Advertisement
০২ মে ২০২৪
Road Accident

রাস্তাটা আগে সারালে ছেলেকে মরতে হত না, আক্ষেপ রামপিয়ারির

কাঁটাপুকুর রোডে পথ দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল স্থানীয় কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ রামপিয়ারি রামের ছেলে রামকিঙ্কর রামের।

অবশেষে: দুর্ঘটনার পরে শুরু হয়েছে বন্দরের অধীনে থাকা রাস্তা সারানোর কাজ। শুক্রবার, হাইড রোডে। নিজস্ব চিত্র

অবশেষে: দুর্ঘটনার পরে শুরু হয়েছে বন্দরের অধীনে থাকা রাস্তা সারানোর কাজ। শুক্রবার, হাইড রোডে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:২৪
Share: Save:

গত শনিবার রাতে বন্দর এলাকার কাঁটাপুকুর রোডে পথ দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল স্থানীয় কাউন্সিলর তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ রামপিয়ারি রামের ছেলে রামকিঙ্কর রামের। সেই দুর্ঘটনার জন্য রাস্তার ভয়াবহ দশাকেই দায়ী করেছিলেন মৃতের পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা বন্দর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই বার বার এমন ঘটনা ঘটছে। বছরের পর বছর কেটে গেলেও রাস্তার সংস্কার হচ্ছে না। কাউন্সিলর-পুত্রের মৃত্যুর পরেই অবশ্য টনক নড়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের। এলাকার একাধিক রাস্তা সারানোর কাজ শুরু হয়েছে সোমবার থেকেই।

সপ্তাহখানেক আগে ছেলের মৃত্যুর স্মৃতি এখনও দগদগে। ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রামপিয়ারি শুক্রবার বললেন, ‘‘বন্দরের গাফিলতির জেরেই আমার ছেলেটা অকালে মারা গেল। ওরা রাস্তা সংস্কারের কাজ আরও আগে করলে শনিবার ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটত না।’’ উল্লেখ্য, ওই রাতে খানাখন্দে ভরা রাস্তায় মালবোঝাই একটি ট্রাক গর্তে পড়ে রামকিঙ্করের গাড়ির উপরে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি।

ওই ঘটনার পরে রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে পদস্থ আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে বৈঠকে বসেন বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার। তাঁর নির্দেশে ডেপুটি চেয়ারম্যান সম্রাট রাহি বন্দর এলাকার বিভিন্ন রাস্তা পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেন। তার পরেই গত সোমবার থেকে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। বন্দরের অধীনে রয়েছে ৩৩টি রাস্তা। এর মধ্যে কাঁটাপুকুর মেন রোড, ডক ইস্ট বাউন্ডারি রোড, কোল ডক রোড, অয়েল ইনস্টলেশন রোড, ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোড, স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোড, ওল্ড গোরাগাছা রোড, হেলেন কেলার সরণি, হাইড রোড এবং সিক লেনের সংস্কার করা হচ্ছে।

শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দরের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বন্দর এলাকার একাধিক রাস্তা কংক্রিট করার পাশাপাশি উন্নত মানের পেভার ব্লক দিয়ে মোড়া হবে। এর ফলে দীর্ঘদিন আর মেরামতির প্রয়োজন হবে না। এ বার থেকে বন্দরের প্রতিটি রাস্তায় নজরদারি চালাতে নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান। প্রতিটি রাস্তায় নামের ফলক থাকছে। সেখানে সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারদের নাম ও মোবাইল নম্বরও থাকবে। রাস্তা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের অভিযোগ থাকলে ওই নম্বরে ফোন করতে পারবেন।’’

অভিযোগ, বন্দর এলাকায় একাধিক বেআইনি পার্কিং রয়েছে। রাস্তার দু’পাশে নিকাশি নালার অবস্থাও ভাল নয়। অবৈধ পার্কিং রুখতে এবং নিকাশির উন্নতিতে পুলিশ ও পুরসভার সঙ্গে কথা বলছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, বন্দর এলাকার প্রতিটি রাস্তার হাল ফেরাতে চান চেয়ারম্যান বিনীত কুমার। তাই ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতি বরদাস্ত করবেন না বলে বৈঠকে সাফ জানিয়েছেন তিনি। শনিবারের দুর্ঘটনার পরে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিলেন চেয়ারম্যান। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে দু’জন বরিষ্ঠ ইঞ্জিনিয়ারকে শো-কজ় ও এক জন জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ বার থেকে প্রতিটি রাস্তার হালহকিকত জানতে ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়মিত পরিদর্শনে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Road Accident bad road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE