E-Paper

কিশোরীর মৃত্যুতে বন্ধুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের পরিবারের

মৃতার পরিবার সূত্রের খবর, সে হাওড়ার সালকিয়ার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। কালীপুজো উপলক্ষে বাড়ির সামনেই প্রদীপ, আলোর দোকান দিয়েছিল মেয়েটি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:১৩

—প্রতীকী চিত্র।

রাতের শহরে মোটরবাইকে চেপে বেরোনোর পরে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৫ মিনিট নাগাদ ওই দুর্ঘটনার পরে বাইক-আরোহী, ১৭ বছরের এক কিশোরীকে জখম অবস্থায় এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। জখম বাইকচালককে চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, বাইকচালকের দাবি, দুর্ঘটনার কারণেই জখম হয় রিয়া সোনকার নামেওই কিশোরী। তবে, বড়বাজার থানা এলাকার স্ট্র্যান্ড রোডের বাসিন্দা ওই কিশোরীর বাড়ির লোকের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে খুন করেছে ওই তরুণ। হেস্টিংস থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন মৃতার পরিবারের সদস্যেরা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত তরুণকে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম অঙ্কিত মিশ্র। ১৮ বছরের অঙ্কিতের বাড়ি হাওড়ার জি টি রোডে।

লালবাজার জানিয়েছে, ওই রাতে অঙ্কিত এবং রিয়া বাইকে করে ভবানীপুরের একটি ধাবায় যাচ্ছিলেন। রিয়া বসে ছিল বাইকের পিছনে। হেলমেট ছিল না কারও মাথায়। অন্য একটি বাইকে ছিলেন তাঁদের বন্ধুরা। হেস্টিংস থানার হসপিটাল রোডে অঙ্কিতদের বাইকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। জখম অঙ্কিত এবং রিয়াকে বন্ধুরাই এসএসকেএমে নিয়ে যান।

মৃতার পরিবার সূত্রের খবর, সে হাওড়ার সালকিয়ার একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। কালীপুজো উপলক্ষে বাড়ির সামনেই প্রদীপ, আলোর দোকান দিয়েছিল মেয়েটি। শুক্রবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, শোকে ভেঙে পড়েছেন রিয়ার বাবা-মা। রয়েছেন প্রতিবেশীরাও। কাঁদতে কাঁদতে কিশোরীর বাবা তারক সোনকার বলেন, ‘‘অঙ্কিত আমার মেয়েকে খুন করেছে। আমরা বিচার চাই।’’ মৃতার মাসি রীতা সোনকারের দাবি, ‘‘দু’জনের মধ্যে একটা সম্পর্ক ছিল। আট-ন’মাস আগে দু’জনের আলাপ হয়েছিল। বারণ করলেও মেয়ে শুনত না। প্রায়ই বেড়াতে বেরোত। ওই রাতেও অঙ্কিত এসে আমাদের মেয়েকে ডেকে নিয়ে যায়।’’ রিয়ার বাড়ির লোকেদের আরও দাবি, অঙ্কিতের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রয়েছে। তিনি জেলে ছিলেন। গত শনিবার জামিন পেয়েছেন। তার পরেই এই কাণ্ড। হেস্টিংস থানার উচ্চপদস্থ এক কর্তা জানান,তদন্তে সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, দুর্ঘটনার জেরেই এই মৃত্যু। তবে নাবালিকার মৃত্যুরআসল কারণ জানতে দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিয়া ও অঙ্কিতের বন্ধুদেরও খোঁজ করছে পুলিশ।

শুক্রবার ধৃত অঙ্কিতকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়‌েছে কলকাতার চিফজুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট। আদালত সূত্রের খবর, ধৃতের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত ভাবে মৃত্যু ঘটানো, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হবে।

এ দিন রিয়ার বাবা বলেন, ‘‘রাতে খাওয়ার পরে আমি ঘুমোতে যাই। এর পরে অঙ্কিতমেয়েকে ডেকে নিয়ে যায়। রাত পৌনে ১টা নাগাদ অঙ্কিত মেয়ের মোবাইল থেকে আমাকে ফোন করে বলে, মেয়ে মারা গিয়েছে। এসএসকেএমেআছে।’’ রিয়ার মা সীতা দেবী সোনকার বলেন, ‘‘আমি বাড়িতে ছিলাম না। রাতে ফিরে দেখি, মেয়ে নেই। ফোনও ব্যস্ত ছিল। তার পরে ওর মৃত্যুর খবর এল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

police investigation SSKM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy