Advertisement
E-Paper

মহেশতলায় নেই বর্জ্য সংগ্রহের পরিকাঠামো, দুর্ভোগ বাসিন্দাদের

নেই সাফাইকর্মী। বাড়ি বাড়ি বর্জ্য সংগ্রহের কোনও ব্যবস্থাই নেই। আলাদা কোনও বিভাগও নেই। জঞ্জাল সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখাশোনা করেন পুরসভার সমাজকল্যাণ দফতরের চেয়ারম্যান পারিষদ। মহেশতলা পুরসভাকে নিয়ে এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ৪২,৭২১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মহেশতলা পুরসভায় ৩৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। সাম্প্রতিক জনগণনা অনুসারে মহেশতলা পুরসভার প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মানুষের বাস।

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:২৮
নির্দেশ অগ্রাহ্য করে পড়ে রয়েছে আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র।

নির্দেশ অগ্রাহ্য করে পড়ে রয়েছে আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র।

নেই সাফাইকর্মী। বাড়ি বাড়ি বর্জ্য সংগ্রহের কোনও ব্যবস্থাই নেই। আলাদা কোনও বিভাগও নেই। জঞ্জাল সংক্রান্ত বিষয়গুলি দেখাশোনা করেন পুরসভার সমাজকল্যাণ দফতরের চেয়ারম্যান পারিষদ। মহেশতলা পুরসভাকে নিয়ে এমনই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ৪২,৭২১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মহেশতলা পুরসভায় ৩৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। সাম্প্রতিক জনগণনা অনুসারে মহেশতলা পুরসভার প্রায় সাড়ে চার লক্ষ মানুষের বাস।

কোনও নির্দিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় বাসিন্দারা যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলেন। যেমন, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অরুণ সামন্ত জানাচ্ছেন, সন্ধ্যা বা ভোরে হাঁটতে গিয়ে লুকিয়ে ময়লার পুঁটলি ফেলে আসতে হয় তাঁদের। নিজের বাড়ি থেকে কিছু দূরে, অন্যের বাড়ির সামনে, খালে, কিংবা কোনও ফাঁকা জমিতে ময়লা ফেলতে হয়। এর জন্যে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়ায়। ময়লা ফেলা নিয়ে রোজই অশান্তি হয়। ক্ষুব্ধ এক বাসিন্দার কথায়: ‘‘পুরসভার ময়লা নিয়ে যাওয়ার নির্দিষ্ট কোনও পরিকাঠামোই নেই। তাই যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলা ছাড়া অন্য উপায়ও নেই। এ দিকে মণিখালি সংস্কার হওয়ায় এখন আর আগের মতো খালে ময়লা ফেলাও যাচ্ছে না। ফলে ফাঁকা জমি পেলেই ময়লা ফেলা হচ্ছে। চার পাশে জমা ময়লার মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করছি।’’

মহেশতলা পুরসভায় দীর্ঘ দিন ধরেই যে এমন পরিস্থিতি তা মেনে নিচ্ছেন বিরোধী এবং শাসক দল। পুরসভারই এক কর্মী জানাচ্ছেন, বাম পুরবোর্ডের সময়েও আবর্জনা ফেলা নিয়ে নানা সমস্যা ছিল। বামবোর্ড শেষের দিকে জৈব সার প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিল। তৃণমূল বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে বেশ কয়েক বছর সেই প্রকল্প চালু রাখে। তখন বাড়ি বাড়ি দু’টি করে বালতিও দেওয়া হয়েছিল। জৈব আবর্জনা ও অজৈব আবর্জনা ফেলার জন্য। এখন সেই ব্যবস্থাও পুরো ভেঙে পড়েছে। প্রকল্পটিও এখন কার্যত বন্ধ হয়ে রয়েছে।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, ৩৫টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র দু’-তিনটি ওয়ার্ডে এখন কোনও রকমে চলছে জঞ্জাল সংগ্রহের কাজ। পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিআইএম-এর সাইফুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘‘এই নিয়ে সমস্যা ছিলই। আমরা সারেঙ্গাবাদ হাইস্কুলের উল্টো দিকে কয়েক বিঘা জমির উপরে ভাগাড়টিতে জৈব সার প্রকল্প শুরু করেছিলাম। কাজও হচ্ছিল। প্রতি বাড়ি থেকে মাসে দশ টাকার বিনিময়ে ময়লা সংগ্রহ হত। এখন তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রায় দু’ তিন বছর ধরে জঞ্জাল সমস্যা তীব্র আকার নিয়েছে। কার্যত তিনটি ছাড়া কোনও ওয়ার্ড থেকেই পুরসভা আর ময়লা নেয় না। বাসিন্দারা তাই যত্র তত্র ময়লা ফেলছেন। পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠছে। আর কিছু দিন দেখে আমরা এই নিয়ে আন্দোলনে নামব।’’

জঞ্জাল পরিষেবার ঘাটতির কথা মেনে নিচ্ছেন মহেশতলার পুর-প্রধান দুলাল দাস। তিনি বলেন, ‘‘চেষ্টা চলছে পরিষেবা স্বাভাবিক করতে। ইতিমধ্যেই পুরসভা বাড়ি বাড়ি ময়লা সংগ্রহের জন্য ৩৭টি ছোট এবং ১২টি বড় গাড়ি কিনেছে। এই ব্যবস্থা চালু হলেই পুর এলাকায় আর কোনও ভ্যাট থাকবে না। ময়লা সরাসরি ভাগাড়ে ফেলা হবে। এর জন্য মাসে কুড়ি টাকা করে নেওয়া হবে।’’ পুরসভায় সাফাইকর্মীই তো নেই। তা হলে কী করে চলবে এই পরিষেবা? তাঁর আশ্বাস, ‘‘পিপিপি মডেলে পরিষেবা চালু রাখা হবে। টেন্ডার ডেকে কোনও সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। পুরসভার নিজের দায়িত্বে পরিষেবা দিতে গেলে কর্মী নিয়োগ করতে হবে। যা এই মুহূর্তে অসুবিধার।’’

Garbage Maheshtala Jayati raha kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy