E-Paper

স্বর্ণ ব্যবসায়ী খুনের তদন্তে উঠে আসছে নিউ টাউনের বাড়িই

পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে বিধাননগর কমিশারেটের গোয়েন্দা বিভাগ। পুরো ঘটনাক্রম জানতে ধৃত দুই অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:২২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও খুনের ঘটনায় নিউ টাউনের বাড়ি এ বার তদন্তের কেন্দ্রে উঠে এল। আদালতের নির্দেশে এই মামলায় দুই অভিযুক্তকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে যে সব তথ্য সামনে এসেছে, তাতে নিউ টাউনের ওই বাড়ি ‘ঘটনাস্থল’ বলে প্রাথমিক ইঙ্গিত মিলেছে। ঘটনাচক্রে, দত্তাবাদের বাড়ির মালিক গোবিন্দ বাগ সংবাদমাধ্যমের সামনে দাবি করেছিলেন, নিউ টাউনের ওই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যাকে। সেখানে এক সময়ে কাজ করা অশোক করও দাবি করেছিলেন, তিনি যখন ওই বাড়িতে যান, তখন স্বপনকে দেখেছিলেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে বিধাননগর কমিশারেটের গোয়েন্দা বিভাগ। পুরো ঘটনাক্রম জানতে ধৃত দুই অভিযুক্তকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হতে পারে। গত শনিবার ভোরে রাজারহাট থেকে বিডিও-র কলকাতার গাড়িচালক রাজু ঢালি ও শিলিগুড়ি থেকে বিডিও-র পরিচিত তুফান থাপাকে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় তদন্তকারীদের কাছে কিছু বিষয়ে মুখ খুলেছেন অভিযুক্তেরা। পুলিশের দাবি, কার নির্দেশে তাঁরা এই ঘটনায় জড়ালেন, কোথায় ও কী ভাবে স্বপনকে খুন করা হয়েছে, এমন একাধিক প্রশ্নে অভিযুক্তদের বক্তব্যে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র মিলেছে।

প্রসঙ্গত, স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে দত্তাবাদের সোনার দোকান থেকে তুলে নিয়ে নিউ টাউনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে মারধর করা হয় বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তার সমর্থনে বেশ কিছু তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে। পুলিশ জানিয়েছে, জেরায় অভিযুক্তদের বক্তব্যে প্রাথমিক অনুমান, স্বপনকে মারধর করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের নাম জড়িয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, জিজ্ঞাসাবাদ এবং ধৃত দুই অভিযুক্তকে জেরার সূত্রে এই ঘটনায় বিডিও-র যোগসূত্র প্রসঙ্গে আরও কিছু তথ্য সামনে এসেছে। সেগুলি যাচাই করা হচ্ছে। গোটা ঘটনায় ছ’জনের জড়িত থাকা, স্বপনকে অপহরণ ও তাঁর দেহ ফেলে দেওয়ার ক্ষেত্রে সাদা গাড়ির যোগসূত্র রয়েছে বলে (যাতে নীল আলো লাগানো ছিল) পুলিশের সামনে তথ্য এসেছে। তা-ও যাচাই করে দেখা হচ্ছে।

এ দিকে, গোটা ঘটনায় বিডিও-র নাম জড়িয়ে যাওয়া নিয়ে সুর চড়িয়েছেন বিরোধীরা। রবিবার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, “প্রথম অভিযোগ, তিনি নাকি সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন। জানি না, এটা কতটা সত্যি। দ্বিতীয় অভিযোগ, স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ এবং খুনে তাঁর নাম আসছে। তাঁকে দেখাও যাচ্ছে সেই বাড়ি থেকে বেরোতে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজও আছে। এর পরেও তাঁকে ক্লোজ় করা হয়নি কেন? এর কারণ কি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ? আমাদের কাছে খবর আছে, এই বিডিও বিভিন্ন ব্যক্তির সামনে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত ফোনে কথা বলে স্পিকারে দিয়ে শুনিয়েছেন যে, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কত কাছের।” সুকান্তের আরও দাবি, “অভিযুক্ত বিডিও অল্প সময়ে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। কোনও এক বিচারকেরও হাত নাকি তাঁর মাথায় আছে।” তাঁর দাবি, ভোটের আগে বিডিও-কে সরাতে হবে। বিডিও গ্রেফতার না হলে চলতি সপ্তাহে বিজেপি বিডিও অফিস অভিযান করবে বলে সুকান্ত জানান।

সুকান্তের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, “কে ব্যক্তিগত ভাবে কী করবেন, সেটা জানা বা বোঝা সম্ভব নয়। এর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। কেউ আমাদের ঘনিষ্ঠ নন, কাউকে মদত দিইনি। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসন দেখছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

New Town

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy