Advertisement
E-Paper

শিশু বদলের বীজ নিয়মেই

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শয্যার উপরে প্রচণ্ড চাপ থাকায় তার অ্যানেক্স বা সহযোগী হাসপাতাল লেডি ডাফরিনে আউটপেশেন্ট হিসেবে বহু প্রসূতিকে ভর্তি করা হয়। প্রসবের পরে শিশুর অবস্থা খারাপ হলে তাকে ডাফরিনেরই ১২ শয্যার সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে (এসএনসিইউ) চিকিৎসা করার কথা।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৯

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে শয্যার উপরে প্রচণ্ড চাপ থাকায় তার অ্যানেক্স বা সহযোগী হাসপাতাল লেডি ডাফরিনে আউটপেশেন্ট হিসেবে বহু প্রসূতিকে ভর্তি করা হয়। প্রসবের পরে শিশুর অবস্থা খারাপ হলে তাকে ডাফরিনেরই ১২ শয্যার সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিটে (এসএনসিইউ) চিকিৎসা করার কথা। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মেডিক্যালের এসএনসিইউ-তে। কারণ, ডাফরিনের এসএনসিইউ-তে তীব্র লোকাভাব।

অর্থাৎ জন্মের পরে সদ্যোজাত চলে যাচ্ছে কলকাতা মেডিক্যালে। মা থেকে যাচ্ছেন লেডি ডাফরিন হাসপাতালে। ফলে বদলে যাচ্ছে মা ও শিশুর হাতের ট্যাগের নম্বর। এর জেরে সমস্যা দেখা দিচ্ছে বাচ্চাকে বাড়িতে ছাড়ার সময়ে। তখন মেডিক্যালের এসএনসিইউ থেকে মাইকে শুধু মায়ের নাম ডাকা হয়। সেটা শুনে নিজেকে শিশুর নিকটাত্মীয় বলে দাবি করে এবং নাম ভাঁড়িয়ে যে কেউ সেই শিশুকে নিয়ে চলে যেতে পারেন। মাকে দেখিয়ে শিশুকে ছাড়ার উপায় থাকে না।

মূল গোলমালটা থেকে যাচ্ছে অসুস্থ সদ্যোজাতকে রেফারের এই পদ্ধতিতেই। সম্প্রতি অভিযোগ উঠছিল, কলকাতা মেডিক্যালের এসএনসিইউ-তে এক পরিবারের সদ্যোজাতকে অন্য পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। মাসখানেক আগে ওই হাসপাতাল থেকেই এক সদ্যোজাতকে নিয়ে বহিরাগত এক মহিলা পালিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। তার পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অন্তর্বর্তী তদন্ত করতে বলেন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। সেখানেই বেরিয়ে এসেছে ফাঁকের জায়গাটি।

লোকের অভাবে অসুস্থ সদ্যোজাতের চিকিৎসা না হওয়ার কথা মেনে নিয়ে ডাফরিন হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জনা সেন বলেন, ‘‘আমাদের এসএনসিইউ-তে মাত্র এক জন মেডিক্যাল অফিসার! কোনও ভিজিটিং চিকিৎসক নেই। ২৪ ঘণ্টা অসুস্থ শিশুদের উপরে নজর রাখার মতো লোকবলও নেই।’’

শুধু শিশু হাতবদলের ঝুঁকিই নয়, ডাফরিন থেকে অসুস্থ নবজাতকদের মেডিক্যালের এসএনসিইউ-তে পাঠানোর ফলে তারা মায়ের বুকের দুধ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। সরকারি নিয়মানুযায়ী, জন্মের পরে প্রথম ৬ মাস শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, মা-শিশুকে আলাদা জায়গায় রেখে সরকারি হাসপাতালই সরকারি নিয়ম ভাঙছে।

গোটা বিষয়টি কী ভাবে এত দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে গেল, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যকর্তারাও। স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা বলেন, ‘‘এত দিন ধরে এই অব্যবস্থা চলার দরকারই ছিল না। ডাফরিন থেকে আসা শিশুদের হাতে বিশেষ ট্যাগ লাগালে সহজেই সমস্যার সমাধান করা যেত।’’ রাজ্যের মা ও শিশু-স্বাস্থ্যে নজরদারিতে গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, সরকারি গাড়ির ব্যবস্থা করে ডাফরিনে থাকা মায়েদের দুধ কী ভাবে মেডিক্যালে থাকা তাদের বাচ্চাদের জন্য আনা যায়, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে।

Infant trafficking faulty rules irregularities
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy