হনুমান জয়ন্তীর দিন শহরের রাজপথে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। — নিজস্ব চিত্র।
হনুমান জয়ন্তীর দিন শহরের পথে দেখা গেল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে। বৃহস্পতিবার রাজভবন থেকে রাজ্যপালের কনভয় বেরিয়ে প্রথম যায় লেকটাউনের একটি হনুমান মন্দিরে। সেখানে পুজো দেন। তার পর শহরের সম্পূর্ণ অন্য প্রান্তে একবালপুর, পোস্তা। দু’জায়গাতেই পুলিশ আধিকারিক, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্মী এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। তেষ্টা মেটান পোস্তায় একটি শরবতের দোকানে, ছাতুর শরবতে চুমুক দিয়ে।
রামনবমীতে অশান্তির ঘটনার পর হনুমান জয়ন্তীতে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি রাস্তায় টহল দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও। এ বার শহরের পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে পথে নেমে পড়লেন রাজ্যপাল বোসও। রাজভবন থেকে তাঁর কনভয় প্রথমে যায় লেকটাউনে। সেখানে বাল হনুমান মন্দিরে পুজো দেন তিনি। সেখানে তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। তবে শুধু পুজো দেওয়াই নয়, রাজ্যপাল কথা বলেন সাধারণ মানুষের সঙ্গেও। রাজ্যপালের দ্বিতীয় গন্তব্য ছিল একবালপুর। হাই কোর্টের নির্দেশে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে ওই এলাকায় রুটমার্চ করছে কেন্দ্রীয় বাহিনীও। কেন্দ্রীয় বাহিনীর দলকে নিয়ে কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা যখন ময়ূরভঞ্জ রোডে টহল দিচ্ছেন, তখনই রাজ্যপালের কনভয় ঢোকে এলাকায়। পুলিশ তার আগেই বন্ধ করে দিয়েছিল রাস্তায় যান চলাচল। রাজ্যপাল গাড়ি থেকে নেমে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। তার পর কথা বলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গেও। প্রশাসনের সঙ্গে বাক্যবিনিময়ের পর রাজ্যপাল এগিয়ে যান ফুটপাথে তাঁকে দেখতে জড়ো হওয়া সাধারণ মানুষের দিকে। বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। রাস্তার ধারে দোকান দেখে সে দিকেও এগিয়ে যান তিনি। জিজ্ঞাসা করেন ব্যবসার অবস্থা কী? একবালপুর রাজ্যপাল বোস সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘‘আর কোনও গোলমাল হবে বলে আমার মনে হয় না। মানুষ দারুণ ভাবে সহযোগিতা করছেন। আমার বিশ্বাস, আজ বাংলা গোটা দেশে শান্তি এবং সম্প্রীতির বিশেষ দৃষ্টান্ত তৈরি করতে চলেছে।’’
একবালপুর হয়ে রাজভবনের বাসিন্দার কনভয় দৌড় লাগায় পোস্তার দিকে। সেখানে গিয়েও একই কাজ করেন রাজ্যপাল বোস। প্রথমেই পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেন। জেনে নেন এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে। তার পর পায়ে পায়ে এগিয়ে যান রাস্তার পাশে অপেক্ষমাণ জনতার দিকে। বেশ কয়েকটি দোকানেও ঢুঁ মারেন। একটি শরবতের দোকানে গিয়ে জানতে চান, কী ভাবে তৈরি করা হচ্ছে পানীয়। তার পর দোকানদারকে বলেন, তাঁকেও এক গ্লাস ছাতুর শরবত খাওয়াতে। দোকানদার রাজ্যপালের সামনেই ছাতু গুলে শরবত তৈরি করে দেন। তাতেই চুমুক লাগান রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। পয়সা মেটান নিজের পকেট থেকেই। কথা বলেন এলাকার ছোট ব্যবসায়ীদের কয়েক জনের সঙ্গে। তাঁদের শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন করেন। বলেন, যে কোনও সমস্যায় পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে। সেই সময় রাজ্যপালের পাশেই ছিলেন রাজ্য পুলিশের কর্তাদের কয়েক জন। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে রাজ্যপাল কলাকার স্ট্রিটের চার চকের হনুমান মন্দিরে প্রবেশ করেন। সেখানে তিনি পুজো দেন বলে জানা গিয়েছে। পুজো দিয়ে বেরিয়ে এসে মন্দিরের লোকজনের সঙ্গে নিজস্বীও তোলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy