ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট হবে কলকাতা পুলিশ এলাকায়। সব কিছু ঠিকঠাক চললে ইতিহাসে এটিই হবে লালবাজারের তরফে প্রথম সরাসরি পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা। কারণ, জেলায় পঞ্চায়েত ভোটের জন্য বাহিনী পাঠালেও এর আগে নিজের এলাকায় পঞ্চায়েত ভোট করায়নি কলকাতা পুলিশ।
১৮৫৬ সালে কলকাতা পুলিশ গঠন হওয়ার পরে পুরসভা থেকে শুরু করে বিধানসভা, লোকসভা কিংবা সাধারণ ক্লাবের ভোট লালবাজারের পাহারাতে হলেও সরাসরি নিজের এলাকায় কোনও পঞ্চায়েত ভোট এত দিন হয়নি। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার অধীনে থাকা কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা কলকাতা পুলিশের অধীনে চলে আসায় কিছুটা পঞ্চায়েত এলাকাও এখন কলকাতা পুলিশের অধীনে। ফলে আগামী বছরের পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করবে লালবাজার। পঞ্চায়েত ভোট কবে হবে, তার দিন নির্দিষ্ট না হলে স্থানীয় ভাবে কলকাতা পুলিশ ওই ভোটের জন্য নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশকে এখন শহরের পাশাপাশি গ্রামকেও শাসন করতে হচ্ছে। কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় পঞ্চায়েত ভোট করাতে তাই কোনও বেগ পেতে হবে না লালবাজারকে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানার পুরোটাই পঞ্চায়েতের অধীন। যা মাস কয়েক আগে কলকাতা পুলিশের অধীনে আসে। মোট চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে ওই থানা এলাকায়। ভাঙর এবং ক্যানিং (পূর্ব), দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের অধীন বামনঘাটা, বেওতা ১ এবং ২, তারদা— এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে কলকাতা পুলিশের সবচেয়ে নতুন থানার অধীন। যার ৩৮টি ভোট গ্রহণকেন্দ্রের ৬৫টি বুথে ওই পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা।
লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের কাজ হল মূলত মহানগর এলাকায়। এত দিন কলকাতা পুরসভার এলাকা এবং কলকাতা পুলিশের এলাকা একই ছিল।
কখনও প্রয়োজনে কলকাতা পুলিশের কর্মীরা জেলায় গিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, কিন্তু নিজেদের এলাকায় গোটা পঞ্চায়েত ভোট সামলানোর অভিজ্ঞতা ছিল না তাঁদের।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছেন, কলকাতা পুলিশের কাজের ধারার সঙ্গে রাজ্য পুলিশের কাজের ধারায় অনেকটাই ফারাক রয়েছে। পঞ্চায়েত ভোট করাতে অভ্যস্ত নয় কলকাতা পুলিশ। তাই নির্বিঘ্নে ভোট করার জন্য এখন থেকেই নিজেদের প্রস্তুতি শুরু করেছে লালবাজার। শহরের বুকে রাস্তাঘাট ভাল হওয়ায় কলকাতা পুলিশের কর্মীরা সাধারণত দ্রুত যে কোনও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছে যান। কলকাতা পুলিশের অফিসারেরা জানিয়েছেন, মহানগরে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য পুলিশকর্মীরা যেমন থাকেন, তেমনই রাস্তায় থাকে পুলিশের টহলদারি গাড়ি। এ ছাড়া লালবাজারের শীর্ষ কর্তাদের অধীনে বড়সড় পুলিশ বাহিনী অনবরত টহল দিতে থাকে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের আশপাশে।
লালবাজার জানিয়েছে, প্রায় তিরিশ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল নিয়ে গঠিত কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার পঞ্চায়েত ভোটে সেই ভাবেই যাতে করা যায়, তার পরিকল্পনা করা হবে। ওই সময়ে মহানগরে কোনও ভোট না থাকায় নির্বিঘ্নে ওই ভোট করার জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশকর্মী পেতে অসুবিধে হবে না। তাই শহরের ভোট করাতে যারা অভ্যস্ত, তাঁরা গ্রামে গিয়ে সমান তালে ভোট করাতে পারবেন বলেই লালবাজারের একাধিক কর্তা দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy