একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা যাতে তাদের অ্যাকাউন্টেই ঢোকে, অন্য কোনও অ্যাকাউন্টে চলে না যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছে শিক্ষা দফতর। বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পের জন্য এ বার কী কী নিয়ম মানতে হবে, সেই নির্দেশিকা সম্প্রতি স্কুলগুলির কাছে এসেছে।
গত বছর রাজ্য জুড়ে প্রচুর পড়ুয়ার ট্যাবের টাকা তাদের নিজের অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি বলে অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ ছিল, পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা চলে গিয়েছে। বিভিন্ন সতকর্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরেও কী ভাবে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক হচ্ছে, সেই প্রশ্ন ওঠে। শিক্ষা দফতর সূত্রেরখবর, এ বার বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে ট্যাবের টাকা অন্য অ্যাকাউন্টে যাওয়ার আশঙ্কা কার্যত থাকছে না।
ডোমজুড়ের কেশবপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘এত দিন প্রধান শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য সরাসরি আপলোড করতেন। এ বার আপলোড করার আগে সেই সব তথ্য ঠিক লেখা হল কিনা, তা এক বার পড়ুয়াকে দিয়ে যাচাই করানো হবে। পড়ুয়া সেই তথ্য যাচাই করে সম্মতি দেওয়ার পরে তবেই প্রধান শিক্ষক তা আপলোড করতে পারবেন।’’ এর ফলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ভুল হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমবে বলে মনে করছেন প্রধান শিক্ষকেরাও।
এ বার বাংলার শিক্ষা পোর্টালে গিয়ে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে ঢুকতে হলে শুধু প্রধান শিক্ষকদের ইউজ়ার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিলেই হবে না, সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের মোবাইলে ওটিপি আসবে। সেই ওটিপি দিলে তবেই পোর্টালে ঢোকা যাবে। বাঙুরের নারায়ণ দাস মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাজ় হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, ‘‘এ বার নতুন নিয়মে প্রতিটি পড়ুয়ার জন্য আলাদা আলাদা করে ওটিপি আসবে। অর্থাৎ, এক জন প্রধান শিক্ষক যদি ১৫০ জন পড়ুয়ার তথ্য আপলোড করেন, তা হলে ১৫০ বার ওটিপি আসবে। সেই সঙ্গে এ বার নিয়ম হয়েছে, পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রাজ্যের বাইরের শাখায় খোলা হলে হবে না। তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের টাকা একাদশ শ্রেণির যে পড়ুয়ারা পাবে, তাদের একটা আলাদা ফর্ম ভর্তি করতে হবে।’’ প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ওই ফর্মে পড়ুয়া তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, আধার নম্বর এবং নিজের নামের বানান যা লিখেছে, সেই একই তথ্য পড়ুয়ার ব্যাঙ্কে থাকতে হবে। কোথাও কোনও ভুল থাকলে হবে না। সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষকে যাচাই করতে হবে। এ ছাড়া পুরনো যে সব নিয়ম ছিল, সেগুলি এই বছরও থাকবে।
শিক্ষক দিবসের দিন, অর্থাৎ ৫ সেপ্টেম্বর থেকে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে ঢোকা শুরু হয়। তবে তার আগে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অনেকটা সময় যায়। প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, একাধিক বার যাচাই এবং ওটিপি আসার ফলে ভুলের আশঙ্কা কমলেও প্রধান শিক্ষক বা এই কাজে নিযুক্ত নোডাল শিক্ষকের কাজের চাপ অনেকটাই বাড়বে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)