Advertisement
E-Paper

পুজোর নিয়ম কি সবার জন্য সমান, প্রশ্ন হাইকোর্টের

কলকাতায় সর্বজনীন পুজো করার কিছু নিয়ম আছে। কিন্তু সেই নিয়ম সকলের জন্য সমান কি না, বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানিতে সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:৪৫

কলকাতায় সর্বজনীন পুজো করার কিছু নিয়ম আছে। কিন্তু সেই নিয়ম সকলের জন্য সমান কি না, বৃহস্পতিবার একটি মামলার শুনানিতে সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত।

গত দু’বছর ধরে সোনাগাছিতে পুজো করছে দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি। তাদের মণ্ডপের মাপ ছিল ১২০ বর্গফুট। তা ৩৪০ বর্গফুট করতে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে আর্জি জানায় সমিতি। প্রয়োজনে স্থানীয় কমিউনিটি হলের উঠোন ব্যবহারের কথাও বলা হয়েছিল। প্রশাসন অনুমতি না দেওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় তারা। পুলিশ পাল্টা জানিয়েছিল, ওই পুজোর অনুমতি দেওয়া হলে রাস্তা বন্ধ হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিরও অবনতি হতে পারে। বক্তব্য শুনে পুলিশ ও পুরসভাকে পুজোর অনুমতির নিয়মাবলী আদালতে পেশ করতে নির্দেশ দেন বিচারপতি দত্ত। এ দিন তা পেশ করতেই তিনি রাজ্যের আইনজীবী শুভব্রত দত্ত ও কলকাতা পুরসভার আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেন, গাইডলাইন ভাল। কিন্তু তা সব পুজোর ক্ষেত্রে সমান হওয়া উচিত। তা হয় কি?—প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি। শুনানিতে নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি কলকাতায় বড় হয়েছি। উত্তর থেকে দক্ষিণে কোন কোন পুজো রাস্তার উপরে হয়, তা নাম ধরে বলে দিতে পারি।’’ রাস্তা জুড়ে মণ্ডপ থাকায় তাঁকে বাড়ি ফেরার পথ বদলাতে হয়েছে বলেও জানান তিনি।

দুর্বারের পুজো নিয়ে সমস্যা নতুন নয়। ২০১৩ সালে পুজোর অনুমতি পেতেও কাঠখড় পোহাতে হয়েছিল। পুলিশ বলেছিল, সোনাগাছিতে পুজো হলে যৌনকর্মী ও তাঁদের ছেলেমেয়েদের ভিড়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ-প্রশাসন দ্বিচারিতা করছে বলে জানিয়েছিলেন। প্রভাবশালীদের পুজো আইন ভাঙলে সে ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় কি না, সে প্রশ্নও ওঠে।

এ বারও একই কায়দায় দুর্বার-এর পুজোর বিরুদ্ধে সওয়াল করে প্রশাসন। একই ভাবে আদালতে যুক্তির প্যাঁচে পড়েছেন তাদের আইনজীবীরা। এ দিন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত জানতে চান, নিয়ম না মানার জন্য কতগুলো পুজোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? কত টাকা জরিমানা করা হয়েছে? সরকার পক্ষ জবাব দিতে পারেনি। ভিড় ও আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে দক্ষিণের একটি বড় পার্কের পুজোর প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতি বলেন, অসমর্থিত সূত্রে শোনা যাচ্ছে, সেখানে নাকি ৭০ ফুট উঁচু প্রতিমা হবে। শহর ও শহরতলির মানুষ সেখানে ভিড় করবেন। তাতে অনুমতি দিতে প্রশাসন আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে খতিয়ে দেখেছে কি না, সে প্রশ্নও আদালতে উঠেছে।

এ দিন আদালতে দুর্বারের আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ ও অনিন্দ্য লাহিড়ী বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশেই তাঁরা সোনাগাছিতে পুজোর অনুমতি পান। সেই জায়গা নিয়ে সমস্যা হওয়ায় ফের আদালতের দ্বারস্থ তাঁরা। আদালতের বাইরে অনিন্দ্যবাবু বলেন, ‘‘রাস্তার যা মাপ, তাতে নিয়মমাফিক ছাড় দিয়েই মণ্ডপের আয়তন বাড়াতে পারতাম। যৌনকর্মীদের পুজো বলেই পুলিশ-প্রশাসন এত আপত্তি তুলছে।’’ সেই আপত্তি নিয়ে আদালত সরাসরি মন্তব্য করেনি। বিচারপতি দত্ত বলেন, ‘‘আসল সমস্যাটা অন্য জায়গায়।’’

সমাধানসূত্র বার করতে বিচারপতির নির্দেশ, পুলিশ-প্রশাসন ওই পুজোর জায়গা পরিদর্শন করুক। আজ, শুক্রবার ফের শুনানি। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বিকেলেই পরিদর্শন সারা হয়েছে। শুক্রবার সেই রিপোর্ট আদালতে পেশ হবে।

puja pandal high court kolkata police durbar mahila samnnay samiti puja pandal arrangement
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy