Advertisement
E-Paper

ফেসবুকে বচসা, অনলাইনে ছবি দিয়ে ‘সম্মানহানি’

শনিবার পূর্বসিঁথির বাসিন্দা ওই তরুণী জানান, তাঁর বাবা দীর্ঘ দিন ধরে কবিতা লিখেছেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাঁর লেখা কবিতা প্রকাশিত হয়েছে এবং সেগুলি সমাদৃত হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩২

ফেসবুকে বাবার লেখা কবিতা অন্যের নামে দেখে আপত্তি জানিয়েছিলেন মেয়ে। তা নিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে শুরু হয় বাগযুদ্ধ। কিন্তু বিষয়টি সেখানে থেমে রইল না। তরুণীর অভিযোগ, আপত্তি করায় এসকর্ট সার্ভিসের সাইটে তাঁর ছবি এবং নাম ছড়িয়ে দেওয়া হয়! শুক্রবার অভিযুক্তদের শাস্তি চেয়ে লালবাজারের সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন দমদমের তরুণী। পাশাপাশি, দমদম থানাতেও অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

শনিবার পূর্বসিঁথির বাসিন্দা ওই তরুণী জানান, তাঁর বাবা দীর্ঘ দিন ধরে কবিতা লিখেছেন। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তাঁর লেখা কবিতা প্রকাশিত হয়েছে এবং সেগুলি সমাদৃত হয়েছে। তরুণী জানান, তাঁর বাবার কোনও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। তাই নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে বাবার লেখা কবিতা আপলোড করতেন মেয়ে। তরুণীর দাবি, তাঁর বাবার লেখা কবিতা এক জনের প্রোফাইল থেকে ভাইরাল হচ্ছে দেখে তিনি আপত্তি জানান। আপলোড হওয়া কবিতায় লেখক হিসেবে তাঁর বাবার কোনও নাম ছিল না। তাঁর অভিযোগ, এ কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত, তারাই তরুণীর সম্মানহানির চেষ্টা করেছে। তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তদের নাম বলতে চাননি তিনি।

অভিযোগকারিণী জানান, গত রবিবার সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর বাগযুদ্ধ শুরু হয়। এ ভাবে অন্যের কবিতা নিজের নামে কেন চালানো হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে সরব হয়েছিলেন অভিযোগকারিণী। মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যের লড়াইয়েও অভিযুক্তেরা অশালীন মন্তব্য করেন বলে দাবি তরুণীর। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বাবাকে চোর বলতে পর্যন্ত ছাড়েনি।’’

বাগযুদ্ধের পরবর্তী ঘটনাক্রমে তরুণীর পরিবার ‘হতবাক’ হয়ে যায়। অভিযোগপত্রে তরুণী দাবি করেছেন, বুধবার তাঁর কাছে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসতে থাকে। সেই সব ফোনে অশালীন প্রস্তাব দেওয়া হয়। প্রথমে একের পর এক অনভিপ্রেত ফোন আসার কারণ বুঝতে পারেননি তরুণী। শেষ পর্যন্ত ফেসবুক বন্ধুত্বের তালিকায় থাকা এক জন তাঁকে জানান, ঠিক কী ঘটেছে। বিপদে পড়ে ওই ব্যক্তির কাছে সাহায্য চান তরুণী। এর পরে যে সাইটে ছবি এবং ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছিল, তার লিঙ্ক তরুণীকে পাঠান ওই ব্যক্তি। একই বেশ কিছু মোবাইলের স্ক্রিন শটও পাঠানো হয়।

এ দিন তরুণী বলেন, ‘‘আমার ফেসবুক, গুগল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ওই ধরনের সাইটে ছবি এবং ফোন নম্বর দিয়েছে। মীরাবাঈ গুপ্ত নামে একটি ভুয়ো আইডি তৈরি করা হয়েছে। এর পরে সেই ফেসবুক আইডি থেকে আমার সুপারইম্পোজ ছবি ভাইরাল করা হয়েছে! হেনস্তা কিছু বাকি রাখেনি। কী মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, বোঝাতে পারব না। এ কাজ যারা করেছে, তাদের যেন শাস্তি হয়। এখন যদিও হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্টটি নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে।’’ পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পরে অভিযুক্তেরা তাঁকে হুমকি দিচ্ছে বলেও তরুণী অভিযোগ করেছেন তরুণী।

তরুণীর ৬৪ বছরের বৃদ্ধ বাবা বলেন, ‘‘লেখালেখির জগতে অন্যের কবিতা নিজের নামে চালানো নতুন নয়। তাতে আমি বিচলিত হইনি। কিন্তু এই আচরণের প্রতিবাদ করায় মেয়ের যে ভাবে সম্মানহানি করা হল, সেটা আমাকে কষ্ট দিয়েছে। মেয়েকে যে স্তরে নামিয়ে আনা হয়েছে, বাবা হিসাবে আমি আঘাত পেয়েছি। সহ্য করার তো সীমা আছে। এত দিন ধরে যা চলছে, আর ধৈর্য রাখতে পারছি না। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি করছি।’’

harassment Facebook broil cyber crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy