Advertisement
E-Paper

সংবিধান থেকে বিচ্যুত হলে সারা দেশের বিপদ!

এই সময়ে দাঁড়িয়ে বুঝতে পেরেছি যে, আমাদের জনজীবনে একটা বিপুল রাষ্ট্রীয় পরিবর্তন খুব সম্প্রতি ঘটে গিয়েছে।

রজতকান্ত রায় (ইতিহাসবিদ)

শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৯ ০২:১০
পাশাপাশি: একই সঙ্গে বিকোচ্ছে জাতীয় পতাকা ও রাখি। নিজস্ব চিত্র

পাশাপাশি: একই সঙ্গে বিকোচ্ছে জাতীয় পতাকা ও রাখি। নিজস্ব চিত্র

এই বছর ১৫ অগস্টে ফিরে তাকিয়ে একটা ‘পতন-অভ্যুদয়-বন্ধুর-পন্থা’ দেখতে পাচ্ছি। শুরু করি ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ থেকে। সে বছর বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জোড়াসাঁকো বাড়ি থেকে বেরিয়ে অদূরবর্তী নাখোদা মসজিদে ঢুকে সেখানকার মুসলমান প্রার্থনাকারীদের হাতে রাখি পরিয়ে দেন। সেই রাখি ছিল হিন্দু-মুসলমান প্রীতির চিহ্ন।

এ বার চলে আসি ১৯২৯ সালে রাভি নদীর তীরে। সে বার জওহরলাল নেহরু ‘পূর্ণ স্বরাজ’ দাবি করে নদীতীরে পতাকা উত্তোলন করেন। এই দুই ঘটনা এবং ১৯৫০ সালের ভারতীয় সংবিধানকে কেন্দ্র করে আমরা, আমাদের স্বাধীনতার দিগনির্দেশ পেয়েছিলাম।

আর আজ, এই সময়ে দাঁড়িয়ে বুঝতে পেরেছি যে, আমাদের জনজীবনে একটা বিপুল রাষ্ট্রীয় পরিবর্তন খুব সম্প্রতি ঘটে গিয়েছে। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের ফলে ভারতীয় মুসলমানদের একটা বৃহৎ অংশ অন্য রাষ্ট্রের নাগরিকে পরিণত হয়। আমরা তখন থেকে যে স্বাধীনতা ভোগ করেছি, তা আজ বিপন্ন বলে মনে হচ্ছে। বিগত নির্বাচনে ভারতীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থায় একটা বিপুল পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। একে ভূতাত্ত্বিক ও রাজনীতিবিদেরা বলেন, ‘টেকটনিক শিফ‌্ট’। এই ‘ভূকম্পন’-এর পিছনে কতগুলো মাইলস্টোন দেখতে পাই। আমার মতে তা হল, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ পরিবারের উত্থান। সঙ্ঘ পরিবারের প্রধান অংশ হল, ভারতীয় জনতা পার্টি। এরা আগেও এক বার কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল। তখন দলের নেতৃত্ব ছিল যুগ্ম নেতৃত্ব। অর্থাৎ, অটলবিহারী বাজপেয়ী এবং লালকৃষ্ণ আডবাণী। বাজপেয়ী এ দেশের বড় নেতা। তিনি ভারতীয় সংবিধানকে সবার উপরে রেখেছিলেন। লালকৃষ্ণ আডবাণীর যদিও বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ক্ষেত্রে ভূমিকা ছিল (১৯৯২), তবু পরে তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পেরেছিলেন বলে মনে হয়। এবং তিনিও গণতন্ত্র রক্ষার ব্যাপারে বাজপেয়ীর সহায় হন।

তার পরে এল দ্বিতীয় ভাজপা-রাজ। যার নায়ক নরেন্দ্র মোদী। ‘টেকটনিক শিফ‌্ট’ ঘটল এই সময়ে।

তার পরের ইতিহাসটা আমার কাছে এখনও সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়নি। মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ফিরে এসেছে। তবু জলের ধারা কোন দিকে যাচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আমাদের ইতিহাসে একটা জন-আলোড়ন ঘটেছে, যা সংবিধানকে বিপন্ন করেছে। কাশ্মীরের স্বাধীনতা যদি হরণ করা হয়, তা হলে সেটা হয়তো কাশ্মীরিদের বিপদ, কিন্তু সংবিধান থেকে বিচ্যুত হলে সেটা সারা দেশের বিপদ!

(মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)

Independence Day Special Independence Day Constitution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy