Advertisement
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Dengue

Dengue: খোলা নর্দমায় জঞ্জালের স্তূপ, ডেঙ্গির আতঙ্কে এলাকাবাসী

ছবিটা কলকাতা পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ধানমাঠের গোপাল বসু লেনের। ২০১৯ সালে ওই এলাকায় প্রায় ৩০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

আবর্জনা ফেলায় বুজে গিয়েছে খোলা নর্দমা। দু’নম্বর ওয়ার্ডের ধানমাঠ এলাকায়।

আবর্জনা ফেলায় বুজে গিয়েছে খোলা নর্দমা। দু’নম্বর ওয়ার্ডের ধানমাঠ এলাকায়। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২২ ০৬:৩৯
Share: Save:

বাড়ির সামনে খোলা নর্দমা। সেখানেই ময়লা ফেলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যার জেরে সেই নর্দমা এখন মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। ছবিটা কলকাতা পুরসভার দু’নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ধানমাঠের গোপাল বসু লেনের। ২০১৯ সালে ওই এলাকায় প্রায় ৩০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তৎকালীন কাউন্সিলর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, খোলা নর্দমা আর থাকবে না। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের এই মরসুমে আতঙ্কে রয়েছেন গোপাল বসু লেন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা।

এ বছরের ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তর কলকাতার এক নম্বর বরো। সেখানকার দু’নম্বর ওয়ার্ডের টিকাপাড়া, রেডিয়ো গলি, সেভেন ট্যাঙ্কস ও সাউথ সিঁথির বহু বাসিন্দা গত কয়েক বছরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা এই পরিস্থিতির জন্য দুষছেন খোলা নর্দমাকেই। যেমন, ধানমাঠের গোপাল বসু লেনের খোলা নর্দমা। স্থানীয় কাউন্সিলর থেকে বরো চেয়ারম্যান, প্রত্যেকেই স্বীকার করে নিয়েছেন যে, ওই খোলা নর্দমার কারণে মশার উৎপাত বাড়ছে। কাউন্সিলর কাকলি সেন বললেন, ‘‘ধানমাঠের খোলা নিকাশি নালাটি দেড় কিলোমিটার বিস্তৃত। এত বড় খোলা নর্দমা এ শহরে বেশি নেই। ওই নর্দমা ঢাকার জন্য পুরসভার কাছে আবেদন করেছি। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ নিজেও এলাকায় ঘুরে গিয়েছেন।’’ স্থানীয় বরো চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, ‘‘দু’নম্বর ওয়ার্ডের বেশির ভাগ এলাকায় ঢাকা নর্দমা থাকলেও ধানমাঠের ওই নিকাশি নালা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই নিকাশি নালাটির পুরো সংস্কার করতে হবে। পাইপ বসাতে হবে। তার জন্য মোটা টাকার প্রয়োজন। পুরসভার কাছে আবেদন করা হয়েছে।’’

খোলা নর্দমার দুর্গন্ধে স্থানীয় বাসিন্দারা হাঁটাচলা করতে পারেন না। তাঁদের অভিযোগ, ধানমাঠের গোপাল বসু লেনে ময়লা ফেলার ভ্যাট না থাকায় তাঁদের ওই নর্দমার উপরেই ময়লা ফেলতে হয়। ফলে এলাকার পরিবেশের দফারফা হওয়ার জোগাড়। রমেন সেন নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘পুর নির্বাচনের আগে সব দলই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, খোলা নর্দমা থাকবে না। কিন্তু দু’-দুটো পুর নির্বাচন পেরিয়ে গেলেও খোলা নর্দমার সংস্কারের কাজ হল না।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, মশা দমনে খোলা ওই নিকাশি নালায় পুরসভার তরফে মশা মারার তেল বা ব্লিচিং পাউডার নিয়মিত ছড়ানো হয় না। পুরসভার আইন অনুযায়ী, শহরে কেউ যত্রতত্র ময়লা ফেললে পুর কর্তৃপক্ষ তাঁকে অন্তত পাঁচশো টাকা জরিমানা করতে পারে। আবার শহরে খোলা নর্দমাও থাকার কথা নয়। গোপাল বসু লেনে খোলা নর্দমা ঢাকার প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ (নিকাশি) বলেন, ‘‘এই কাজের জন্য ২.৮ কোটি টাকার বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করে তা অনুমোদনের জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে পাঠানো হয়েছে।’’

যত্রতত্র ময়লা ফেলার জেরে মশার উপদ্রব বাড়তে থাকায় মেয়র ফিরহাদ হাকিম সম্প্রতি জরিমানা করার পুর আইন কার্যকর করার কথা ঘোষণা করেছেন। আইনজীবী শুভঙ্কর মান্নার বক্তব্য, ‘‘পুরসভার আইনকে কাজে লাগিয়ে পুর কর্তৃপক্ষকেই সজাগ হতে হবে। না-হলে যত্রতত্র ময়লা ফেলার প্রবণতা থামবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE