Advertisement
২৩ মার্চ ২০২৩

কিশোরীকে ‘গণধর্ষণে’ পাকড়াও ৩

সম্প্রতি সে শারীরিক ভাবে অসুস্থ বোধ করায় তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরে কিশোরীর মা জানতে পারেন, মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। তখন মেয়েকে চেপে ধরতে সে গোটা বৃত্তান্ত মাকে জানায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৮ ০২:৫৫
Share: Save:

গণধর্ষণের শিকার হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বছর চোদ্দোর এক কিশোরী। পুলিশ জানিয়েছে, নাদিয়াল থানা এলাকার ওই ঘটনায় রবিবার রাতে তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম মহম্মদ শাকিল (৫৫), মহম্মদ জসিমউদ্দিন ওরফে ভিকি (১৯) এবং শুভ সর্দার (১৮)। তিন জনেরই বাড়ি নাদিয়ালে। এদের মধ্যে শাকিল ওই কিশোরীর পরিচিত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত চার-পাঁচ মাস আগে। ওই কিশোরী স্থানীয় একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া। তার বাবা নেই। মায়ের সঙ্গে সে একাই থাকে। মা পরিচারিকার কাজ করায় স্কুলের সময়টুকু বাদ দিয়ে সে একাই ঘরে থাকত। অভিযোগ, তারই সুযোগ নিয়েছিল পড়শি শাকিল। সে দর্জির কাজ করে।

পুলিশের কাছে দায়ের হওয়া অভিযোগে ওই নাবালিকা জানিয়েছে, মহম্মদ শাকিল তাকে ডেকে নিয়ে যায় একটি বাড়িতে। প্রথম দিন সেখানে ওই প্রৌঢ় তাকে ধর্ষণ করে এবং ঘটনার কথা কাউকে বলতে বারণ

করে দেয়। ওই কিশোরীকে রীতিমতো ভয় দেখানো হয়, যাতে সে কোনও মতেই মুখ না খোলে। অভিযোগ, সেখানেই ওই ব্যক্তি থেমে থাকেনি। পরে আবার এক দিন হুমকি দিয়ে, ভয় দেখিয়ে সে ডেকে পাঠায় ওই কিশোরীকে। সে দিন শাকিলের সঙ্গে ওই বাড়িতে ছিল জসিমউদ্দিন ওরফে ভিকি। অভিযোগ, দ্বিতীয়

Advertisement

দিন প্রথমে ভিকি এবং পরে শাকিল ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরে তৃতীয় আর এক দিন শাকিল সঙ্গে নিয়ে আসে শুভ সর্দারকে। সে দিন তিন জন মিলে ওই কিশোরীকে পরপর ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এর পরেও ওই কিশোরীর উপরে বেশ কয়েক বার অত্যাচার হয়েছে বলে তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে। কিন্তু প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখানোয় কিশোরী বাড়িতে কিছু বলেনি।

সম্প্রতি সে শারীরিক ভাবে অসুস্থ বোধ করায় তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরে কিশোরীর মা জানতে পারেন, মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। তখন মেয়েকে চেপে ধরতে সে গোটা বৃত্তান্ত মাকে জানায়।

এর পরেই রবিবার সকালে মেয়েকে নিয়ে মা নাদিয়াল থানায় গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করার পরে রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত তিন জনকে পকসো (প্রোটেকশন অব চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনে গ্রেফতার করে। সোমবার আলিপুর আদালতে তিন জনকে হাজির করানো হলে আগামী ২১ জুলাই পর্যন্ত তাদের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। কলকাতা শিশু কল্যাণ সমিতির নির্দেশে ওই কিশোরীকে আপাতত সল্টলেকের একটি সরকারি হোমে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস তিনেক আগে একই ধরনের একটি ঘটনায় ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস সংলগ্ন আনন্দপুর থানা এলাকায় বছর ষোলোর এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাতেও ওই কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গ্রেফতার করে সেই প্রৌঢ়কে। নির্যাতিতা কিশোরীকে পাঠানো হয় সরকারি এক হোমে। আর একটি ঘটনায় কয়েক মাস আগে টালিগ়ঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা, বছর এগারো-বারোর এক বালিকাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে প্রতিবেশী এক প্রৌঢ়ের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাতেও নির্যাতিতা মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তবে আদালতের নির্দেশে তার গর্ভপাত করানো সম্ভব হয়। সেই ঘটনাতেও অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছিল পুলিশ। দু’টি মামলাই এখন আদালতে বিচারাধীন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.