূলের দলীয় পতাকা। রবিবার, রেড রোডে।

কলকাতা পুলিশের ব্যারিকেডেও লাগানো হয়েছে তৃণমূলের দলীয় পতাকা। রবিবার, রেড রোডে। ছবি: সুমন বল্লভ।

আজ, সোমবার রাজ্যের শাসকদলের একুশের সমাবেশে ত্রিস্তরীয় মঞ্চের জন্য নিরাপত্তার কড়া বন্দোবস্ত রাখছে কলকাতা পুলিশ। সেই ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতে সমাবেশের আগের দিন, রবিবার দিনভর ধর্মতলায় সভাস্থলে আনাগোনা লেগে থাকল পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের। সভাস্থল ঘুরে পুলিশকর্তাদের নির্দেশ দিতে দেখা গেল কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মাকে। মঞ্চ ঘিরে দফায় দফায় চলল তল্লাশি। বিকেলে সভামঞ্চে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেল থেকে ধর্মতলা চত্বরে উৎসুক তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা ভিড় জমালেও প্রায় কাউকেই ধারেকাছে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।

আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার এক বছর আগে শেষ ২১ জুলাইয়ের এই সভায় বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভায় শক্তি প্রদর্শনে তাই কোনও খামতি রাখছে না রাজ্যের শাসকদল। রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ধর্মতলায় মুখ্যমন্ত্রীর এই সমাবেশে কয়েক লক্ষের জমায়েত হবে বলে আশা করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এক দিন আগে থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা শহরে আসতে শুরু করেছেন। সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তায় ঝুঁকি নিচ্ছে না কলকাতা পুলিশ। ধর্মতলার পাশাপাশি গোটা শহরের নিরাপত্তার দেখাশোনায় অতিরিক্ত ৫০০০ পুলিশকর্মী নামাচ্ছে লালবাজার। রাস্তায় থাকছেন কয়েক হাজার ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী।

ধর্মতলার সভামঞ্চ ঘিরে নিরাপত্তার বিশেষ বন্দোবস্ত করেছে লালবাজার। জানা গিয়েছে, মূল মঞ্চের সামনের অংশকে ১৪টি জ়োনে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি জ়োনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন এক জন করে সহকারী নগরপাল পদমর্যাদার পুলিশকর্তা। তাঁর অধীনে থাকবেন একাধিক ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিক। মূল মঞ্চের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার বন্দোবস্ত থাকছে। মঞ্চ ঘিরে সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীদের সঙ্গে থাকবে র‌্যাফ ও ‘উইনার্স’ বাহিনী। মূল মঞ্চের কাছেপিঠে মোতায়েন থাকবেন কলকাতা পুলিশের কমান্ডোরা। আশপাশের একাধিক বহুতলের উপর থেকে নজরদারি চালানো হবে। এ ছাড়া, সভামঞ্চের সঙ্গে গোটা ধর্মতলা চত্বরে শতাধিক সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে। সেগুলির মাধ্যমেও সভায় নজরদারি চালানো হবে। দু’টি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমও করা হয়েছে লালবাজারের তরফে। লালবাজারের মূল কন্ট্রোল রুম থেকেও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিচালনা করা হবে। এক জন যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার পুলিশকর্তা ওই নজরদারির দায়িত্বে থাকবেন।

এ দিকে, একুশের সভা ঘিরে রবিবার থেকেই শহরে আসতে শুরু করেছেন জেলার তৃণমূল নেতৃবৃন্দ। তাঁদের অনেকেই এ দিন ধর্মতলা চত্বরে এসেছেন। দূরের জেলা থেকে কর্মী ও সমর্থকেরাও এ দিন শহরে পৌঁছে গিয়েছেন। জেলা ভাগ করে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের জন্য কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, আলিপুরের উত্তীর্ণ প্রেক্ষাগৃহ এবং ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সকালের দিকে এই কেন্দ্রগুলিতে সে ভাবে ভিড় না থাকলেও দুপুরের পর থেকে কর্মী-সমর্থকেরা এখানে আসতে শুরু করেন।

আলিপুরের উত্তীর্ণ সভাগৃহে মূলত পুরুলিয়া থেকে যে কর্মী-সমর্থকেরা আসছেন, তাঁদের রাখা হয়েছে। রাতের দিকে মুর্শিদাবাদ থেকে আসা সমর্থকদের জন্যও ব্যবস্থা করা হয়। সেখানকার দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, শনিবার রাত থেকেই কর্মীরা আসছেন। প্রায় ১৫ হাজার কর্মীর থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত রয়েছে সেখানে। ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে বাঁকুড়া, বীরভূমের কর্মী-সমর্থকদের।

কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে রাখা হয়েছে মালদহের কর্মী ও সমর্থকদের। এখানে তাঁদের খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি সঙ্গে আসা শিশুদের জন্য দুধের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বেলায় গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা গেল, বেশ ফাঁকা। অধিকাংশই শহর ঘুরতে বেরিয়েছেন বলে জানালেন ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের একাংশ। মালদহের রতুয়া থেকে সকালেই এসেছেন সিদ্ধার্থ পরামানিক। বিশ্রাম নেওয়ার ফাঁকে বললেন, ‘‘এ বছর হাই কোর্টের কী সব কড়া নির্দেশ আছে শুনছি। তাই ভোরে এখান থেকে বেরোতে বলে দেওয়া হয়েছে। ধর্মতলায় গিয়ে যা করার করব।’’

কলকাতা পুলিশের ব্যারিকেডেও লাগানো হয়েছে তৃণমূলের দলীয় পতাকা। রবিবার, রেড রোডে।

পথের দিশা

গাড়ি নিয়ন্ত্রণ: আজ ভোর ৩টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত হবে পণ্যবাহী গাড়ি

ব্যতিক্রম: ছাড় থাকছে জরুরি পরিষেবার গাড়ির ক্ষেত্রে

গাড়ি বন্ধ: চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের একাংশ, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট, লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোডে

মিছিলের ভিড় বাড়লে বন্ধ করা হবে: কলেজ স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোড, এ পি সি রোড, এ জে সি বসু রোড, নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, মহাত্মা গান্ধী রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, ব্রেবোর্ন রোড, গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, আশুতোষ মুখার্জি রোড

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

21 July TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy