Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
COVID 19

করোনার রক্তচক্ষু রেলে, শয্যা-চিকিৎসক বাড়ানোর দাবি

দূরপাল্লার প্রায় ২০০টি মেল এবং এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে ১৭০টির বেশি সচল রয়েছে বলেও দাবি কর্তৃপক্ষের।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

ফিরোজ ইসলাম 
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০২১ ০৫:৪৫
Share: Save:

পূর্ব রেলের পরিষেবার উপরে ক্রমেই চাপ বাড়াচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। শুধুমাত্র শিয়ালদহ ডিভিশনেই সংক্রমিত হয়েছেন শতাধিক গার্ড এবং চালক। হাওড়া এবং শিয়ালদহ মিলিয়ে দৈনিক গড়ে ১৪০টি ট্রেন বাতিল করতে হচ্ছে। যদিও রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, কম-বেশি ১২২০টি ট্রেনের মধ্যে এখনও চলছে প্রায় ১১০০ ট্রেন। আপাতত, কম গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন বাতিল করে পরিষেবা সামাল দেওয়া হচ্ছে। দূরপাল্লার প্রায় ২০০টি মেল এবং এক্সপ্রেস ট্রেনের মধ্যে ১৭০টির বেশি সচল রয়েছে বলেও দাবি কর্তৃপক্ষের। যদিও পরিষেবার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা কর্মীদের যে পরিস্থিতিতে কাজ করতে হচ্ছে, তাতে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁদের একটা বড় অংশ।

রেলের কর্মী সংগঠনের অভিযোগ, করোনার প্রথম ধাক্কার তুলনায় দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থার আকস্মিক অবনতি হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হচ্ছে অক্সিজেন এবং অন্যান্য জীবনদায়ী ব্যবস্থার। অথচ, সেই তুলনায় রেলের পরিকাঠামো অপ্রতুল। একমাত্র বি আর সিংহ হাসপাতাল ছাড়া রেলের অন্য কোভিড হাসপাতালগুলিতে আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চিকিৎসার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। ফলে, অনেকেই দরকারি পরিষেবা পেতে গিয়ে গুরুতর সমস্যার মুখে পড়ছেন। পরিস্থিতি সামলাতে আইসিইউয়ে শয্যা বাড়ানোর পাশাপাশি আপৎকালীন ব্যবস্থা হিসেবে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের দাবিও তুলেছে সংগঠন।

রেলের কর্মী সংগঠনের পক্ষ থেকে পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে লেখা চিঠিতে দ্রুত পরিকাঠামো বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীদের বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করা সম্ভব। তাঁদের সাহায্য করার জন্য টেলিমেডিসিন এবং গুরুতর অসুস্থদের ক্ষেত্রে আরও বেশি সংখ্যক আইসিইউ-শয্যা প্রয়োজন। না হলে এই মৃত্যুমিছিল থামবে না।’’

পূর্ব রেল সূত্রের খবর, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মঙ্গলবার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার মনোজ জোশী। সেখানে তিনি হাসপাতালগুলির পরিকাঠামো উন্নত করার উপরে জোর দেন। পূর্ব রেলের সব ক’টি হাসপাতাল মিলিয়ে প্রায় ১৫০০ শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে করোনা রোগীদের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করা আছে ৭৩০টি শয্যা। অক্সিজেন দেওয়ার সুবিধা আছে এমন শয্যার সংখ্যা ৫০৮।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এ দিনই রেল বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, সব ক’টি জ়োনে কোনও অনুমোদন ছাড়াই ২ কোটি টাকা পর্যন্ত জিনিস কেনার ক্ষেত্রে ছাড়পত্র মিলবে। আগে এই সীমা ছিল সর্বাধিক ৫০ লক্ষ টাকা। মূলত, রেলের হাসপাতাল গুলিতে অক্সিজেন প্লান্ট বসাতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে খবর। রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, এর ফলে প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে আটকে থাকা হাসপাতালগুলিকে তৃতীয় বা সর্বোচ্চ পর্যায়ের হাসপাতালে উন্নীত করা সহজ হবে।

রেলের বিভিন্ন অফিসে ৫০ শতাংশ হাজিরা নিয়ে কাজ চালু হলেও যাঁরা সরাসরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত, সেই কর্মীদের নিয়মিত অফিসে আসতে হচ্ছে। রস্টার তৈরি করে ওই কর্মীদের কাজের সুযোগ দেওয়ার দাবিও উঠেছে সংস্থার অন্দরে। রেল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রতিষেধক প্রদানের কাজও ত্বরান্বিত করার কথা বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COVID 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE