প্রচারের ফাঁকে দমদমের কংগ্রেস প্রার্থী সৌরভ সাহা। —নিজস্ব চিত্র
ডাবের জল মজুত রাখুন সর্বক্ষণ। তপ্ত দিনে ভোট প্রচারের ফাঁকে তা-ই দিনভর দৌড়ে বেড়াতে সাহায্য করবে।
ভোট-প্রচারে বেরোনো প্রার্থীদের জন্য এমনই পরামর্শ চিকিৎসক থেকে ডায়েটিশিয়ান, সকলের। বাড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রা। নির্বাচন যত কাছে আসবে, ততই তপ্ত হতে থাকবে চারপাশটা। এর মধ্যে নিজেকে ঠান্ডা রাখাই সবচেয়ে বড় কাজ বলে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। তার মধ্যে প্রার্থীদের সঙ্গেই কাজের চাপ বাড়বে দলের কর্মী থেকে সরকারি আধিকারিকদেও। আগামী ক’টা দিন সুস্থ ভাবে কাজ করে যেতে তাঁদের সকলেরই খাওয়াদাওয়ায় বিশেষ নজর প্রয়োজন বলে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
অতিরিক্ত তাপের মধ্যে নিজেদের শরীর সুস্থ রাখতে এক বারে অনেকটা না খেয়ে বরং কিছু ক্ষণ অন্তর হাল্কা খাওয়াদাওয়া করা যায়। ফলের রস, ডাবের জল যেমন আছে, সেই তালিকায় তেমনই আবার রয়েছে ডাল, ভাত, নানা রকম আনাজ দিয়ে পাতলা ঝোল। ডায়েটিশিয়ানদের বক্তব্য, কাজের চাপ বেশি থাকলে কার্বোহাইড্রেটেরও দরকার। তাই ভাত খেয়ে কাজ করা যায় না, এই ভাবনাটার থেকেও বেরোতে হবে। খেয়াল রাখা দরকার, এখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে বরং বেশি মানানসই সে ধরনের খাবারই। ডায়েটিশিয়ান রেশমী রায়চৌধুরী যেমন মনে করাচ্ছেন, নিয়মের থেকে অতিরিক্ত কাজ করার জন্য বাড়তি কর্মশক্তি প্রয়োজন। তাৎক্ষণিক সেই কর্মশক্তি পাওয়া যায় কার্বোহাইড্রেট থেকেই। তিনি বলেন, ‘‘ভরা পেটে দৌড়দৌড়ি করা যাঁরা কষ্টের মনে করেন, তাঁদের খেয়াল রাখা দরকার যে খালি পেটে কাজের চাপ নেওয়া আরও অনেক ক্ষতির। ফলে আমার মনে হয়, এই ক’টা দিন ডায়েটিংয়ের চিন্তাও না করে ডাল-ভাত-আলু সেদ্ধ খেয়ে কাজের শক্তি সঞ্চয় করা দরকার।’’ কারণ, এমন খাবার সব জায়গায় পাওয়া যায়। আর এতে শরীর অসুস্থ হবে না বলে মত তাঁর।
চিকিৎসকেরা বলছেন, সারা দিন প্রচারের কাজে পথঘাটে ঘুরতে ঘুরতে খিদে পেলেও এই ক’টা দিন ভাজাভুজি না খাওয়াই ভাল। বরং সঙ্গে থাকুক বিস্কুট-কেকের মতো কিছু শুকনো খাবার। রাখা যেতে পারে ফলও। দিনভর কাজের মাঝে যেন কোনও ভাবেই পেট খালি না থাকে, সে দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে বলে পরামর্শ ডাক্তারদের। সঙ্গে কিছু না থাকলেও রাস্তায় কিছু খেতেই হবে বলে মত চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের। সব জায়গায় চিঁড়ে-মুড়ির মতো শুকনো খাবার পাওয়া যায়। এমন সময়ে ভরসা রাখা যায় সে সবে। তিনি বলেন, ‘‘এই গরমে ডিহাইড্রেশন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে। ফলে যে সব ধরনের খাবারে জলীয় পদার্থ বেশি, তেমন খাবার খাওয়া দরকার। আর খেতে হবে প্রচুর জল।’’
রেশমীদেবীর বক্তব্য, রাস্তাঘাটে সবচেয়ে ভাল হল ডাবের জল আর ফল। ভোট প্রচারে যাওয়া প্রার্থীদের বিশেষ করে সঙ্কটে পড়তে হয় বিভিন্ন জায়গায় নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্য সাজিয়ে আপ্যায়ন করা হলে। কিন্তু সব সময়ে রোদ-গরমে ঘুরে যে কোনও ধরনের খাবার খেয়ে নেওয়া ঠিক নয়। এই সব ক্ষেত্রে ডাবের জল সবচেয়ে সুবিধের। তিনি বলেন, ‘‘আপেল, তরমুজ, লেবু, জামরুল, পেয়ারার মতো কিছু ফলও খাওয়া যায়। তবে খেয়াল রাখতে হবে কোনও মতেই যেন সেই ফল বেশি ক্ষণ আগে কাটা না হয়।’’ তাঁর পরামর্শ, সঙ্গে করে দু’-একটা মরসুমি ফল নিয়ে বেরোনো ভাল। এত ব্যস্ততার মধ্যে দু’টো ফল হঠাৎ খুব তাজা করে দিতে পারে। একই সঙ্গে অরুণাংশুবাবুর মত, দিন শেষে ঘরে ফিরে একটু নুন-লেবু-চিনির জল খেতে হবে। তাতে এক ঝটকায় মিলিয়ে যাবে সারা দিনের ক্লান্তি।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে ডায়াবিটিস, থাইরয়েড, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল কিংবা অন্য কোনও সমস্যা থাকলে নিয়মের খাদ্যাভ্যাসের বাইরে যাওয়া কোনওমতেই ঠিক হবে না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। চিকিৎসকেরা বলছেন, এ সব ধরনের অসুখের ক্ষেত্রে প্রতি রোগীকে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। নির্বাচনের কাজের চাপে সেই সব নিয়মে কম গুরুত্ব দিলে আসল সময়ে গিয়ে সঙ্কট বাড়ার আশঙ্কাই বেশি। ফলে গোটা ভোট-মরসুমে সুস্থ থাকতে নিজের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া বাধ্যতামূলক বলেই মত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy