বিমানবন্দর থেকে বারাসত পর্যন্ত যশোর রোড সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এ বার সেই রাস্তার দু’পাশে আলো বসানোর পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নেরও কাজে নামছে রাজ্য সরকার। ঠিক হয়েছে, প্রায় ৩ কোটি টাকায় যশোর রোডকে সাজানো হবে। আলো বসানোর কাজ করবে পূর্ত দফতর।
বিমানবন্দর ছাড়িয়ে বিরাটি থেকে বারাসত পর্যন্ত ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক চওড়া করার কাজ অনেকটাই শেষ। এখন চলছে বারাসত থেকে বনগাঁ পর্যন্ত অংশের সম্প্রসারণ। বিমানবন্দর থেকে দোলতলা পর্যন্ত রাস্তা চার লেনের করা হয়েছে। যানজট এড়াতে তৈরি হয়েছে উড়ালপুল, আন্ডারপাস। এ বার সেই রাস্তার মাঝখানে ও দু’পাশ সাজানোর কাজ শুরু হচ্ছে। মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘রাস্তার দু’পাশে গাছ লাগানো হবে। থাকবে ফোয়ারা। বিভিন্ন ভাস্কর্য ও মূর্তিও বসানো হবে।’’
রথীনবাবু জানিয়েছেন, যে গাছগুলি বেশি মাত্রায় কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নিয়ে অক্সিজেন ছাড়ে, সেই ধরনের গাছ লাগানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর ‘গ্রিন সিটি-গ্রিন মিশন’ প্রকল্পের প্রেক্ষিতে করা হবে। ইতিমধ্যেই বিরাটির গ্রিন পার্কের কাছে মহাত্মা গাঁধীর ডান্ডি অভিযানের একটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। উল্টো দিকে বসানো হয়েছে সন্ত টেরিজার মূর্তি। এক সময়ে যে এলাকা ছিল সুনসান, আলোয় সাজানো ওই মডেল ও মূর্তির জন্য সেখানকার পরিবেশই গিয়েছে বদলে।
মধ্যমগ্রাম পুরসভা সূত্রে খবর, বিরাটির কাছে গ্রিন প্রার্ক থেকে বারাসতের শিশিরকুঞ্জ পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারে এমন আরও মূর্তি ও ভাস্কর্য বসানো হবে। রাজ্য সরকারের পাশাপাশি এ কাজের খরচ দেবে পুরসভাও। আলো বসানোর জন্য ইতিমধ্যেই পূর্ত দফতরের কাছে আবেদন করেছে তারা। রথীনবাবু বলেন, ‘‘আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’
যশোর রোড এখন ৬০ মিটার চওড়া হয়েছে। বাস চলাচলের জন্য তৈরি হয়েছে আলাদা লেন। তৈরি হচ্ছে যাত্রী-প্রতীক্ষালয়ও। রাস্তার দু’পাশে আরও ২ মিটার করে পারাপারের জায়গা রয়েছে। মাঝখানে রয়েছে ডিভাইডার। সেটিও সাজানো হবে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।
ভারত থেকে বাংলাদেশে সড়কপথে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণে একমাত্র মাধ্যম এই যশোর রোড। শুধু তাই নয়, উত্তরবঙ্গে যাতায়াতের জন্যও ধরতে হয় এই রাস্তা। তা ছাড়াও, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত, ব্যারাকপুর থেকে শুরু করে বনগাঁ, বসিরহাট মহকুমার বহু মানুষ এই পথ ধরে কলকাতা যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার দীর্ঘ দিন সংস্কার হয়নি। নিত্য লেগে ছিল যানজট। তা পেরিয়ে যাতায়াত করতে কেটে যেত ঘণ্টার পর ঘণ্টা। রাস্তা চওড়া এবং সৌন্দর্যায়ন তো দূরস্থান, ছিল না রাস্তার দু’পাশে আলোও। অবশেষে সে সব সমস্যা মিটতে চলেছে।