Advertisement
E-Paper

রাজ্য সরকার হকার তোলার পক্ষে নয়, মন্তব্য হাইকোর্টের

এই রাজ্য সরকার নীতিগত ভাবে হকার তোলার পক্ষে নয় বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট মনে করে, হকার সরাতে আদালত নির্দেশ দিতে পারে। কিন্তু সেই নির্দেশ কার্যকর হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে বলে মনে করে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বক্তব্য, সেই নির্দেশ না মানার জন্য আদালত অবমাননার মামলাও হতে পারে। তার বেশি কিছু হবে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৫ ১৯:০৬

এই রাজ্য সরকার নীতিগত ভাবে হকার তোলার পক্ষে নয় বলে মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্ট মনে করে, হকার সরাতে আদালত নির্দেশ দিতে পারে। কিন্তু সেই নির্দেশ কার্যকর হবে কি না তা নিয়ে সংশয়ও রয়েছে বলে মনে করে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের বক্তব্য, সেই নির্দেশ না মানার জন্য আদালত অবমাননার মামলাও হতে পারে। তার বেশি কিছু হবে না।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প সংক্রান্ত একটি মামলায় বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দের উদ্দেশে বলেন, ‘‘যদি পুরনো রুটেও ওই প্রকল্প হয়, তা হলেও কি আপনি মনে করেন, রাস্তা দখলকারী দোকানদার, হকারদের তুলে দেবে সরকার? সরকার তো তাদের পক্ষে।’’
এ দিন কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন (কেএমআরসিএল) বিচারপতি দত্তের আদালতে জানায়, ওই প্রকল্পের প্রস্তাবিত নতুন রুট নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। তবে সেনাবাহিনী, আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (এএসআই) এবং নতুন প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত ৭৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দের ব্যাপারে রেল বোর্ড তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন প্রয়োজন। তা জেনে বিচারপতি দত্ত উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘যে হকার সমস্যা ও ট্রাফিক সমস্যার জন্য রাজ্য সরকার বিকল্প রুট চাইছে, নতুন রুটেও তো সেই সমস্যা থাকবে। হকার ও ট্রাফিক সমস্যা হবে হিন্দ সিনেমা, ওয়েলিংটন স্কোয়ার, এস এন ব্যানার্জি রোডে। সে ক্ষেত্রে আদৌ ওই প্রকল্প কার্যকর হবে কি না তা নিয়েই তো সংশয় রয়ে যায়।’’
কলকাতা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কর্পোরেশন-এর (সিইএসসি) আইনজীবী সুবীর সান্যাল এ দিন আদালতে জানান, নতুন রুটে ওই মেট্রো প্রকল্প হলে বাড়তি অসুবিধা দেখা দেবে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখার ক্ষেত্রে। মাটির তলায় লো-ভোল্টেজ, হাই-ভোল্টেজ বিদ্যুতের তার রয়েছে। সেই সব তার সরানোর জায়গা রাজ্য সরকার দিলেও, প্রযুক্তিগত ভাবে সেই তার সরিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ চালু রাখতে বিস্তর অসুবিধা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সিএসসি-কে বাড়তি টাকাও দিতে হবে কেএমআরসিএল-কে। সুবীরবাবু এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন, নতুন রুটের ব্যাপারে সমস্যার সমাধান করতে রাজ্যের পরিবহণ দফতরকে গত ২৭ জানুয়ারি ও ১০ মার্চ দু’বার চিঠি দেওয়া হয় আলোচনায় বসতে। কিন্তু ওই দফতর চিঠির জবাবই দেয়নি।

নতুন রুট নিয়ে কেএমআরসিএল-এর সায় রয়েছে জেনে বিচারপতি দত্ত এ দিন কৌশিকবাবুর কাছে জানতে চান, কেন্দ্রের মন্ত্রিসভা বাড়তি টাকার অনুমোদন দেবে কি না, তা কত দিনে জানা যাবে? অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এ দিন তা জানাতে পারেননি। এর পরে বিচারপতি দত্ত কৌশিকবাবুর কাছে জানতে চান, ‘‘বাড়তি টাকার অনুমোদন না পেলে কী হবে?’’ কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘তা হলে পুরনো রুটেই ওই প্রকল্প হবে। তাই প্রকল্পের ঠিকাদার সংস্থা আগে কাজ শুরু করুক।’’ এর পরেই হকার নিয়ে ওই মন্তব্য করেন বিচারপতি দত্ত।

সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি দত্ত এ দিন রাজ্যের অতিরিক্ত অ্যাডভোকেট জেনারেল লক্ষ্মী গুপ্তকে অনুরোধ করেন, রাজ্যের পরিবহণ সচিব, কলকাতার ডেপুটি কমিশনারকে আগামী সোমবার বিকেলে তাঁর চেম্বারে হাজির করাতে। এ ছাড়া, সিইএসসি এবং প্রকল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত সংস্থাগুলিকেও তাঁর চেম্বারে হাজির হতে অনুরোধ করেন বিচারপতি দত্ত। লক্ষ্মীবাবুকে বিচারপতি দত্ত এ-ও বলেন, ‘‘আপনি রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রীকে এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করছে না কেন? ওই মন্ত্রী অনেক উদ্যমী।’’

justice dipankar dutta hawker trouble east west metro project metro project government supports hawker
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy