Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিচারককে ফোনে ‘উত্ত্যক্ত’, ধৃত যুবক

টানা ফোনে বিরক্ত করা হচ্ছিল এক মহিলা বিচারককে। ‘কলিং লাইন আইডেন্টিফিকেশন’ (সিএলআই)-এর সাহায্যে পুলিশ জেনে যায়, পুরুষ কণ্ঠে ফোনটি করা হয়েছে হরিয়ানার কারনাল জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে। কিন্তু অভিযুক্তকে শনাক্ত করা গেলেও তার নাগাল পাচ্ছিল না পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৬ ০০:৩২
Share: Save:

টানা ফোনে বিরক্ত করা হচ্ছিল এক মহিলা বিচারককে। ‘কলিং লাইন আইডেন্টিফিকেশন’ (সিএলআই)-এর সাহায্যে পুলিশ জেনে যায়, পুরুষ কণ্ঠে ফোনটি করা হয়েছে হরিয়ানার কারনাল জেলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে। কিন্তু অভিযুক্তকে শনাক্ত করা গেলেও তার নাগাল পাচ্ছিল না পুলিশ। অবশেষে পাসপোর্ট অফিসার সেজে কারনাল থেকেই ওই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে আলিপুর থানার পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ধৃত সন্দীপ রমনের বাড়ি কারনালের মধুবন থানা এলাকায়। সে প্রাক্তন মার্চেন্ট অফিসার। আগে কাজের সূত্রে কলকাতায় বসবাস করলেও এখন হরিয়ানায় থাকে সে।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার গ্রেফতারের পরেই তাকে স্থানীয় আদালত দু’দিনের জেল হেফাজত দেয়। বুধবার ফের তাকে সেখানকার আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানায়, আলিপুর আদালতের এক মহিলা বিচারক গত মাসের শেষ দিকে অভিযোগ করেন, তাঁর চেম্বারের ল্যান্ডফোনে এক পুরুষ কণ্ঠ বার বার ফোন করে বিরক্ত করছে। বাংলা এবং হিন্দিতে গালিগালাজ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ ছিল। পুলিশ জানায়, প্রথম দিকে বিচারকের চেম্বারে সিএলআই ছিল না। পরে তা বসিয়ে জানা যায়, ফোনটি করা হয়েছে হরিয়ানার কারনাল থেকে।

অভিযুক্তের ফোনের ডিটেলস খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে, সন্দীপ রমন নামে এক ব্যক্তির নামে সিমটি কেনা হয়েছে কারনাল থেকে। তবে তার মোবাইল বন্ধ থাকায় সন্দীপের হদিস পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা। কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষকর্তা জানান, সন্দীপ সিমটি কেনার জন্য ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে পাসপোর্টের কপি জমা দিয়েছিল। খবর নিয়ে জানা যায়, পাসপোর্টটি বৈধ। এর পরেই পাসপোর্টে থাকা ঠিকানা ধরে মধুবনে সোমবার হানা দেন তদন্তকারীরা এবং পাসপোর্ট অফিসার হিসেবে পরিচয় দেন। তাঁদের সাহায্যে করে স্থানীয় পুলিশ। কিন্তু সন্দীপের দেখা মেলেনি।

পুলিশ জানায়, এর পরেই মাস্টার স্ট্রোক দেন তদন্তকারীরা। তাঁরা সন্দীপের পরিবারের সদস্যদের বলেন, তার পাসপোর্টে গোলমাল হয়েছে। তাই তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে। এর পরেই মঙ্গলবার মধুবনের নির্দিষ্ট স্থানে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীদের সঙ্গে দেখা করে অভিযুক্ত সন্দীপ। সেখানেই তাকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা।

লালবাজার সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির পরিবারের দাবি, পারিবারিক কিছু সমস্যার জন্য তিনি মানসিক ভাবে সুস্থ নন। তবে তার মোবাইলের কল লিস্টে ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ওই মহিলা বিচারক ছাড়া অপরিচিত আরও অনেককেই ফোন করেছে সে।

কোথা থেকে ওই বিচারকের ফোন নম্বর পেল অভিযুক্ত? পুলিশ জানায়, সন্দীপের দাবি, তার কাছে ওই ফোন নম্বরটি ছিলই। অন্য নম্বরের সঙ্গে সে ওই বিচারকের চেম্বারে ফোন করেছিল। এক জন মহিলা ফোন তোলায় সে বার বার ফোন করতে থাকে। পুলিশের দাবি, কাজের সূত্রের বেশ কয়েক বছর কলকাতায় ছিল সন্দীপ। তাই সে বাংলা জানত। অপর প্রান্তে থাকা মহিলা বাংলায় কথা বলছেন দেখে, সে-ও বাংলায় কথা শুরু করে। তবে অভিযুক্তের অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Youth arrest Judge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE