কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের সহযোগিতায় দেশের ১০০টি জেলার প্রতিটিতে একটি করে ‘ফুড স্ট্রিট’ তৈরির প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। প্রতি ফুড স্ট্রিট পিছু কেন্দ্র এক কোটি টাকা করে বরাদ্দের কথাও বলেছিল। অন্যান্য রাজ্যের অধিকাংশ জায়গায় আধুনিক ফুড স্ট্রিট তৈরি শেষ হয়ে গেলেও কলকাতায় সেই কাজ শুরুই হয়নি। এই শহরের রাসেল স্ট্রিট, পাটুলি এবং টালায় ফুড স্ট্রিট হওয়ার কথা। এই তিনটি রাস্তায় সর্বক্ষণের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত খাবার থাকবে। প্রতি রাজ্যে ফুড স্ট্রিট তৈরির কাজ শেষ করার কথা স্থানীয় পুরসভার। কিন্তু কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর এই কাজ কবে শেষ করবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
কেন ফুড স্ট্রিট চালু করতে পারল না কলকাতা? পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের হকার সমীক্ষার কাজ শেষ হলেও তার তালিকা বেরোয়নি। এই প্রসঙ্গে হকার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক শক্তিমান ঘোষ সোমবার বলেন, ‘‘ছ’মাস আগে হকার সমীক্ষা শেষ হয়েছে। কিন্তু হকারদের তালিকা পুরসভা প্রকাশ করেনি। ফলে তাঁদের ভেন্ডিং সার্টিফিকেট দেওয়াও থমকে আছে।’’ শক্তিমান জানান, হকারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ না করায় ফুড স্ট্রিট জ়োনে হকারদের বসানোর প্রক্রিয়া বাধা পাচ্ছে। এক পুর আধিকারিকের দাবি, ‘‘শীঘ্রই হকারদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।’’
অতীতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা কলকাতা পুর ভবনে এসে একাধিক বার ফুড স্ট্রিট নিয়ে বৈঠক করেছেন। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক এ দিন বলেন, ‘‘কলকাতায় ফুড স্ট্রিট তৈরির সময়সীমা আগেই পেরিয়ে গিয়েছে। এই কাজ দেখাশোনার কথা কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের। কেন কাজ শেষ হল না, তা নিয়ে পুরসভাকে একাধিক বার চিঠি লিখেও উত্তর পাইনি।’’ বিষয়টি নিয়ে ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ পুরসভার স্বাস্থ্য, জল সরবরাহ, নিকাশি, জঞ্জাল অপসারণ বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। অতীন দাবি করেন, ‘‘রাসেল স্ট্রিটে ফুড স্ট্রিট শীঘ্রই চালু করব। বাকিগুলিও তার পরে শুরু হবে।’’ কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে ফুড স্ট্রিটগুলির স্ট্যান্ডার্ড ব্র্যান্ডিং করা হবে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (এফএসএসএআই) নির্দেশিকা অনুযায়ী।
ফুড স্ট্রিট তৈরিতে খাবারের মান ও সংশ্লিষ্ট এলাকার পরিবেশকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে স্টলগুলি। সেখানে হাত ধোয়ার সুবিধা, পরিবেশবান্ধব শৌচাগার থাকবে। পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ করবে পুরসভা। কেন্দ্রের তরফে পুরসভাকে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যকর খাবার ফুড স্ট্রিটে সহজলভ্য করতে হবে। যে কোনও দেশের ‘স্ট্রিট ফুড’, সেই দেশের পর্যটনের আকর্ষণ। এ দেশেও সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ফলে ফুড স্ট্রিট তৈরি হলে স্বল্প মূল্যে স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন মিলবে, কর্মসংস্থানও বাড়বে বলে রাজ্যগুলিকে আশ্বাস দিয়েছিল কেন্দ্র।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)