Advertisement
E-Paper

ফুটব্রিজে নজরদারি থাকবে ক’দিন, প্রশ্ন যাত্রীদের

এক সপ্তাহ পরে সাঁতরাগাছি স্টেশনে এমন কড়াকড়ির ছবি দেখে তাই যাত্রীদের প্রশ্ন, ‘‘সারা বছর এমনটা থাকবে তো? নাকি সবটাই সাময়িক। যেমন যে কোনও দুর্ঘটনার পরে হয়।’’

সুপ্রিয় তরফদার ও ফিরোজ ইসলাম

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৪৭
কড়াকড়ি: যাত্রীদের লেন ধরে হাঁটার নির্দেশ রেলরক্ষীদের। মঙ্গলবার, সাঁতরাগাছি ফুটব্রিজে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

কড়াকড়ি: যাত্রীদের লেন ধরে হাঁটার নির্দেশ রেলরক্ষীদের। মঙ্গলবার, সাঁতরাগাছি ফুটব্রিজে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

মাইকে ঘোষণা চলছে। সঙ্কীর্ণ ফুটব্রিজকে কার্যত দু’টি লেনে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। ফুটব্রিজের সিঁড়িতে কয়েক হাত অন্তর রক্ষী। সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক। যাত্রীরা লেন ভাঙার চেষ্টা করলেই তাঁরা যাত্রীদের হাত ধরে ঠিক লাইনে এনে দিচ্ছেন। ব্রিজের উপরে অপেক্ষারত যাত্রীদের ভিড় নেই। ট্রেন থেকে নেমে শৃঙ্খলা বজায় রেখে মালপত্র নিয়ে হাঁটছেন যাত্রীরাও।

এক সপ্তাহ আগে, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাঁতরাগাছি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এক সপ্তাহ পরে সাঁতরাগাছি স্টেশনে এমন কড়াকড়ির ছবি দেখে তাই যাত্রীদের প্রশ্ন, ‘‘সারা বছর এমনটা থাকবে তো? নাকি সবটাই সাময়িক। যেমন যে কোনও দুর্ঘটনার পরে হয়।’’

দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘দ্বিতীয় ফুটব্রিজ না হওয়া পর্যন্ত এ ভাবেই রক্ষী দিয়ে পুরোটা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সিসি ক্যামেরাও বসেছে। গার্ডেনরিচ থেকেও নজরদারি চলছে। আধিকারিকেরা নিজেদের মোবাইলের মাধ্যমেও নজরদারি চালাতে পারবেন।’’

দুর্ঘটনার দিন অল্প সময়ের ব্যবধানে ৮টি ট্রেন স্টেশনে চলে আসায় যাত্রীদের ভিড়ে পদপিষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছিলেন ১৪ জনেরও বেশি। রেলের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ ওঠে।

কারণ ওই দিন স্টেশনের মাইকে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে ব্রিজের উপরে যাত্রীদের যাতায়াতের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। সে দিন রেলরক্ষীদের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ।

এ দিন দেখা গেল, ছ’নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে টিকিট কাউন্টার থেকে শুরু করে এক নম্বর টিকিট কাউন্টার পর্যন্ত গোটা ফুটব্রিজে রেলকর্মী ও রেলরক্ষী বাহিনীতে ছয়লাপ। সঙ্গে রয়েছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী

(স্কাউট) ও রেলের কর্মীরাও। সিঁড়ির মধ্যে কার্যত ব্যারিকেড করে যাত্রীদের ওই লেন মেনে চলতে বাধ্য করা হচ্ছে। সন্ধ্যা সাতটার চেন্নাই এক্সপ্রেস কোন প্ল্যাটফর্মে আসছে, তার ঘোষণা হচ্ছে এক ঘণ্টা আগেই। ফুটব্রিজে কাউকে দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না। আক্ষেপের সুরে এক রেলরক্ষী বাহিনীর কর্তা বলেন, ‘‘সে দিন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে গিয়েছিল!’’

যাত্রীদের আপত্তি ঠিক এখানেই। এক নিত্যযাত্রী পলাশ রায় বলেন, ‘‘কোনও ঘটনা ঘটলে তার পরেই রেলের হুঁশ ফেরে। সে দিন কিছুই ছিল না। কী ভাবে ভরসা করব যে সুষ্ঠু ভাবে এই কাজ দীর্ঘদিন চলবে?’’

তবুও আশ্বস্ত হচ্ছেন না যাত্রীরা। ফুট ব্রিজ চওড়া না হওয়া পর্যন্ত ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। এক আরপিএফ কর্মী বলেন, ‘‘ব্রিজ তো বড়ই সরু। ভিড় বেশি হলে আমাদেরই আশঙ্কা হচ্ছে।’’

সাঁতরাগাছির দুর্ঘটনার পরেই রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। গোটা স্টেশনে নজরদারি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির উপরে জোর দিয়েছিলেন তাঁরা।

রেলের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিনই ওই ব্রিজে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। মোট ২৫টির মধ্যে ব্রিজে ১৬টি নতুন ক্যামেরা বসানো হয়েছে। রেল সূত্রে খবর, বিভ্রান্তি কাটাতে ঘোষণা এবং অনুসন্ধান সংক্রান্ত সমস্ত দায়িত্ব বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দিন পনেরোর

মধ্যেই এই ব্যবস্থা চালু হবে। তবে যাত্রীদের নজর থাকছে রেলের এই ‘নজরদারির’ উপরেই।

Santragachi Rail Bridge Bridge Collapse Foot Bridge
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy