Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Ghat

পাড় গিলছে গঙ্গা, পদে পদে বিপর্যয়ের শঙ্কা

দিনের পর দিন এই অবস্থায় পড়ে থাকা গঙ্গার ঘাট ও পাড় সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হচ্ছে না কেন?

বিপদ: ছিল আস্ত ঘাট। এখন পড়ে শুধুই তার ক্ষতচিহ্ন। গঙ্গার গ্রাসে গিয়েছে মণিঘাট। মঙ্গলবার। ছবি: সুমন বল্লভ

বিপদ: ছিল আস্ত ঘাট। এখন পড়ে শুধুই তার ক্ষতচিহ্ন। গঙ্গার গ্রাসে গিয়েছে মণিঘাট। মঙ্গলবার। ছবি: সুমন বল্লভ

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৪৭
Share: Save:

মালদহ বা মুর্শিদাবাদ নয়।

গঙ্গার ভাঙনের কবলে খোদ রাজধানী শহর।

স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোডের ধার বরাবর চক্ররেলের বড়বাজার স্টেশনের ঠিক পিছনে এক সময়ে পাশাপাশি ছিল মোদীঘাট, মণিঘাট এবং বালুঘাট। ভাঙনের জেরে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন উত্তর কলকাতার ওই তিনটি ঘাট। একই অবস্থা বাগবাজারের মায়ের ঘাট এবং আরও উত্তরে জগন্নাথ ঘাটেরও। বেহাল দশায় পড়ে আছে কাশীপুর ফেরিঘাট। পুরো এলাকায় গঙ্গার পাড় ক্রমেই ভাঙছে। পাড়ের মাটি, কংক্রিটের ঘাটের দফারফা অবস্থা। ভেঙেচুরে গিয়েছে বিভিন্ন ঘাটের সিঁড়ি। জোয়ারের সময়ে বিপদ আরও বাড়ে। ঘাটের সংস্কার না হওয়ায় গঙ্গায় স্নান করতে নেমে বিপদও ঘটছে মাঝেমধ্যে।

দিনের পর দিন এই অবস্থায় পড়ে থাকা গঙ্গার ঘাট ও পাড় সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হচ্ছে না কেন?

কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘গঙ্গার পাড় ও বিভিন্ন ঘাট সংস্কার করতে চেয়ে পুরসভার তরফে একাধিক বার কলকাতা বন্দরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেওয়ায় সেই কাজ হয়নি।’’ যদিও কলকাতা বন্দর তথা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি বন্দরের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মায়ের ঘাট থেকে জগন্নাথ ঘাট পর্যন্ত গঙ্গার পাড় সংস্কারের জন্য দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া চলছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’

বিপদ: ছিল আস্ত ঘাট। এখন পড়ে শুধুই তার ক্ষতচিহ্ন। গঙ্গার গ্রাসে গিয়েছে বালুঘাট। মঙ্গলবার। ছবি: সুমন বল্লভ

চিৎপুর থানা এলাকায় গঙ্গার ধারে কলোনিতে থাকেন রিয়াজুল হোসেন। তাঁর কথায়, ‘‘ছোট থেকে আমরা এখানে থাকি। কয়েক বছর ধরেই লক্ষ করছি, ধীরে ধীরে পাড়কে গিলে খাচ্ছে গঙ্গা।’’ উত্তর কলকাতায় গঙ্গাতীর বরাবর রয়েছে আদ্যশ্রাদ্ধ ঘাট, প্রসন্নকুমার ঠাকুর ঘাট, কাঠগোলা ঘাট। সবগুলিই প্রায় নিশ্চিহ্ন। নিমতলা ঘাটের কাছাকাছি একাধিক জায়গা বালির বস্তা, পাথর দিয়ে বাঁধানো হয়েছিল। সে সব জলের তোড়ে উধাও। কুমোরটুলি পাড়ার মৃৎশিল্পী মিন্টু পালের অভিযোগ, ‘‘কলকাতার একাধিক জায়গায় গঙ্গার পাড় বাঁধাই করে সৌন্দর্যায়ন করা হয়েছে। কিন্তু কুমোরটুলি ঘাট থেকে জগন্নাথ ঘাট পর্যন্ত গঙ্গার পাড়ের অবস্থার উন্নতি হয়নি।’’

কুমোরটুলি ঘাটে প্রতিদিন গঙ্গায় স্নান করতে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা নরেন মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘ঘাট সংস্কার না হওয়ায় অনেকেই স্নান করতে নেমে হঠাৎ জোয়ার চলে এলে বিপদে পড়েন। গঙ্গার জলের ধাক্কায় পাড়ের বোল্ডারের রড বেরিয়ে থাকে। জোয়ারের তোড়ে ওই রডে ধাক্কা খেয়ে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটারও আশঙ্কা রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ganges KMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE