Advertisement
E-Paper

নিজের স্কুলে নালিশের জাঁতায় প্রধান শিক্ষিকা

ফেল করা ছাত্রীদের বিক্ষোভের সূত্রে কিছু দিন আগে শিরোনামে এসেছিল স্কুলটি। ফুলবাগানের কাছে সেই শুঁড়াকন্যা বিদ্যালয়ে এ বা অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে জড়িয়ে পড়েছেন প্রধান শিক্ষিকা, অন্যান্য শিক্ষিকা এবং পরিচালন সমিতির সম্পাদক। প্রধান শিক্ষিকাই নিয়ম মানেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ওই স্কুলের এক দল শিক্ষিকা। অভিযোগ জানিয়ে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর, স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদকের কাছে চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৩৪

ফেল করা ছাত্রীদের বিক্ষোভের সূত্রে কিছু দিন আগে শিরোনামে এসেছিল স্কুলটি। ফুলবাগানের কাছে সেই শুঁড়াকন্যা বিদ্যালয়ে এ বা অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে জড়িয়ে পড়েছেন প্রধান শিক্ষিকা, অন্যান্য শিক্ষিকা এবং পরিচালন সমিতির সম্পাদক।

প্রধান শিক্ষিকাই নিয়ম মানেন না বলে অভিযোগ তুলেছেন সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ওই স্কুলের এক দল শিক্ষিকা। অভিযোগ জানিয়ে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর, স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদকের কাছে চিঠিও পাঠিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

শিক্ষিকাদের প্রধান অভিযোগ: প্রধান শিক্ষিকা দেবযানী দত্ত রায় সময়মতো স্কুলে আসেন না। হাজিরা খাতায় সই করেন না। সরকারি অফিসে কাজের অজুহাতে মাঝেমধ্যেই অনুপস্থিত থাকেন। ক্লাস নেন না। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের মতো পরীক্ষার সময় স্কুলে থাকেন না। স্কুলের হিসেবনিকেশে স্বচ্ছতার অভাব আছে ইত্যাদি।

শুধু শিক্ষিকারা নন। প্রধান শিক্ষিকার কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক প্রবীরকুমার সেনও। তাঁর অভিযোগ, দেবযানীদেবী পরিচালন সমিতির বৈঠকে উপস্থিত থাকেন না। গুরুতর সব অভিযোগের মুখে পড়তে হবে বলেই বৈঠক এড়িয়ে চলেছেন।

প্রধান শিক্ষিকা অবশ্য জানান, তাঁর তরফে কোনও অনিয়ম হয়নি। তিনি ঠিক জায়গাতেই আছেন। তাই যে যেখানে যেমন অভিযোগই জানান না কেন, তিনি আমল দিতে রাজি নন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, সম্পাদক কোনও চেকে সই করছেন না বলে অনেকের প্রাপ্য মেটানো যাচ্ছে না।

শুঁড়াকন্যা বিদ্যালয়টি বেশ বড় এবং পুরনো। ছাত্রী-সংখ্যা হাজার দুয়েক। মাঝেমধ্যেই বিতর্কে জড়িয়েছে স্কুলটি। কিছু দিন আগে বার্ষিক পরীক্ষায় ফেল করা ছাত্রীরা পাশ করানোর দাবিতে স্কুলে বিক্ষোভ দেখায়। এখন ফলপ্রকাশের দিনে স্কুলে পুলিশি নজরদারির ব্যবস্থা হয়।

তবে এ বার ছাত্রীরা নয়। অসন্তোষে জড়িয়ে পড়েছেন শিক্ষিকা, প্রধান শিক্ষিকা এবং স্কুল সমিতির সম্পাদক। বিভিন্ন সময়ে লেখা চিঠিতে এক দিকে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ জানিয়েছেন শিক্ষিকারা। আবার পরিচালন সমিতির বৈঠকে অনুপস্থিত থাকার কারণ ব্যাখ্যা করে সম্পাদককে চিঠি দিয়েছেন প্রধান শিক্ষিকা। সম্পাদক আবার প্রধান শিক্ষিকার ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য মনে করছেন না বলে জানিয়ে দিয়ে বৈঠকের বিকল্প দিন ধার্য করেছেন। কিন্তু সে-দিনও প্রধান শিক্ষিকা অনুপস্থিত থাকায় তাঁকেই চিঠি লিখে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়ে দিয়েছেন সম্পাদক।

সম্পাদক হিসেবে প্রবীরবাবুর মেয়াদ শেষ হয়েছে মার্চে। তাঁর বক্তব্য, নতুন সম্পাদক আসার আগে তিনিই কাজ চালাবেন কি না, তা স্থির করার জন্য পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা জরুরি। সেই বৈঠক না-হওয়ায় তিনি চেকে সই করতে পারছেন না। প্রবীরবাবুর অভিযোগ, বৈঠকের দিন স্থির হলেও দেবযানীদেবী নিজে তো হাজির থাকছেনই না। সমিতিতে নিজের অনুগামী সদস্যদেরও উপস্থিত থাকতে বাধা দিচ্ছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রধান শিক্ষিকা। দেবযানীদেবী জানান, ডিসেম্বরে পরিচালন সমিতির বৈঠকে তিনি থাকতে পারবেন না বলে সম্পাদককে জানিয়েছিলেন। কিন্তু অন্য কাউকে প্রভাবিত করার কথা ঠিক নয়। তাঁর কথায়, ‘‘২০০৩ থেকে এই স্কুলে প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে আছি। ছাত্রী-সংখ্যা ১২০০ থেকে বেড়ে দু’হাজার হয়েছে। সেটাই প্রমাণ করে, আমি ঠিক পথে আছি, নাকি কোনও ভুল কাজ করছি।’’

সহকর্মীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষিকার ব্যাখ্যা, স্কুল পরিচালনার জন্য তাঁকে বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর, বিকাশ ভবনের বিভিন্ন আধিকারিকের কাছে নিয়মিত যেতে হয়। তাই ঘড়ি ধরে নির্দিষ্ট সময়ে হয়তো তিনি স্কুলে হাজির থাকতে পারেন না। কিন্তু সেই কারণে কেউ যদি তাঁর বিরুদ্ধে নিয়ম না-মানার অভিযোগ তোলেন, তা হলে সেটা প্রমাণের দায়ও অভিযোগকারীর বলেই প্রধান শিক্ষিকার দাবি। টেলিফোনে তিনি বললেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে সব অভিযোগই যে ভুল, তা তথ্য দিয়ে প্রমাণ করতে পারি।’’

আর শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, ওই স্কুলের অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

headmistress phoolbagan school school cross allegation surakanya school surakanya headmistress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy