Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

টাকা ভর্তি মানিব্যাগ ফেরালেন ট্যাক্সিচালক

অগত্যা বড়বাজার থেকে তোলা অন্য যাত্রীকে গন্তব্যে নামিয়ে শম্ভু যান বিমানবন্দরে। সেখানে ‘প্রি-পেড’ ট্যাক্সি কাউন্টারে জমা দেন ব্যাগ। রবি সোনি নামে এক ব্যক্তি মঙ্গলবার রাতে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় নেমে শম্ভুর ট্যাক্সিতে করে বড়বাজারে যান। মানিব্যাগ তাঁরই।

সততা: ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টর সুকান্ত কর্মকারের সঙ্গে যাত্রী রবি সোনি এবং ট্যাক্সিচালক শম্ভু দাস (ডান দিকে)। বুধবার, বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

সততা: ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টর সুকান্ত কর্মকারের সঙ্গে যাত্রী রবি সোনি এবং ট্যাক্সিচালক শম্ভু দাস (ডান দিকে)। বুধবার, বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫০
Share: Save:

কলকাতা বিমানবন্দর থেকে যাত্রী নিয়ে বড়বাজারে নামানোর পরে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনের সিটে মানিব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেছিলেন ট্যাক্সিচালক শম্ভু দাস। তিনিই ট্যাক্সিটির মালিক। তাঁর কথায়, ‘‘ট্যাক্সি রেখে যে যাত্রীকে খুঁজতে যাব, সে উপায় ছিল না। বড়বাজারের ওখানে পার্কিংয়ের সমস্যা রয়েছে। পুলিশ কোথাও দাঁড়াতে দেয় না।’’

অগত্যা বড়বাজার থেকে তোলা অন্য যাত্রীকে গন্তব্যে নামিয়ে শম্ভু যান বিমানবন্দরে। সেখানে ‘প্রি-পেড’ ট্যাক্সি কাউন্টারে জমা দেন ব্যাগ। রবি সোনি নামে এক ব্যক্তি মঙ্গলবার রাতে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় নেমে শম্ভুর ট্যাক্সিতে করে বড়বাজারে যান। মানিব্যাগ তাঁরই। জামশেদপুরের বাসিন্দা রবির কথায়, ‘‘বড়বাজারে বন্ধুর কাছে গিয়েছিলাম। ৮ হাজার টাকা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এটিএম-সহ আরও কার্ড ছিল। চিন্তায় ছিলাম।’’

বিমানবন্দর থেকে যে প্রি-পেড স্লিপটি রবির কাছে ছিল, তাড়াহুড়োয় সেটিও ট্যাক্সি চালককে দিয়ে নেমে যান তিনি। ফলে ট্যাক্সির নম্বরও তাঁর কাছে ছিল না। বড়বাজারে বসে গুগল সার্চ করে কলকাতা বিমানবন্দরের ফোন নম্বর বার করে ফোনে ঘটনার কথা জানালে, তাঁরা এক ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টরের ফোন নম্বর দেন। সুকান্ত কর্মকার নামের ওই ট্র্যাফিক ইনস্পেক্টরের সঙ্গে রবি যোগাযোগ করেন। রাত তখন প্রায় সাড়ে দশটা। খোঁজখবর শুরু হয় ট্যাক্সির। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই শম্ভু বিমানবন্দরে গিয়ে ফিরিয়ে দেন ওই মানিব্যাগ।

বুধবার অবশ্য দু’জনকেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল বিমানবন্দরে। শম্ভু নিজেই মানিব্যাগটি তুলে দেন রবির হাতে। সুকান্তবাবু জানান, মাঝে মধ্যেই বিমানবন্দরে নেমে ট্যাক্সি নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছনোর পরে এ ভাবে ট্যাক্সির মধ্যে মূল্যবান জিনিস ফেলে নেমে যান যাত্রী। সংশ্লিষ্ট ট্যাক্সিচালক সেই জিনিস ফেরত দিয়ে দিলে তাঁকে পুর‌স্কৃত করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বার বিমানবন্দরে ঢুকে প্রি-পেডের লাইনে দাঁড়াতে হয় প্রতিটি ট্যাক্সিকে। লম্বা লাইন পেরিয়ে তবে যাত্রী তুলতে পারেন তিনি। যে দিন কোনও ট্যাক্সিচালক এ ভাবে ব্যাগ ফেরান, পরের দিন সেই চালককে পুরস্কার হিসেবে কোনও লাইনে দাঁড়াতে হয় না। সারা দিনে যত বারই তিনি বিমানবন্দরে যাত্রী তুলতে আসেন, তাঁকে এগিয়ে দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Taxi Driver Bag Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE