Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Fire

আগুনে ভস্মীভূত তারাতলার চারটি গুদাম

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২ নম্বর তারাতলা রোডের ওই গুদামগুলি ‘ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া’-র (এফসিআই)। সেগুলি বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে ভাড়ায় দেওয়া ছিল।

ভস্মীভূত: আগুন নেভাতে ব্যস্ত দমকল। বুধবার, তারাতলায়।

ভস্মীভূত: আগুন নেভাতে ব্যস্ত দমকল। বুধবার, তারাতলায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২১ ০৬:৩০
Share: Save:

পুড়ে গেল তারাতলা রোডের চারটি গুদাম। বুধবার সকালের এই ঘটনায় দমকলের আটটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও গুদামে থাকা কয়েক লক্ষ টাকার বৈদ্যুতিন সামগ্রী পুড়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। ওই গুদামগুলি যাঁরা ভাড়ায় নিয়েছিলেন, তাঁদের ডেকে পাঠিয়ে সেখানে অগ্নি-সতর্কতা ব্যবস্থা কী কী ছিল, তা জানতে চাওয়া হয়েছে পশ্চিম বন্দর থানার তরফে। ঘটনাস্থল ওই থানারই অন্তর্গত।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ২ নম্বর তারাতলা রোডের ওই গুদামগুলি ‘ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া’-র (এফসিআই)। সেগুলি বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে ভাড়ায় দেওয়া ছিল। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ওই গুদামের একটিতে আগুন জ্বলতে দেখেন স্থানীয়েরা। দ্রুত খবর যায় থানায়। প্রথমে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন যায় কাছের আলিফনগর দমকল কেন্দ্র থেকে। তবে জোরালো হাওয়া থাকায় আগুন দ্রুত ছড়াচ্ছে দেখে অন্যান্য দমকল কেন্দ্র থেকে আরও ইঞ্জিন ডেকে পাঠানো হয়। এর মধ্যেই একটি গুদামের আগুন পাশের দু’টি গুদামেও ছড়িয়ে পড়ে। আগুন ছড়ায় ওই গুদাম সংলগ্ন একটি লেবার কমিটির অফিসেও। দমকলের অগ্নি-নির্বাপণের কাজ চলাকালীন আগুন পাশে আরও একটি গুদামে ছড়িয়ে যায়। গুদাম এলাকায় সে ভাবে জলের জোগান না থাকায় দমকল পৌঁছনোর আগে স্থানীয়েরা কিছুই করতে পারেননি বলে জানা গিয়েছে।

প্রায় চার ঘণ্টা লড়াইয়ের শেষে আগুন অনেকটাই আয়েত্তে আনা যায় বলে জানান ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক দমকলকর্মী। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম যে গুদামে আগুন ধরে, সেটিতে টর্চ, ব্যাটারি-সহ নানা বৈদ্যুতিন সামগ্রী ছিল। পরের যে দু’টি গুদামে আগুন ধরে, সেগুলিতে গাড়ির যন্ত্রাংশ রাখা হত। বৈদ্যুতিন সামগ্রী থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তার সঙ্গে হাওয়াও আগুন ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে।’’ তবে কী ভাবে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটল, তা দমকল বা পুলিশের তরফে স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পশ্চিম বন্দর থানার এক পুলিশকর্মী শুধু বলেন, ‘‘ফরেন্সিক বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন। তার পরেই আসল কারণ জানা যাবে। তবে প্রাথমিক ভাবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন ধরেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।’’

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পোড়া গুদামেই ঝুঁকে পড়ে কিছু খুঁজছেন মহম্মদ আখতার নামে এক ব্যক্তি। নিজেকে ওই গুদামের নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আখতার বলেন, ‘‘১৬ এপ্রিল আমার ভাইয়ের বিয়ে। বৃহস্পতিবারই উত্তরপ্রদেশের গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ার কথা রয়েছে আমার। বিয়ের জন্য কিছু টাকা তুলে গুদামের আলমারিতে রেখেছিলাম। সেটাও পুড়ে গিয়েছে।’’ মুখের কালিঝুলি মুছে আর এক যুবকের দাবি, ‘‘চলে যাব বলে মঙ্গলবারই বেতন নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। সেটাও পুড়ে শেষ।’’ পাপ্পু সিওয়ান নামে যে ব্যক্তির কাছে আখতার কাজ করতেন, তিনি থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘‘ওঁর ভাইয়ের বিয়ের টাকা আমি দেব। সকলেই যে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন, সেটাই বড় কথা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Taratala Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE