Advertisement
E-Paper

রবীন্দ্রভারতীর বসন্ত উৎসব ঘিরে বিশৃঙ্খলা

যা দেশের অন্যতম ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০১:৪০
উৎসবের পরে দেখা গিয়েছে এমনই দৃশ্য। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাস চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।

উৎসবের পরে দেখা গিয়েছে এমনই দৃশ্য। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাস চত্বরে। —নিজস্ব চিত্র।

রঙের ঘোরে একেবারে বেসামাল অবস্থা।

বেলা বাড়তে পরিস্থিতি এমনই পর্যায়ে পৌঁছল যে, কেউ ক্যাম্পাসের মধ্যেই চিৎ হয়ে শুয়ে ঘুমোতে শুরু করলেন। কেউ আবার হামাগুড়ি দিয়ে পৌঁছলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পর্যন্ত। বিপাকে পড়ে উদ্যোক্তারাই আবার ‘রঙাচ্ছন্ন’ কাউকে কাউকে পুলিশ ডাকিয়ে বার করে দিলেন ক্যাম্পাস থেকে। সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এমনই সব দৃশ্য দেখা গেল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বি টি রোড ক্যাম্পাসে। যা দেশের অন্যতম ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংস্কৃতি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে হওয়া এই বসন্ত উৎসব নিয়ে শহর জুড়ে পোস্টার পড়েছিল কয়েক দিন আগে থেকেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া-সহ অন্তত এক লক্ষ লোকের এই উৎসবে উপস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছিল পুলিশ। সেই মতো সোমবার সকাল ১১টা থেকেই ভিড় জমতে থাকে রবীন্দ্রভারতী ক্যাম্পাসে। দুপুরের পর পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে প্রবল যানজটে হাঁসফাঁস অবস্থা হয় বি টি রোডের। সন্ধ্যায় গাড়ির লম্বা লাইন দেখা যায় ডানলপ পর্যন্ত। বেলার দিকে ক্যাম্পাস গেটে পুলিশের পাশাপাশি নিজেদের স্বেচ্ছাসেবী পরিচয় দিয়ে ‘পাস’ পরখ করে আগতদের ক্যাম্পাসে ঢোকার ব্যবস্থা করেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু দুপুর গড়াতেই সেই গেট পাস বা পরিচয় পরখের তোড়জোড় উধাও হয়ে যায়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট তখন অবারিত দ্বার।

ক্যাম্পাসে ঢুকে দেখা যায়, রং খেলায় মত্ত প্রায় সকলেই। ক্যাম্পাসের মাঝে স্টেজে তারস্বরে বক্সে রবীন্দ্রসঙ্গীত বাজছে। তার সঙ্গে কোমর দোলাতে ব্যস্ত সকলেই। এক তরুণীকে দেখা যায় মোবাইল ফোন কানে নিয়ে তাঁর এক সঙ্গীকে বলছেন, ‘‘সব ব্যবস্থা করা আছে। তিন তলার ক্লাস ঘরে ডাকছে।’’ সেখান থেকে মিনিট পনেরোর মধ্যে ফিরেই সেই তরুণীর নাচের উদ্দামতা বাড়তেও দেখা যায়। সংশ্লিষ্ট ওই ক্লাসরুম থেকেই বেরিয়ে এক যুবককে হাতে বোতল নিয়ে আবার ক্যাম্পাসের মাঠের কাছে গড়াগড়ি দিতে দেখা যায়। কোনওমতে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময়ে স্বেচ্ছাসেবীদের বলতে শোনা গেল, ‘‘বেশি খেয়ে ফেলেছে। আউট।’’ প্রায় একই ছবি দেখা যায় ঝিলপাড়, ক্যান্টিন জুড়েও। পিঠে আবীর দিয়ে লেখালেখিকে কেন্দ্র করে এক দল তরুণ-তরুণীর মধ্যে ঝগড়া হতে দেখা যায়। অভদ্র আচরণের অভিযোগে দ্রুত পুলিশ ডেকে আনেন এক তরুণী। অনেকে আবার ভিড়ের মধ্যে থেকেই চেঁচাতে শুরু করলেন পার্স খোয়া গিয়েছে, মোবাইলটাও নেই। ঘোলাটে চোখের অনেককে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তাই খুঁজে পাচ্ছেন না।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী অবশ্য বলছেন, ‘‘দ্রুত খোঁজ নিচ্ছি। আগেও বেশ কয়েক বার এই ধরনের অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি আমরা। এ ক্ষেত্রেও কী হয়েছে দেখছি।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীর পাশাপাশি পুলিশও ছিল ক্যাম্পাসে। যদি এমনটা ঘটে থাকে, কী করে ঘটেছে কড়া ভাবে দেখতে হবে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরিষদের নেতা তথা উত্তর কলকাতা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি বিশ্বজিৎ দে বলেন, ‘‘আমরাই অসুস্থ হয়ে পড়া এক যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। তবে কারা নেশা করেছেন বলতে পারব না। অনেকেই বাইরে থেকে এসেছিলেন।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী বলছেন, ‘‘প্রতিবারই এমন হয়। বেলায় যা গোপনে চলে, সন্ধ্যার পরে তা-ই প্রকাশ্যে হয়।’’

Rabindra Bharati University Holi Celebration Holi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy