পরিচিত দৃশ্য। ছবি: অরুণ লোধ।
এক দিকে, উচ্ছিষ্ট খাবার, গাছের ডাল-পাতা, কাগজের প্লেট-গ্লাসের স্তূপ। ভ্যাটের নিচু গার্ডওয়াল ছাপিয়ে সেই সব আবর্জনা চলে এসেছে অপরিসর রাস্তায়। নোংরা পেরিয়ে নাকে রুমাল দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। অন্য দিকে, ফুটপাথের উপরে গজিয়ে উঠছে সংসার। বিসদৃশ ভাবে এ-দিক, ও-দিক ছড়িয়ে পুঁটলি, রেলিং জুড়ে মেলা কাপড়। এই ছবি কলকাতার অন্যতম সংস্কৃতিচর্চা কেন্দ্র রবীন্দ্র সদন চত্বরের।
ক্যাথিড্রাল রোডের দিক দিয়ে রবীন্দ্র সদনের টিকিট কাউন্টারে পৌঁছনোর গেটটি খুবই অপরিসর। তবুও অনেকেই সেই পথ ব্যবহার করেন। গেটের মুখে একাধিক খাবারের দোকান। বাংলা আকাদেমিতে আলোচনা শুনতে আসা প্রবীণ বিমলেন্দু মিত্রের অভিযোগ, যাঁরা নিয়মিত রবীন্দ্র সদনে আসেন না বিকেলের ভিড়ে ওই গেটে পৌঁছনো তাঁদের পক্ষে কষ্টকর। এই চত্বরে একটি মাত্র বড় ভ্যাট। সেটির আবর্জনা উপচিয়ে যায়। ছোট বিন রয়েছে বেশ কয়েকটি। তবু অনেকেই যত্রতত্র ময়লা ফেলেন।
সার্কাস অ্যাভিনিউয়ের উপরে এজেসি বসু রোড ফ্লাইওভার। সেই দিকে রয়েছে রবীন্দ্র সদন চত্বরে ঢোকার প্রবেশ পথ। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে শিশির মঞ্চ ও গগনেন্দ্র প্রদর্শশালা। অভিযোগ, সেই ফুটপাথ ধীরে ধীরে দখল হয়ে যাচ্ছে। শ্যামবাজারের বাসিন্দা নিবেদিতা রায় জানান, আগে ফাঁকা থাকত। সম্প্রতি কিছু ভবঘুরে পরিবার আস্তানা গেড়ে বসায় ফুটপাথ দিয়ে সতর্ক হয়ে হাঁটতে হয়। এক শিল্পীর অভিযোগ, ‘‘এই জায়গায় মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। দেশ-বিদেশের অতিথিরাও আসেন। ফুটপাথ দখলমুক্ত হওয়া জরুরি।’’
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘পুরসভা ভ্যাটটি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কম্প্যাক্টর বসানোর পরিকল্পনা আছে। ফুটপাথ দখলের বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
রবীন্দ্র সদন চত্বরের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাব নিয়ে অভিযোগ রয়েছে শিল্পী এবং দর্শকদের। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় অনেক সবুজ রয়েছে। কিন্তু সেখানে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব স্পষ্ট। এমনকী যে জলাশয়ের উপরে নন্দন রয়েছে। সেটিও ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। দেবাশিসবাবু জানান, রবীন্দ্র সদনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে রাজ্যের পূর্ত দফতর।
পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এ বিষয়ে খোঁজ নেব। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy