Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Fraud

Hacking racket: অ্যাপ ডাউনলোড থেকে মোটা অঙ্কের ছাড়, জালিয়াতির নয়া কৌশল শহরে

শুধু এমন মেসেজই নয়, টাকা হাতাতে প্রতিনিয়ত নতুন পন্থা অবলম্বন করছে সাইবার জালিয়াতেরা। তারা ব্যবহার করছে সোশ্যাল মিডিয়াকেও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৪৫
Share: Save:

বিল না মেটানোয় বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বলে ভরদুপুরে মোবাইলে মেসেজ পেয়েছিলেন গল্ফ গ্রিনের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। মেসেজ দেখে ছেলের উপরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন তিনি। টাকা দেওয়া সত্ত্বেও কেন ছেলে বিদ্যুতের বিল মেটাননি, তা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা শুরু হয়ে যায় বাবা-ছেলের মধ্যে। ছেলে যদিও বাবার দাবি মানতে নারাজ। অগত্যা মেসেজের শেষে দেওয়া একটি নম্বরে ওই ব্যক্তি ফোন করতে তাঁকে বলা হল, তাঁর মোবাইলে একটি লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। তাতে ক্লিক করে একটি অ্যাপ ইনস্টল করতে হবে। ছেলের সন্দেহ হওয়ায় তিনি ফোন কেটে দিয়ে ছুটলেন বিদ্যুৎ সংস্থার অফিসে। সেখানে গোটা ঘটনা জানাতে এক আধিকারিক ওই যুবককে বললেন, বিদ্যুৎ সংস্থার অফিস থেকে এমন কোনও মেসেজই পাঠানো হয়নি! তিনি আসলে সাইবার প্রতারকদের খপ্পরে পড়েছেন।

কলকাতা পুলিশ জানাচ্ছে, ইদানীং শহরে এমন মেসেজ পাওয়া ভুক্তভোগীর সংখ্যা কম নয়। অনেকেই এই ধরনের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হয়েছেন বলেও খবর। কয়েক জন আবার এই জাতীয় মেসেজে ক্লিক করে টাকাও খুইয়েছেন। পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু এমন মেসেজই নয়, টাকা হাতাতে প্রতিনিয়ত নতুন পন্থা অবলম্বন করছে সাইবার জালিয়াতেরা। তারা ব্যবহার করছে সোশ্যাল মিডিয়াকেও। জানা গিয়েছে, কারও পরিচিতের ছবি দিয়ে প্রথমে তাঁকে বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠানো হচ্ছে। এর পরে উপহার পাঠানোর নামে অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে মোবাইলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছে জালিয়াতেরা।

পুলিশ সূত্রের খবর, ইন্টারনেটে বিভিন্ন হোটেলের ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেও একাধিক ব্যক্তি সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় দীর্ঘ দু’বছর পরে শহরবাসীর একটা বড় অংশ এখন বেড়াতে যাওয়ার জন্য উন্মুখ। আর এটাকেই নিশানা করছে জালিয়াতেরা। বিভিন্ন হোটেলের ওয়েবসাইট হ্যাক করে সেখানে নিজেদের ফোন নম্বর বসিয়ে দিচ্ছে তারা। সেই নম্বর থেকে ফোন করে সংশ্লিষ্ট পর্যটককে জানানো হচ্ছে, হোটেল-ভাড়ায় মোটা অঙ্কের ছাড় দেওয়া হবে। বিশ্বাস অর্জনে প্রতারকেরা এ-ও বলছে, হোটেলের ওয়েবসাইটে গিয়ে সেই ফোন নম্বর মিলিয়ে দেখে নেওয়া যেতে পারে। সেই ফাঁদে পা দিয়ে অনেকে টাকা খোয়ানোর অভিযোগ করছেন। উল্টোডাঙার বাসিন্দা এক ব্যক্তি সম্প্রতি এ ভাবেই কয়েক হাজার টাকা খুইয়েছেন বলে অভিযোগ।

সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত জানাচ্ছেন, আগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মোবাইলে পাঠানো ওটিপি জেনে নিয়ে প্রতারণা করা হত। কিন্তু ইদানীং জালিয়াতেরা লিঙ্কে ক্লিক করিয়ে মোবাইলের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘অপরাধী একাধিক অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে মোবাইলের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে। কোনও ওটিপি বা ব্যাঙ্কের মেসেজ আসলে তা-ও মুছে দিচ্ছে তারা। ফলে গ্রাহক যে প্রতারিত হয়েছেন, সেটা বুঝতেই অনেক সময় চলে যাচ্ছে।’’

যদিও এ প্রসঙ্গে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশের তরফে নিয়মিত প্রচার করা হচ্ছে। কেউ যাতে ব্যক্তিগত তথ্য অপরিচিত কাউকে না দেন, তার জন্যও বলা হচ্ছে। কিন্তু তার পরেও সাইবার অপরাধ ঘটছে। অভিযোগ পেলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fraud malicious navigation apps
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE